ঢাকা, মঙ্গলবার, ৭ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ২১ মে ২০২৪, ১২ জিলকদ ১৪৪৫

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

বছর জুড়েই রাজস্ব ঘাটতিতে চট্টগ্রাম কাস্টমস

মো.মহিউদ্দিন, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০৪৯ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ৩১, ২০১৩
বছর জুড়েই রাজস্ব ঘাটতিতে চট্টগ্রাম কাস্টমস ছবি: (ফাইল ফটো)

চট্টগ্রাম: চলতি অর্থবছরের প্রথম ছয় মাসে (জুলাই-ডিসেম্বর) চট্টগ্রাম কাস্টমস হাউসের রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয় ১১ হাজার ৯৮২ কোটি টাকা।  

৩০ ডিসেম্বর পর্যন্ত লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে ১০ হাজার ৩৪৭ কোটি টাকা আদায় হয়েছে রাজস্ব আদায়ের সবচেয়ে বড় এ প্রতিষ্ঠানে।

ছয় মাসে রাজস্ব ঘাটতি রয়েছে ১ হাজার ৬৩৫ কোটি টাকা।

২০১২-২০১৩ অর্থ বছরের প্রথম ছয় মাসে যে পরিমাণ রাজস্ব আদায় হয়েছিল তা থেকে ৬২৮ কোটি টাকা পিছিয়ে রয়েছে চট্টগ্রাম কাস্টমস।
 

বছর জুড়ে হরতাল, অবরোধ আর রাজনৈতিক সহিংসতায় দেশের অর্থনীতিতে নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে বলে মনে করছেন কর্মকর্তারা। রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে আমদানি রফতানি কম হয়েছে। ফলে কমে গেছে রাজস্ব আদায়।

হরতাল-অবরোধের ক্ষতি পোষাতে ছুটির দিন গুলোতে চট্টগ্রাম কাস্টমসের কার্যক্রম স্বাভাবিক রাখার সিদ্ধান্ত হয়। কিন্তু এতেও রাজস্ব ঘাটতি কমানো যায়নি। বরং চলতি অর্থ বছরে রাজস্ব আদায় নিয়েই সংশয়ে রয়েছে কর্মকর্তারা।

সংশ্লিস্টরা বলছেন, এক বা দুইদিনের হরতাল হলে তার ক্ষতি পরবর্তী কয়েকদিনে অন্তত: কাটিয়ে উঠা যায়। তবে টানা হরতালে তা কাটিয়ে উঠা অসম্ভব হয়ে পড়ে। এর প্রভাব পড়ে জাতীয় অর্থনীতিতে।

চট্টগ্রাম কাস্টমস কমিশনার মাসুদ সাদিক বাংলানিউজকে বলেন, বছর জুড়েই ছিল হরতাল আর অবরোধ। এতে মানুষের সাধারণ জীবন যাত্রা বাধাগ্রস্থ হওয়ার পাশাপাশি কমেছে আমদানি রপ্তানি।

তিনি বলেন, আমদানি রপ্তানি কমে যাওয়ায় নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে জাতীয় অর্থনীতিতে। কমে গেছে রাজস্ব আদায়।

চট্টগ্রাম কাস্টমস সূত্রে জানা গেছে, চলতি অর্থ বছরে জুলাই মাসে রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা ছিল দুই হাজার ১৭৫ কোটি ৭৭ লাখ টাকা। এর বিপরীতে আদায় হয়েছে দুই হাজার ১০৮ কোটি ৬৫ লাখ টাকা।

আগস্টে ১ হাজার ৯৫৮ কোটি ৩৩ লাখের বিপরীতে ১ হাজার ৬৫৮ কোটি ৬৫ লাখ, সেপ্টেম্বরে দুই হাজার ১৫ কোটি ৬১ লাখ টাকার বিপরীতে ১ হাজার ৯১৪ কোটি ৬৯ লাখ টাকা, অক্টোবরে দুই হাজার ৭৪ কোটি ৫৫ লাখ টাকার বিপরীতে ১ হাজার ৭৯৭ কোটি ৮৬ লাখ, নভেম্বরে দুই হাজার ১৯ কোটি ৯৮ লাখ টাকার বিপরীতে ১ হাজার ৭২৩ কোটি ২৭ লাখ টাকা রাজস্ব আদায় হয়েছে।

কাস্টমস কর্মকর্তারা জানান, গত অর্থ বছরেও রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা আদায়ে ব্যর্থ হয়েছিল চট্টগ্রাম কাস্টমস হাউস। তবে চলতি অর্থ বছরে প্রথম ছয় মাসে রাজস্ব ঘাটতি দেড় হাজার কোটি ছাড়িয়ে গেছে।

চলতি অর্থ বছরে বড় ধরণের রাজস্ব ঘাটতির আশঙ্কা করছেন কাস্টমস কর্মকর্তারা।

কাস্টমস হাউস সূত্রে জানা গেছে, রাজস্ব আদায় বাড়াতে চট্টগ্রাম কাস্টমস শুক্রবার-শনিবার সরকারি বন্ধের দিনগুলোতে আমদানি-রপ্তানি উভয় কার্যক্রম চালু রাখার সিদ্ধান্ত হয়। গত ৩০ মার্চ চট্টগ্রাম কাস্টমস হাউস মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত এক সভায় এ ঘোষণা দেন এনবিআর চেয়ারম্যান মো. গোলাম হোসেন।

সিদ্ধান্ত অনুযায়ী শুক্রবার শুধুমাত্র রপ্তানি ও শনিবার আমদানি-রপ্তানি উভয় শাখায় কার্যক্রম চলেছে বলে জানিয়েছেন চট্টগ্রাম কাস্টমসের কমিশনার মো.মাসুদ সাদিক।

কাস্টমসের সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, গড়ে দৈনিক ৯০ থেকে ১০০ কোটি টাকার  রাজস্ব আদায় হয়। কিন্তু হরতালের কারণে তা অর্ধেকের চেয়ে নিচে নেমে আসে। ব্যবসায়ীরা আমদানি পন্য খালাসের জন্য কাস্টমস হাউসে নোটিং করলেও সহিংস পরিস্থিতির কারণে বন্দর থেকে পণ্য খালাসের ঝুঁকি নেননি। এতে কমে গেছে রাজস্ব আদায়।

বাংলাদেশ সময়: ২০৪৭ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ৩১, ২০১৩
সম্পাদনা: তপন চক্রবর্তী, ব্যুরো এডিটর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।