চট্টগ্রাম: জেএসসি পরীক্ষা চালুর সাত বছরে এবার চট্টগ্রাম শিক্ষাবোর্ডে পাসের হার ও জিপিএ-৫ পাওয়া শিক্ষার্থীর সংখ্যা সবচেয়ে বেশি। এবছর পাসের হার ৯০ দশমিক ৭৫ শতাংশ।
পাসের হারের পাশাপাশি বেড়েছে জিপিএ-৫ পাওয়া শিক্ষার্থীর সংখ্যাও। গতবছর জিপিএ-৫ পেয়েছিল ১২ হাজার ২৬৮ জন। এবার তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৪ হাজার ১৩৫ জনে। এরমধ্যে ৬ হাজার ৩১৫ জন ছাত্র ও ৭ হাজার ৮২০ জন ছাত্রী।
বৃহস্পতিবার (২৯ ডিসেম্বর) সারাদেশে একযোগে জেএসসি ও সমমানের পরীক্ষার ফল প্রকাশ করা হয়। দুপুরে চট্টগ্রাম শিক্ষাবোর্ড কার্যালয়ে ফলাফল ঘোষণা করেন পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক মাহবুব হাসান।
সামগ্রিক ফলাফলে সন্তুষ্টি প্রকাশ করে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, বোর্ডের সামগ্রিক ফলাফলে আমরা সন্তুষ্ট। চট্টগ্রাম শিক্ষাবোর্ডের অধীনে জেএসসি পরীক্ষা চালু হওয়ার পর এবারই পাস ও জিপিএ-৫ পাওয়া শিক্ষার্থীর সংখ্যা সবচেয়ে বেশি।
এসময় শিক্ষাবোর্ড সচিব আবদুল মুবিনসহ বোর্ডের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
ফলাফল বিশ্লেষণে পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক বলেন, চলতি বছরের ১ নভেম্বর পরীক্ষা শুরু হয়ে ১৭ নভেম্বর সম্পন্ন হয়েছে। এসএসসি ও এইচএসসির তুলনায় পরীক্ষার্থীর সংখ্যা দ্বিগুণ হলেও খুব কম সময়ের মধ্যে খাতা মূল্যায়ন, ফলাফল প্রস্তুত ও প্রকাশ করা কঠিন কাজ।
অন্যান্যবার তিন পার্বত্য জেলায় পাসের হার কম থাকলেও এবার পাসের হার বেড়েছে। এতে সামগ্রিক ফলাফলে প্রভাব পড়েছে।
মাহবুব হাসান জানান, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে গত বছর থেকে সেরা ২০টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের তালিকা হচ্ছে না। তবে জিপিএ ৫ এর ভিত্তিতে বোর্ড সেরা স্কুল নির্বাচিত হয়েছে বাংলাদেশ মহিলা সমিতি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়। এ স্কুলের পরীক্ষায় অংশ নেওয়া ৪৩৩ জন শিক্ষার্থীর মধ্যে ৩৬৭ জন জিপিএ-৫ পেয়ে পাস করেছে সবাই।
সেরা স্কুলের দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে ডা. খাস্তগীর সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়। এ স্কুলের ৩২১ জন পরীক্ষার্থী জিপিএ-৫ পেয়েছে। এছাড়া তৃতীয় অবস্থানে থাকা কলেজিয়েট উচ্চ বিদ্যালয়ে জিপিএ-৫ পেয়েছে ৩১৬ জন পরীক্ষার্থী।
চট্টগ্রাম শিক্ষাবোর্ডের অধীনে ১ হাজার ২০৯টি বিদ্যালয়ের ২১১ কেন্দ্র থেকে ১ লাখ ৭৯ হজার ৯৫ জন পরীক্ষাংশ অংশ নিয়ে পাস করেছে ১ লাখ ৬২ হাজার ৫২৪জন। উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীদের মধ্যে ৭৩ হাজার ৫৯৭ জন ছাত্র এবং ৮৮ হাজার ৯২৭ জন ছাত্রী।
এবার চট্টগ্রামে মেয়েদের তুলনায় ছেলেরা ভাল ফলাফল করেছে। চট্টগ্রামে মোট পরীক্ষার্থীদের মধ্যে ৯১ দশমিক ১৪ শতাংশ ছেলে পাস করেছে। মেয়েদের ক্ষেত্রে এ হার ৯০ দশমিক ৪২ শতাংশ। তবে জিপিএ-৫ পাওয়ার ক্ষেত্রে মেয়েরা এগিয়ে।
তিন পার্বত্য জেলাতে পাসের হার বেড়েছে। পাসের হার বেড়েছে চট্টগ্রাম জেলা ও নগরীতেও। নগরীতে এবার পাসের হার ৯৪ দশমিক ১৮ শতাংশ। গতবার এ হার ছিল ৯১ দশমিক ৬৪ শতাংশ। চট্টগ্রাম জেলায় পাসের হার ৮৮ দশমিক ৯২ শতাংশ। গতবার ছিল ৮২ দশমিক ৩৫ শতাংশ। মহানগরসহ চট্টগ্রাম জেলায় পাসের হার ৯০ দশমিক ৬১ শতাংশ। গতবার ছিল ৮৫ দশমিক ২০ শতাংশ।
এবার কক্সবাজার জেলায় পাসের হার ৯৪ দশমিক ৩২ শতাংশ। গতবার এ হার ছিল ৯০ দশমিক ২ শতাংশ। খাগড়াছড়িতে ৮৯ দশমিক ৭০ শতাংশ, বান্দরবানে ৮৩ দশমিক ৫৫ শতাংশ এবং রাঙামাটিতে ৮৮ দশমিক ৩২ শতাংশ। গতবার এসব জেলায় পাসের হার ছিল যথাক্রমে- ৮৫ দশমিক ৩৭, ৭৭ দশমিক ৯৮ এবং ৮১ শতাংশ।
বাংলাদেশ সময়: ১৫৪৭ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৯, ২০১৬
এমইউ/টিসি