ঢাকা, শুক্রবার, ৬ বৈশাখ ১৪৩১, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

স্বর্ণ ব্যবসায়ী অপহরণ

র‌্যাব-পুলিশের সম্পৃক্ততার অভিযোগ অনুসন্ধান শুরু

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯৪৯ ঘণ্টা, মার্চ ২, ২০১৪
র‌্যাব-পুলিশের সম্পৃক্ততার অভিযোগ অনুসন্ধান শুরু ছবি: বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

চট্টগ্রাম: চট্টগ্রামের ধনাঢ্য স্বর্ণ ব্যবসায়ী মৃদুল চৌধুরীকে অপহরণের বিষয়ে  আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ভূমিকা অনুসন্ধানের নির্দেশ দিয়েছে সরকার। চাঞ্চল্যকর এ অপহরণের ঘটনার সঙ্গে র‌্যাব কিংবা পুলিশের কোন সদস্য জড়িত ছিল কিনা তা-ও খতিয়ে দেখতে বলা হয়েছে পুলিশ সদর দপ্তরকে।



সরকারের নির্দেশে পুলিশ সদর দপ্তর চট্টগ্রাম নগর পুলিশকে দ্রুত অনুসন্ধান কমিটি গঠনের আদেশ দেন। এছাড়া কমিটিকে এক সপ্তাহের মধ্যে অনুসন্ধান প্রতিবেদন জমা দেয়ারও নির্দেশ দিয়েছে পুলিশ সদর দপ্তর।


রোববার নগর পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার (অপরাধ ও অভিযান) বনজ কুমার মজুমদারকে প্রধান করে তিন সদস্যবিশিষ্ট একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটিতে র‌্যাবের একজন প্রতিনিধি এবং চট্টগ্রামের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর) মোহাম্মদ ইলতুৎমিশকে সদস্য করা হয়েছে।

অনুসন্ধান কমিটি গঠনের সত্যতা স্বীকার করে বনজ কুমার মজুমদার বাংলানিউজকে বলেন, মৃদুল চৌধুরী অপহরণের ঘটনা অনুসন্ধানে উচ্চ পর্যায়ের নির্দেশে একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। আমরা প্রাথমিকভাবে কাজ শুরু করেছি।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, পুলিশ সদর দপ্তর থেকে কমিটিকে মৃদুল চৌধুরী অপহরণের প্রকৃত রহস্য কি, অপহরণের রহস্যের উন্মোচন হলনা কেন এবং এ অপহরণের ঘটনায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ভূমিকা কি তা অনুসন্ধান করে বের করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে।

উল্লেখ্য গত ১১ ফেব্রুয়ারি সকাল সাড়ে ১০টার দিকে নগরীর পুরাতন টেলিগ্রাফ রোডে নিজ বাসার সামনে থেকে র‌্যাবের বিরুদ্ধে মামলা করে আলোচিত ধনাঢ্য স্বর্ণ ব্যবসায়ী মৃদুল চৌধুরীকে তুলে নিয়ে যায় দুর্বৃত্তরা। এসময় তাদের এক আত্মীয় বাধা দেয়ার চেষ্টা করলে দুর্বৃত্তরা নিজেদের র‌্যাব ও ডিবি পুলিশ পরিচয় দিয়ে অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে দ্রুত ওই স্থান ত্যাগ করে।

এ ঘটনার পর মৃদুল চৌধুরীর পরিবারের পক্ষ থেকে বলা হয়, গত ১৫ জানুয়ারি র‌্যাবের কর্মকর্তা মেজর রাকিবুল আমিনসহ তিনজনের বিরুদ্ধে ৮০ ভরি স্বর্ণ লুটের একটি মামলা দায়ের করেন মৃদুল চৌধুরী। এ ঘটনার জের ধরে র‌্যাব তাকে অপহরণ করেছে বলে সন্দেহ করেন মৃদুলের স্ত্রী ও ভাই।

এরপর গণমাধ্যমে এ ঘটনা নিয়ে তোলপাড় শুরু হওয়ার পর ১৭ ফেব্রুয়ারি ভোরে মৃদুল চৌধুরীকে কুমিল্লা জেলার বুড়িচং থানার কংসনগর বাজারের পাশে ধানক্ষেতে ফেলে রেখে যায় অপহরণকারীরা। সেখান থেকে উদ্ধার হওয়ার পর ১৯ জানুয়ারি তিনি আদালতে সাক্ষী হিসেবে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেন।

জবানবন্দিতে মৃদুল চৌধুরী জানান, অপহরণকারীদের হেফাজতে থাকার অধিকাংশ সময় তাকে হ্যান্ডকাপ পরিয়ে রাখা হয়। তাকে নির্যাতনের সময়ও মুখোশ ও হ্যান্ডকাপ পরিয়ে রাখা হত। এছাড়া নির্যাতনের সময় তিনি র‌্যাবের বিরুদ্ধে কেন মামলা করেছিলেন সেটিও জিজ্ঞেস করত অপহরণকারীরা।

তবে অপহরণের সঙ্গে র‌্যাব জড়িত কিনা সেটি জবানবন্দিতে নিশ্চিত করতে পারেননি মৃদুল চৌধুরী। তিনি জানান, অপহরণকারীরা তাকে ছেড়ে দেবার আগে বলেছে, তারা ডিবি নয়, র‌্যাবও নয়, তারা সন্ত্রাসী। কিন্তু অপহরণকারীদের তিনি ‘স্যার’ সম্বোধন করেছিলেন বলে জবানবন্দিতে জানান।

বাংলাদেশ সময়: ১৯৪৪ঘণ্টা, মার্চ ০২,২০১৪

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।