ঢাকা, শনিবার, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

ভক্ত আশেকের পদচারণায় মুখর মাইজভান্ডার

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩০১ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৩, ২০১৪
ভক্ত আশেকের পদচারণায় মুখর মাইজভান্ডার ছবি: বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

চট্টগ্রাম: গাউছুল আজম হযরত মাওলানা শাহ ছুফি সৈয়দ আহমদ উল্লাহ মাইজভান্ডারির (ক.) ওরশের প্রধান দিবস আজ (বৃহস্পতিবার)। এ উপলক্ষ্যে প্রতিবছরের মতো এবারো তিনদিন ব্যাপী কর্মসূচির আয়োজন করা হয়েছে।



ওরশের প্রধান দিবস উপলক্ষ্যে দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চল ও ভারত, মায়ানমার, মধ্যপ্রাচ্যসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে বুধবার থেকেই ভক্তরা মাইজভান্ডার দরবার শরীফে আসতে শুরু করেছেন। ভক্ত আশেকের পদচারণায় মুখর হয়ে উঠেছে মাইজভান্ডার দরবার শরীফ।


মুরিদ ভক্ত-আশেকদের ভীড়ে মাইজভান্ডার দরবার শরীফ ও আশপাশের এলাকা জনসমুদ্রে পরিণত হয়েছে। জিকির, মাইজভান্ডারী মারফতি গান, মিলাদ মাহফিলের ধ্বনিতে মুখরিত হচ্ছে পুরো এলাকা।

ওরশ শরীফ উপলক্ষে মাইজভান্ডার গাউছিয়া আহমদিয়া মঞ্জিলের উদ্যোগে নানা কর্মসূচির আয়োজন করা হয়েছে। আগতদের সেবায় দরবার শরীফের বিশাল স্বেচ্ছাসেবক বাহিনী প্রতি মুহুর্ত ব্যস্ত রয়েছেন বলে আয়োজক সূত্রে জানা গেছে।

বুধবার দুপুর ১২ টায় হযরত গাউছুল আজম মাইজভান্ডারী মওলানা শাহ্ ছুফী সৈয়দ আহমদ উল্লাহ (কঃ) এর রওজা শরীফে গোসল শরীফ ও গিলাপ চড়ানোর মাধ্যমে ওরশ শরীফের কার্যক্রম শুরু হয়। এসময় অন্যান্যদের মধ্যে নায়েব সাজ্জাদানশীন সৈয়দ ইরফানুল হক মাইজভান্ডারী, জাফরুল ইসলাম চৌধুরী, সৈয়দুল হক খান, ক্যাপ্টেন সৈয়দ সোহেল হাসনাত, জহিরুল ইসলাম চৌধুরী আলমগীর, সৈয়দ আবু তালেবসহ হাজারো আশেক ভক্ত উপস্থিত ছিলেন।

বৃহস্পতিবার রাত ১২টা ১ মিনিটে গাউছুল আজম হযরত সৈয়দ আহমদ উল্লাহ মাইজভান্ডারী (কঃ) এর হুজরা শরীফের সামনে ওরশের মিলাদ ও মুনাজাত হবে। আখেরী মুনাজাত পরিচালনা করবেন গাউছিয়া আহমদিয়া মঞ্জিলের সাজ্জাদানশীন হযরত মওলানা শাহ্ ছুফী সৈয়দ এমদাদুল হক মাইজভান্ডারী (ম.)।

মাইজভান্ডার গাউছিয়া আহমদিয়া মঞ্জিলের সাজ্জাদানশীন হযরত মওলানা শাহছুফী সৈয়দ এমদাদুল হক মাইজভান্ডারী বলেন,‘মাইজভান্ডার দরবার শরীফের প্রাণপুরুষ গাউছুল আজম মাইজভান্ডারী হযরত মওলানা শাহছুফী সৈয়দ আহমদ উল্লাহ (ক.) মানুষের মনে খোদা-প্রেম জাগ্রত করার শিক্ষা দিয়ে গেছেন। তার আল্লাহ প্রদত্ত আধ্যাত্মিক শক্তির পরশে মানুষ আজ আলোর পথের পথিক। ’

গাউছুল আজম মাইজভান্ডারী হযরত মওলানা শাহ সুফী সৈয়দ আহমদ উল্লাহ (ক.) ১২৩৩ বাংলা  পহেলা মাঘ, রোজ বুধবার জোহরের সময় জন্মগ্রহন করেন। ৭৯ বছর বয়সে ১৯০৬ সালে (১৩১৩ বঙ্গাব্দে ১০ মাঘ) সোমবার দিবাগত রাতে ইহধাম ত্যাগ করেন।

চার বছর বয়সে গ্রাম্য মক্তবে হযরতের শিক্ষাজীবন শুরু হয়। ১২৬৮ হিজরীতে তিনি কলকাতা আলিয়া মাদ্রাসার শেষ পরীক্ষায় কৃতিত্বের সাথে পাশ করেন। হিজরী ১২৬৯ সালে তিনি যশোর জেলায় কাজী (বিচারক) পদে যোগদান করেন। ১২৭০ হিজরীতে কাজী পদ থেকে পদত্যাগ করে কলকাতার মুন্সি বু-আলী মাদ্রাসায় প্রধান মোদার্রেছের পদে যোগদান করেন।

তার পীরে তরিকত ছিলেন শেখ সৈয়দ আবু শাহমা মুহাম্মদ ছালেহ আল কাদেরী লাহোরী (রহ:)। অপরদিকে পীরে তরিক্বতের বড়ভাই হযরত শাহ সৈয়দ দেলাওয়ার আলী পাকবাজ (রহ:) এর কাছ থেকে কুতুবিয়তের ফয়েজ অর্জন করেন। বিল আছালত বা স্বভাব সিদ্ধ অলি হযরত গাউছুল আজম মাইজভান্ডারী (কঃ) তার পীরে ত্বরিকতের নিদের্শে ১৮৫৭ সালে নিজ গ্রাম মাইজভান্ডারে ফিরে আসেন।

কিছুদিনের মধ্যেই তার বুযুর্গীর কথা চারদিকে ছড়িয়ে পড়ে। ধর্ম, বর্ণ নির্বিশেষে বিভিন্ন শ্রেণীর মানুষ তার দরবারে ভীড় জমায়। লোকসমাজে পরিচিতি পায় ‘মাইজভান্ডার দরবার শরীফ’ হিসেবে।

ওফাতের পরও তার পবিত্র মাজার ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সকলের মিলন কেন্দ্রে পরিণত হয়। আজও ফরিয়াদিরা তার মাজারে এসে আপন হাজত-মাকসুদ পূরণের জন্য নজর-মানত সহ আল্লাহর দরবারে মিনতি করেন।

নায়েব সাজ্জাদানশীন ও মোন্তাজেম সৈয়দ ইরফানুল হক মাইজভান্ডারী বলেন, ওরশে আগত জায়েরীনদের সুবিধার্থে বিভিন্ন উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। ওরশ শরীফ সুষ্ঠুভাবে সম্পাদনের জন্য তিনি সকলের সহযোগিতা কামনা করেন।

বাংলাদেশ সময়:১২৫৮ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৩, ২০১৪

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।