চট্টগ্রাম: চট্টগ্রাম নগরীর আকবর শাহ থানার পূর্ব ফিরোজ শাহ এলাকায় স্বামী-স্ত্রী’র একইসঙ্গে মৃত্যুকে ময়নাতদন্ত প্রতিবেদনে ‘দুর্ঘটনা’ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। ময়নাতদন্ত করতে গিয়ে দম্পতিকে গুলি, ছুরিকাঘাত, কোপানো কিংবা হত্যার কোন আলামত পায়নি চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজের ফরেনসিক বিভাগ।
আকবর শাহ থানার ওসি আব্দুল মজিদ বাংলানিউজকে জানান, ময়নাতদন্ত প্রতিবেদনের কপি শনিবার থানায় পাঠানো হয়েছে। একইসঙ্গে আদালতেও ময়নাতদন্ত রিপোর্ট পাঠানো হয়েছে।
ওসি বলেন, পোস্টমর্টেম রিপোর্টে মৃত্যুকে দুর্ঘটনাজনিত হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। তাদের শরীরে খুনের জন্য আঘাতজনিত কোন জখমের চিহ্ন পাওয়া যায়নি।
ঘটনার পর নিহতদের সুরতহাল রিপোর্টেও অস্বাভাবিক কিছু পাওয়া যায়নি। দু’জনকে কুপিয়ে হত্যা কিংবা হাত-পায়ের রগ কেটে দেয়ার কোন আলামতও পাওয়া যায়নি।
গত ৬ মার্চ ভোরে পূর্ব ফিরোজ শাহ কলোনির বিশ্ব ব্যাংক আবাসিক এলাকার এক নম্বর সড়কের এম-ব্লকে রাজিব চৌধুরী ও তার স্ত্রী সঞ্চিতা শীল চৌধুরীর মর্মান্তিক মৃত্যু হয়। রাজিব পূর্ব ফিরোজ শাহ কলোনি সিটি কর্পোরেশন উচ্চ বিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের শিক্ষক এবং স্ত্রী চট্টগ্রামের হাটহাজারীতে খাদ্য অধিদপ্তরের সহকারী পরিদর্শক পদে কর্মরত ছিলেন।
ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী দাবি করে তাদের গৃহপরিচারিকা সুপ্তি পাল পুলিশকে জানান, রাজিব বাড়ির আঙিনায় একটি প্লাস্টিকের চেয়ারের উপর দাঁড়িয়ে গাছ থেকে পূজার ফুল তুলছিলেন। ভবনের ছাদে দাঁড়িয়ে একটি গামারি গাছ থেকে ফুল হাতে ছিঁড়ে স্টিলের বাটিতে নিচ্ছিলেন সঞ্চিতা।
এসময় হঠাৎ ছাদের আড়াই ফুট লম্বা সীমানা দেয়াল ভেঙ্গে নিচে পড়ে যান সঞ্চিতা। দেয়ালের ভাঙ্গা ইট এসে পড়ে রাজিবের মাথায়। রাজিব তখন আঙিনায় পড়ে থাকা ফুল কুড়াচ্ছিলেন। এ ঘটনা দেখতে পেয়ে চিৎকার দিয়ে কেঁদে উঠেন সুপ্তা। এরপর স্থানীয় লোকজন দ্রুত জড়ো হন। আহতদের সিএনজি অটোরিক্সায় করে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান।
তবে সুপ্তির বক্তব্য বিশ্বাসযোগ্য নয় দবি করে নিহতের পরিবারের পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়, রাজিব ও সঞ্চিতাকে পরিকল্পিতভাবে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে।
নিহত রাজিব শীল ফটিকছড়ি উপজেলার পাঁচপুকুরিয়া গ্রামের মৃত আদেশ চৌধুরীর ছেলে। আর সঞ্চিতার বাবার বাড়ি হাটহাজারী উপজেলার মির্জাপুর ইউনিয়নের সরকারহাট এলাকায়। তাদের আট বছর ও তিন বছর বয়সী দু’মেয়ে আছে।
বাংলাদেশ সময়: ২১২৬ঘণ্টা, মার্চ ১৫,২০১৪