তদন্তে নেমেই পিবিআই কর্মকর্তারা মূল খুনি প্রীতি বণিক ওরফে মুক্তাকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হন। মঙ্গলবার (০২ জানুয়ারি) চট্টগ্রামের বিচারিক হাকিম জয়ন্তী রাণী রায়ের আদালতে খুনের দায় স্বীকার করে জবানবন্দি দিয়েছেন ওই আসামি।
পিবিআই চট্টগ্রাম জেলার পরিদর্শক আবু জাফর মোহাম্মদ ওমর ফারুক বাংলানিউজকে বলেন, শহিদুলের পকেটে একটি ডায়েরিতে প্রীতির মোবাইল নম্বর লেখা ছিল। সেই নম্বরের সূত্র ধরে আমরা তাকে শনাক্ত করি।
২০১৪ সালে ঈদুল ফিতরের আগের রাতে উপজেলার উত্তর ঢেমশা মাইজপাড়া চিকন খালের পাড় থেকে শহিদুলের মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।
সূত্রমতে, আদালতে দেওয়া জবানবন্দিতে প্রীতি জানিয়েছেন, ২০১৩ সালে মোবাইলে ক্রস কানেকশনে শহিদুলের সঙ্গে তার পরিচয় হয়। শহিদুল টঙ্গী এলাকায় একটি পোশাক কারকানায় চাকুরি করত। আর প্রীতি থাকেন চট্টগ্রামে। প্রীতির দুই মেয়ে ও এক ছেলে। বড় মেয়ের বিয়ে হয় ২০১৩ সালে।
পরিচয়ের পর কয়েকবার চট্টগ্রামে এসে শহিদুল প্রীতির সঙ্গে দেখা করেন। তিনি প্রীতিকে মুক্তা নামে চিনতেন। পরিচয়ের পর থেকে বিভিন্ন অজুহাতে শহিদুল প্রীতির কাছ থেকে বিকাশের মাধ্যমে কমপক্ষে ৪০ হাজার টাকা নেন। পরে পাওনা টাকা ফেরত চাইলে দুজনের সম্পর্কের অবনতি ঘটে।
২০১৪ সালের মাঝামাঝিতে প্রীতি শহিদুলের সঙ্গে সম্পর্কছেদ করতে চাইলে বিরোধ জোরালো রূপ নেয়। তখন শহিদুল প্রীতির মেয়েকে বিয়ের প্রস্তাব দেয়। এতে প্রীতি আরও ক্ষুব্ধ হয়।
এক পর্যায়ে প্রীতি তার ভাই রাজুর সঙ্গে পরামর্শ করে শহিদুলকে কৌশলে চট্টগ্রামে আনে। এরপর সাতকানিয়ায় নিয়ে গিয়ে মাথায় লোহার রড দিয়ে আঘাত করে খুন করে।
পিবিআই চট্টগ্রাম জেলার উপ-পরিদর্শক কামাল আব্বাস বাংলানিউজকে বলেন, সাতকানিয়া থানায় দায়ের হওয়া হত্যা মামলায় তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই মিনহাজ প্রীতিকে জিজ্ঞাসাবাদ করেন। তবে প্রীতি অসংলগ্ন উত্তর দিয়ে পার পান। পুলিশ ঘটনা সত্য কিন্তু সাক্ষ্যপ্রমাণ পাওয়া যায়নি মর্মে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন।
‘আদালত চূড়ান্ত প্রতিবেদন নাকচ করে তদন্তের দায়িত্ব সিআইডিকে দেন। সিআইডিও তিনবার চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করে। সর্বশেষ মামলাটি পিবিআইয়ের হাতে আসে। আমরা আলামত হিসেবে জব্দ করা সেই ডায়েরিতে থাকা নম্বর পর্যালোচনা করে নিশ্চিত হই প্রীতিই খুনি। ’
হত্যাকাণ্ডে জড়িত রাজুকে গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে বলে জানিয়েছেন এসআই কামাল আব্বাস।
বাংলাদেশ সময়: ২২০০ ঘণ্টা, জানুয়ারি ০২, ২০১৮
আরডিজি/টিসি