ঢাকা, বুধবার, ১১ বৈশাখ ১৪৩১, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ শাওয়াল ১৪৪৫

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

প্রাণ ফিরে পাচ্ছে মৃতপ্রায় তিন খাল

আবদুল্লাহ আল মামুন, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২২০৭ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২২, ২০১৪
প্রাণ ফিরে পাচ্ছে মৃতপ্রায় তিন খাল ছবি : বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

চট্টগ্রাম: কিছু পরপর আবর্জনার স্তুপ। কেউ করেছেন সবজি চাষ।

কেউ আবার তৈরি করেছে স্থাপনা। সরু জায়গা দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে নোংরা পানি।
দেখলে মনে হবে পানি চলাচলের কোন সংকুচিত নালা। কে বলবে এটি ৩৫ ফুট প্রস্থের মির্জা খাল।

শুধু মির্জাখাল নয় দখল ও দুষণে এভাবেই মৃতপ্রায় হয়ে উঠেছিল ত্রিপুরা ও বামুনশাহী খালও। অবশেষে প্রায় এক দশক পর আবর্জনায় ভরাট হয়ে যাওয়া খাল তিনটি খননের উদ্যোগ নিয়েছে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন। এছাড়া পর্যায়ক্রমে নগরীর ১৬টি খালও খনন করা হবে বলে জানিয়েছেন করপোরেশনের কর্মকর্তারা।

সূত্র জানায়, নগরীর ১৬টি খাল দুই ধাপে খননের পরিকল্পনা নিয়েছে সিটি করপোরেশন। প্রথম ধাপে নগরীর ২নং গেট এলাকার গৌরাঙ্গ বাড়ি থেকে কালারপুল পর্যন্ত মির্জা খাল, চান্দগাঁও থানার কালারপুল থেকে ঢালী পাড়া খাল পর্যন্ত ত্রিপুরা খাল, পাঁচলাইশ এলাকার বামুনশাহী খাল ও বহদ্দারহাট এলাকার চাক্তাই খাল খনন কাজ শুরু হয়েছে। এরমধ্যে মির্জাখালের একাংশ, বামুনশাহী ও ত্রিপুরা খালে একদশকের বেশি সময় পর মাটি উত্তোলন করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।

ইতিমধ্যে চারটি খাল থেকে ৬৯টি গাড়িতে ৫ হাজার ৯৭৮ট্রিপ মাটি উত্তোলন করা হয়েছে।   দ্বিতীয় ধাপে বাকি খালগুলো খনন করা হবে।

গত বর্ষা মৌসুমে অল্প বৃষ্টিতে এসব এলাকায় পানি জমে যায়। সৃষ্টি হয় জলাবদ্ধতার। এসব কারণে ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়েন সিটি করপোরেশন। জলাবদ্ধতা দূরীকরণে জরুরী ভিত্তিতে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে গত ২৩ জুন স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় থেকে সিটি দেওয়া হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে গত ১ ডিসেম্বর থেকে খাল খনন করার উদ্যোগ নেন সিটি করপোরেশন।   

সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা কাজী মোহাম্মদ শফিউল আলম বাংলানিউজকে বলেন,‘খাল খনন করপোরেশনের নিয়মিত কাজের অংশ। বর্ষার আগেই যাতে খাল খনন শেষ করা যায় সে পরিকল্পনা নিয়ে কাজ শুরু করা হয়েছে। দুইভাগে কাজ শুরু করা হয়েছে। প্রথম ধাপের কাজ শেষ হওয়ার পর ক্রমান্বয়ে ১৬টি খাল খনন করা হবে। ’

তবে খাল খননে দখলদারদের বাঁধার মুখে পড়ছেন করপোরেশনের কর্মকর্তারা।

সিটি করপোরেশনের সহকারি প্রকৌশলী(যান্ত্রিক) সুদীপ বসাক বাংলানিউজকে বলেন,‘‘ইতিমধ্যে ত্রিপুরা খালের খনন কাজ প্রায় ৮০ শতাংশ শেষ হয়েছে। অন্যান্য খালের খনন কাজও চলছে। খালের উভয় পাশে দখলদাররা অবৈধভাবে স্থাপনা তৈরি করায় খনন কাজ কিছুটা বিঘ্নিত হচ্ছে। অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করে চারটি খালের খনন কাজ আগামী জানুয়ারীর মধ্যে শেষ করার পরিকল্পনা রয়েছে। ’’

প্রতি বছর বর্ষা মৌসুমে খাল খনন করায় নাগরিকদের তোপের মুখে পড়েন সিটি করপোরেশন। এবার শুষ্ক মৌসুমে কাজ শুরু করায় উচ্ছ্বসিত প্রশংসা করেছেন নগরবাসি।

বহদ্দারহাট এলাকার বাসিন্দা জিয়াউল হক বাংলানিউজকে বলেন,‘প্রতিবছর খাল থেকে ‍আবর্জনা তুলে খালের পাড়ে রাখা হতো, বর্ষার পানিতে পুনরায় খালে গিয়ে পড়তো। যার কারণে নগরবাসি খাল খননের কোন সুফল পেত না। এবার শুষ্ক মৌসুমে কাজ শুরু করেছে করপোরেশন নিশ্চয় এটি প্রশংসার দাবিদার। তবে এ সুফলের জন্য বর্ষা পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে। ’

একযুগের অধিক সময় ধরে হাজিরপুল এলাকায় ব্যবসা করছেন সরোয়ার আলম। তিনি বাংলানিউজকে বলেন,‘দশ বছরের বেশি সময় পর ত্রিপুরা ও মির্জাখাল খননের উদ্যোগ নিয়েছে সিটি করপোরেশন। বহদ্দারহাট ও মুরাদপুর এলাকার অধিকাংশ পানি এ খাল দিয়ে নিষ্কাশন হয়। কিন্তু খননের অভাবে খালগুলো প্রায় ভরাট হয়ে গিয়েছিল। খালগুলো খনন করায় আশা করছি জলাবদ্ধতা থেকে রেহায় পাবে নগরবাসি। ’

বাংলাদেশ সময়: ২১৫৭ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২২, ২০১৪

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।