ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১১ পৌষ ১৪৩১, ২৬ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

জামিনে মুক্ত মুফতি ইজাহার

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১২৫২ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৭, ২০১৬
জামিনে মুক্ত মুফতি ইজাহার

গ্রেফতারের প্রায় দেড় বছর পর নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গি সংগঠন হরকাতুল জিহাদের (হুজি) প্রতিষ্ঠাতা হিসেবে পরিচিত হেফাজত নেতা মুফতি ইজাহারুল ইসলাম জামিনে মুক্তি পেয়েছেন। 

চট্টগ্রাম: গ্রেফতারের প্রায় দেড় বছর পর নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গি সংগঠন হরকাতুল জিহাদের (হুজি) প্রতিষ্ঠাতা হিসেবে পরিচিত হেফাজত নেতা মুফতি ইজাহারুল ইসলাম জামিনে মুক্তি পেয়েছেন।  

মঙ্গলবার (২৭ ডিসেম্বর) বিকেল ৫টার দিকে মুফতি ইজাহারকে মুক্তি দেয়া হয়েছে বলে বাংলানিউজকে জানিয়েছেন চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারের ডেপুটি জেলার জাহিদুল ইসলাম।

ইজাহারের আইনজীবী অ্যাডভোকেট আব্দুস সাত্তার বাংলানিউজকে জানিয়েছেন, ইজাহারের বিরুদ্ধে ৪টি মামলা ছিল।   সব মামলায় তিনি হাইকোর্ট থেকে জামিন পেয়েছেন।

জানতে চাইলে নগর গোয়েন্দা পুলিশের উপ কমিশনার (উত্তর) পরিতোষ ঘোষ বাংলানিউজকে বলেন, মুফতি ইজাহার মুক্তি পেলেও তাকে নজরদারিতে রাখা হবে।   এছাড়া ফখরুল আবেদিন নামে এক হিযবুত তাহরীর কর্মীও মুক্তি পেয়েছে।   বাকলিয়া থানার মামলার আসামি ফখরুলকে মুক্তির পর আবারও আটক করা হয়েছে।   তাকে পিতার জিম্মায় মুক্তি দেয়া হয়েছে।

২০১৫ সালের ৭ আগস্ট দুপুরে নগরীর লালখানবাজার জামেয়াতুল উলুম আল ইসলামিয়া মাদ্রাসা থেকে হেফাজতের সিনিয়র নায়েবে আমির মুফতি ইজাহারুল ইসলামকে গ্রেফতার করা হয়।   তিনি খুনসহ পৃথক তিনটি মামলার গ্রেপ্তারি পরোয়ানাভুক্ত আসামি।   এর আগে প্রায় দুই বছর ধরে তিনি পলাতক ছিলেন।

২০১৩ সালের ৭ অক্টোবর নগরীর লালখানবাজারে মুফতি ইজাহারুল ইসলাম পরিচালিত জামেয়াতুল উলুম আল ইসলামিয়া মাদ্রাসায় হ্যান্ড গ্রেনেড বানাতে গিয়ে বিস্ফোরণে তিনজন মারা যায়।   পরে পুলিশ সেখানে তল্লাশি চালিয়ে চারটি তাজা গ্রেনেড, ১৮ বোতল এসিড এবং বিপুল পরিমাণ গ্রেনেড তৈরির সরঞ্জাম উদ্ধার করেন।

এ ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে নগরীর খুলশী থানায় বিস্ফোরক আইনে, এসিড নিয়ন্ত্রণ আইনে এবং খুনের অভিযোগে পৃথক তিনটি মামলা দায়ের করেন।   তিনটি মামলার অভিযোগপত্র দাখিলের পর আদালত অভিযোগ গঠন করেছেন।  মামলাগুলো এখন বিচারের পর্যায়ে আছে।

গ্রেফতারের পর মুফতি ইজাহারের বিরুদ্ধে জ্ঞাত আয়বর্হিভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে একটি মামলা দায়ের করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

এক দশক আগে ১৯৯৯ সালের জানুয়ারি মাসে প্রয়াত কবি শামসুর রাহমানের প্রাণনাশের অভিযোগে আটক হওয়া কয়েক জঙ্গি জানিয়েছিল, তারা মুফতি ইজাহারুল ইসলামের লালখান বাজার মাদ্রাসায় ট্রেনিং নিয়েছিল।

২০০৯ সালে বাংলাদেশের সীমান্তবর্তী ভারতে ডাউকি এলাকা থেকে গ্রেফতার হওয়া লস্কর ই তৈয়বার দু’জঙ্গি টি নাজের ওরফে নাজের পারবন এবং শফিক ওরফে সাহাফাজ শামসুদ্দিন সেদেশের পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদে জানায়, দু’জঙ্গির সঙ্গে ২০০৯ সালের নভেম্বরে মুফতি হারুনের বাংলাদেশে কয়েক দফা বৈঠক হয়। এমনকি তারা মার্কিন ও ভারত দূতাবাসে হামলারও পরিকল্পনা নিয়েছিল।

হেফাজতে ইসলামের ভেতরে কট্টর সরকারবিরোধী অংশের নেতৃত্বদাতা দলটির সিনিয়র নায়েবে আমির মুফতি ইজাহারুল ইসলাম ২০১৩ সালের ৭ অক্টোবর নগরীর লালখানবাজারে তার পরিচালিত মাদ্রাসায় গ্রেনেড বিস্ফোরণের পর থেকে ‘আত্মগোপনে’ চলে যান।

পুলিশের দেয়া তথ্য অনুযায়ী মাদ্রাসায় বিস্ফোরণের প্রায় ছয় ঘণ্টা পর কৌশলে পালিয়ে যান ইজাহার।   সেখান থেকে রাউজান, হাটহাজারী হয়ে পটিয়ায় অবস্থান করেন কিছুদিন।  সেখান থেকে গিয়ে কক্সবাজারে অবস্থান করেন কিছুদিন।  ২০১৪ সালের ফেব্রুয়ারিতে তিনি লালখানবাজার মাদ্রাসায় ফিরে আসেন। এরপর থেকে মাদ্রাসায় অনিয়মিতভাবে আসা-যাওয়া করেন তিনি।

বাংলাদেশ সময়: ১৮৪৬ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৭, ২০১৬

আরডিজি/টিসি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।