বছরের প্রথম দিন নতুন পাঠ্যপুস্তক পেয়ে কেমন লাগছে, এ প্রশ্নের উত্তরে সাইমা আনন্দ চিত্তে বলে উঠলো- ‘নতুন বইগুলো অনেক সুন্দর। বাসায় গিয়ে সব বই খুলে দেখবো’।
শুধু সাইমা নয়, বছরের প্রথম দিন প্রতিবছরের ন্যায় এবারও মহানগরের ৬টি শিক্ষা থানাসহ চট্টগ্রাম জেলার ১৪ উপজেলার ৪ হাজার ৭৯২টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের দশ লক্ষাধিক শিক্ষার্থীর হাতে নতুন পাঠ্যপুস্তক হাতে তুলে দিয়েছে চট্টগ্রাম জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস।
এদিকে, রোববার (১ জানুয়ারি) সকাল ৯টায় মিউনিসিপাল সরকারি মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বই উৎসবের উদ্বোধন করেন জেলা প্রশাসক সামসুল আরেফিন।
একইভাবে রোববার সকাল সাড়ে ১০টায় মাধ্যমিক পর্যায়ের বই উৎসবের উদ্বোধন করেন বিভাগীয় কমিশনার রুহুল আমিন। এসময় মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক আজিজুর রহমান, জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা হোসনে আরাসহ আরো অনেকে উপস্থিত ছিলেন।
জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা নাসরিন সুলতানা বাংলানিউজকে জানান, চট্টগ্রাম জেলার ২০ শিক্ষা থানায় ১ম থেকে ৫ম শ্রেণির ৩৩টি বিষয়ে ৫১ লাখ ৯৭ হাজার ২০টি পাঠ্যপুস্তকের চাহিদা পাঠানো হয়েছিল। ১ম থেকে ২য় শ্রেণিতে ৩টি পাঠ্যপুস্তক (বাংলা, ইংরেজী ও গনিত)। তৃতীয় থেকে পঞ্চম শ্রেণিতে পাঠ্যপুস্তক ৬টি (বাংলা, ইংরেজী, গণিত, সমাজ, বিজ্ঞান ও ধর্ম) রয়েছে। চাহিদা অনুসারে এনসিটিবি কর্তৃপক্ষ প্রায় সব পাঠ্যপুস্তক স্ব স্ব শিক্ষা থানায় পৌঁছে দিয়েছে। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনায় বছরের প্রথম দিন শিক্ষার্থীদের হাতে পাঠ্যপুস্তক তুলে দেওয়া হয়েছে।
চট্টগ্রাম জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা হোসনে আরা বাংলানিউজকে বলেন, বছরের প্রথম দিন শিক্ষার্থীদের হাতে বই তুলে দিতে পারাটা সত্যি আনন্দের। এবার চট্টগ্রাম জেলার ১৫০০ মাধ্যমিক স্কুলের ১৭৫টি বিষয়ে ১ কোটি ৩৪ লাখ ৩৫ ৩০০টি পাঠ্যপুস্তক শিক্ষার্থীদের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে।
অন্যদিকে, চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের ৪৭টি মাধ্যমিক স্কুল, ২ প্রাথমিক বিদ্যালয় ও ৭টি কিন্ডারগার্ডেনে স্কুলের শিক্ষার্থীদের হাতে পাঠ্যপুস্তক তুলে দেন চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন।
চসিক এর শিক্ষা বিভাগ চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন মডেল হাইস্কুলে বই উৎসব উপলক্ষ্যে আয়োজন করে। সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন চসিক মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে সিটি মেয়র শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে বলেন, ‘প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষায় শিক্ষীত হলে চলবে না। সত্যিকারের দেশপ্রেমিক হিসেবে নিজেকে গড়ে তুলে পিতামাতার প্রত্যাশা পূরণ করতে হবে। আলোকিত ও পূর্ণাঙ্গ মানুষ হতে হবে। সমাজ ও দেশের কল্যাণে কাজ করতে হবে। ’
অভিভাবকদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, ‘ছেলেমেয়েরা কিভাবে পড়ালেখা করছে তা নজরে রাখার পাশাপাশি তারা কার সঙ্গে চলাফেরা করছে, মুঠোফোন-ল্যাপটপ কিভাবে ব্যবহার করছে তার প্রতিও নজর রাখতে হবে। সরকার শিক্ষার্থীদের বিনামূল্যে সকল পাঠ্যপুস্তক বছরের প্রথমদিন শিক্ষার্থীদের হাতে তুলে দিয়েছে-এটি সরকারের অনেক বড় সাফল্য। ’
বাংলাদেশ সময়: ১৩৩৩ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১, ২০১৭
এসবি/টিসি