চট্টগ্রাম: স্বাধীনতার ৪৩ বছর পর নগরীর চেরাগী পাহাড় এলাকায় মুক্তিযুদ্ধের প্রথম শহীদদের স্মরণে স্মৃতিফলক স্থাপন করা হয়েছে। শনিবার বেলা সাড়ে এগারটার দিকে স্মৃতিফলকটির উদ্বোধন করেন চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক আবদুল মান্নান।
এসময় উপস্থিত ছিলেন- বিশিষ্ট সাংবাদিক ও মুক্তিযোদ্ধা নাসিরুদ্দিন চৌধুরী,মুক্তিযোদ্ধা মোজাফফর আহমদ, শহীদুল হক চৌধুরী, কালাম চৌধুরী, আবুল কাশেম, অমল মিত্র, অধ্যাপক আবু সৈয়দ, আহমদ ছফা, শাহ নুরুল আলম, শহীদ মাহবুবুল আলমের ভাই শামসুল আলম চৌধুরী, শহীদ জাফরের ভাই জাকির হোসেন।
১৯৭১ সালের ২৮ মার্চ চেরাগী পাহাড় এলাকায় পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর গুলিতে শহীদ হয়েছিলেন বশরুজ্জামান চৌধুরী, জাফর চৌধুরী, দীপক চৌধুরী ও মাহবুবুল আলম চৌধুরী।
স্মৃতিফলক উদ্বোধন শেষে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক আবদুল মান্নান বলেন, ‘দীর্ঘ চারদশক পরে হলেও আমরা শহীদের প্রতি সম্মান দেখাতে পেরেছি। স্মৃতিস্তম্ভ শুধু স্থাপন করলে হবে না, তা রক্ষা করতে হবে। কারণ মুক্তিযোদ্ধাদের স্মৃতি ধংস করার জন্য এই দেশে এখনো জামাত-শিবির, রাজাকার-আলবদররা সক্রিয় আছে। ’
এসময় তিনি স্মৃতিফলকের সৌন্দর্য বৃদ্ধিতে উদ্যোগ নেওয়ারও আশ্বাস দেন।
শহীদ মাহবুবুল আলমের ভাই শামসুল আলম চৌধুরী বলেন,‘মুক্তিযুদ্ধের ঊষালগ্নে এখানে যারা শহীদ হয়েছেন, তারা সম্মুখ যুদ্ধে চট্টগ্রামের প্রথম শহীদ। অথচ স্বাধীনতার ৪৩ বছর পার হলেও তাদের স্মৃতি সংরক্ষণে কোন ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। ’
তিনি বলেন,‘আমরা দীর্ঘদিন ধরে চেরাগী পাহাড় এলাকায় একটি স্মৃতিফলক স্থাপনের দাবি জানিয়ে আসছিলাম। দীর্ঘদিন পরে হলেও জেলা প্রশাসন এটি স্থাপন করেছে। আমরা তাদের কাছে কৃতজ্ঞ। ’
প্রসঙ্গত, ১৯৭১ সালের ২৮ মার্চ বশরুজ্জামান চৌধুরী ও তার বন্ধুরা যুদ্ধরত বাঙালী সৈনিকদের জন্য রসদ নিয়ে যাচ্ছিলেন। তাদের গাড়ি চেরাগীপাহাড় অতিক্রম করার সময় পূর্ব থেকে ডিসি হিলে উৎপেতে থাকা পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর হামলার শিকার হন। হায়েনাদের বুলেটে ঘটনাস্থলেই শহীদ হন মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক, আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য আখতারুজ্জামান চৌধুরী বাবু’র ছোট ভাই ও স্বাধীন বাংলা ছাত্রসংগ্রাম পরিষদের অন্যতম নেতা বশরুজ্জামান চৌধুরী এবং তার বন্ধু জাফর চৌধুরী, দীপক চৌধুরী ও মাহবুবুল আলম চৌধুরী।
বাংলাদেশ সময়: ১৩১৯ঘণ্টা, জানুয়ারী ২৫, ২০১৪