ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১১ পৌষ ১৪৩১, ২৬ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

হাতে নতুন বই, গন্ধে মাতোয়ারা শিক্ষার্থীরা

সুবল বড়ুয়া, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৭১৯ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১, ২০১৮
হাতে নতুন বই, গন্ধে মাতোয়ারা শিক্ষার্থীরা নতুন বই হাতে উচ্ছ্বসিত শিক্ষার্থীরা। ছবি: উজ্জ্বল ধর, বাংলানিউজ

চট্টগ্রাম: ‘কাল রাতে তাড়াতাড়ি ঘুমিয়ে পড়েছিলাম। সকাল সকাল স্কুলে এসে যাতে সবার আগে নতুন বই হাতে নিতে পারি। সেই ইচ্ছে অনুসারে স্কুলে এসে স্যারদের কাছ থেকে নতুন ৬টি বই পেলাম। যা নতুন বছরের প্রথম দিন আমার সেরাপ্রাপ্তি।’

সোমবার (১ জানুয়ারি) সকালে কাপাসগোলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মাঠে রাইমা জান্নাত এসব কথা বলেন। চতুর্থ শ্রেণি থেকে সাইমা এবার পঞ্চম শ্রেণিতে উত্তীর্ণ হয়েছে।

মেয়ের হাতে নতুন পাঠ্যপুস্তক দেখে উচ্ছ্বসিত রাইমার মা খাইরুন নাহার বাংলানিউজকে জানান, গত বছর তৃতীয় থেকে চতুর্থ শ্রেণিতে ওঠার পর একইভাবে বছরের প্রথম দিন সাইমাকে নিয়ে বই উ‍ৎসবে এসেছিলাম। কিন্তু ওইবছরে একসাথে সব বই দিতে পারেনি।

আরও কিছুদিন পর পেয়েছিলাম বাকি ২টি বই।

নতুন বই হাতে উচ্ছ্বসিত শিক্ষার্থীরা।   ছবি: উজ্জ্বল ধর, বাংলানিউজ

এবার একসাথে শিক্ষার্থীদের হাতে সব নতুন পাঠ্যপুস্তক তুলে দেওয়াটা সরকারের অনেক বড় সাফল্য বলেও মত প্রকাশ করেন তিনি।

শুধু রাইমা নয় ২০১৮ সালের জন্য নগরীর ৬টি সহ চট্টগ্রামের ২০ শিক্ষা থানার ৪ হাজার ৭২৫টি প্রাথমিক স্কুলের প্রথম থেকে ৫ম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের ৫১ লাখ ৩৬৬টি পাঠ্যপুস্তক তুলে দিচ্ছে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস।

একইভাবে মাধ্যমিকে (ইংরেজি ও বাংলা ভার্সনে) নগরীসহ চট্টগ্রামের ২০ শিক্ষা থানার ১ হাজার ১৬৯টি স্কুলের ষষ্ঠ থেকে নবম শ্রেণির ৭ লাখ ৪৮ হাজার ৯২ শিক্ষার্থীর হাতে ১ কোটি ৮৭ লাখ ২ হাজার ৫৭৫টি পাঠ্যপুস্তক শিক্ষার্থীদের হাতে তুলে দিচ্ছে জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিস।

নতুন বই হাতে উচ্ছ্বসিত শিক্ষার্থীরা।   ছবি: উজ্জ্বল ধর, বাংলানিউজ

বই উৎসব উপলক্ষে নগরীর প্রাইমারি ট্রেনিং ইনস্টিটিউট (পিটিআই) সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে প্রধান অতিথি হিসেবে শিক্ষার্থীদের হাতে বই তুলে দেন চট্টগ্রামের বিভাগীয় কমিশনার মো. আব্দুল মান্নান। আরও উপস্থিত ছিলেন জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা নাসরিন সুলতানা, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) মো. হাবিবুর রহমান।

একইভাবে নগরীর ডা. খাস্তগীর সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, কলেজিয়েট স্কুল ও নগরীর গরীবে নেওয়াজ উচ্চ বিদ্যালয়ে পৃথকভাবে মাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের হাতে নতুন বই তুলে দেওয়া হয়েছে।

ডা. খাস্তগীর স্কুলে বই উৎসবে প্রধান অতিথি ছিলেন মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা (মাউশি) চট্টগ্রাম অঞ্চলের পরিচালক প্রফেসর ড. গোলাম ফারুক। কলেজিয়েট স্কুলের বই উৎসবে প্রধান অতিথি ছিলেন মাউশি’র চট্টগ্রাম অঞ্চলের উপ-পরিচালক মো. আজিজ উদ্দিন।

নতুন বই হাতে উচ্ছ্বসিত শিক্ষার্থীরা।   ছবি: উজ্জ্বল ধর, বাংলানিউজ

গরীবে নেওয়াজ উচ্চ বিদ্যালয়ে প্রধান অতিথি ছিলেন জেলা প্রশাসক মো. জিল্লুর রহমান চৌধুরী। বিশেষ অতিথি ছিলেন জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা হোসেন আরা বেগম। অতিথিরা শিক্ষার্থীদের হাতে নতুন পাঠ্যপুস্তক তুলে দেন।

সোমা নামে ডা. খাস্তগীর স্কুলের সপ্তম শ্রেণির শিক্ষার্থী বাংলানিউজকে জানান, বছরের প্রথম দিন নতুন বই নেওয়ার জন্য সকাল থেকেই স্কুলে এসেছি। নতুন বইগুলো অনেক সুন্দর। বাসায় গিয়ে সব বই দেখে নেবো। আমি সত্যিই খুব খুশি।  

জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা নাসরিন সুলতানা বাংলানিউজকে জানান, নগরীর ৬টিসহ চট্টগ্রামের ২০ শিক্ষা থানার ৪ হাজার ৭২৫টি স্কুলের ১ম ও দ্বিতীয় শ্রেণিতে ৩টি এবং তৃতীয় থেকে ৫ম শ্রেণিতে ৬টি বিষয়ে এবার ৫১ লাখ ৩৬৬টি পাঠ্যপুস্তক শিক্ষার্থীদের হাতে তুলে দেয়া হচ্ছে। বছরের প্রথম দিন শিক্ষার্থীদের হাতে নতুন পাঠ্যপুস্তক তুলে দেওয়াটা সরকারের ইতিবাচক সাফল্য। যা শিক্ষারমানকে আরও বেশি ত্বরান্বিত করবে।

নতুন বই হাতে উচ্ছ্বসিত শিক্ষার্থীরা।   ছবি: উজ্জ্বল ধর, বাংলানিউজ

জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা হোসনে আরা বাংলানিউজকে জানান, নগরীসহ চট্টগ্রামের ২০ শিক্ষা থানায় ১ হাজার ১৬৯টি স্কুলের ৬ষ্ঠ থেকে নবম শ্রেণির ৭ লাখ ৪৮ হাজার ৯২ শিক্ষার্থীর হাতে ১ কোটি ৮৭ লাখ ২ হাজার ৫৭৫টি পাঠ্যপুস্তক তুলে দেওয়া হচ্ছে।

বাংলাদেশ সময়: ১৩০০ ঘণ্টা, জানুয়ারি ০১, ২০১৮

এসবি/টিসি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।