এর পরের ঘটনা আরো চমকপ্রদ, যেন ধারাবাহিক নাটকের একেকটি পর্ব। ২১ ফেব্রুয়ারির প্রথম প্রহরে উদ্ধার হওয়ায় ওসি শিশুটির নাম রাখেন ‘একুশ’।
সন্তানহীন মায়েদের একুশকে পাবার জন্য চরম আকুতি! বিচারকও আবেগপ্রবণ হয়ে পড়েন। শেষ পর্যন্ত বিচারককে একটি সিদ্ধান্তে আসতে হয়। নি:সন্তান এক চিকিৎসক দম্পতির কোলে ঠাঁই পায় একুশ।
একুশ পেয়েছে মায়ের কোল আর সদ্যোজাত শিশুটিকে নতুন জীবন দিয়ে মানবিকতার যে দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন ওসি আলমগীর মাহমুদ, তার স্বীকৃতিও তিনি পাচ্ছেন। এবার সেবায় প্রেসিডেন্ট পুলিশ মেডেলের (পিপিএম) জন্য মনোনীত হয়েছেন ওসি।
৮ জানুয়ারি পুলিশ সপ্তাহ উপলক্ষে প্যারেডে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ওসি আলমগীর মাহমুদকে পিপিএম ব্যাচ পরিয়ে দেবেন।
ব্যতিক্রমী কাজের জন্য পিপিএম পাওয়ার বিষয়ে প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে ওসি আলমগীর মাহমুদ বাংলানিউজকে বলেন, চোর-ডাকাত ধরা, মামলা তদন্ত এগুলো তো পুলিশের নিয়মিত কাজ। কিন্তু এর বাইরেও মানবিকতার ডাকে সাড়া দেওয়া, মানুষের সেবায় এগিয়ে যাওয়া পুলিশের কর্তব্য।
‘কোন ধরনের প্রচার কিংবা পুরস্কারের জন্য নয়, দায়িত্ববোধ থেকেই আমি নবজাতকটির জীবন বাঁচাতে এগিয়ে গিয়েছিলাম। তবুও রাষ্ট্রীয় এই স্বীকৃতিতে পুলিশের ভাবমূর্তি বাড়বে। পুলিশ সদস্যরা সেবাধর্মী কাজে উৎসাহ পাবে। ’ বলেন আলমগীর মাহমুদ
রাঙ্গুনিয়া উপজেলার সন্তান আলমগীর মাহমুদ চট্টগ্রাম কলেজ থেকে স্নাতকোত্তরের পর ১৯৯৯ সালে পুলিশের উপ-পরিদর্শক হিসেবে যোগ দেন। এবারই প্রথম পিপিএম পাচ্ছেন তিনি।
ঠিকানা পাওয়া একুশকে দেখতে এখনো ছুটে যান ওসি আলমগীর মাহমুদ। শিশুটির মায়ায় এখনো আটকে আছেন ওসি।
‘মাঝে মাঝে একুশকে দেখতে যাই। তবে গোপনে যাই, যাতে কেউ না জানে। যারা একুশকে পেয়েছেন তাদের একটা সামাজিক সম্মানের বিষয় আছে। একুশ বড় হয়ে যাতে কোন ধরনের গ্লানিতে না ভোগে, সমাজের মানুষ হিসেবে সেটাও তো আমাদের দেখতে হবে। ’ বলেন ওসি আলমগীর মাহমুদ
বাংলাদেশ সময়: ২০৪০ ঘণ্টা, জানুয়ারি ০১, ২০১৮
আরডিজি/টিসি