চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়: শিক্ষক স্বল্পতা, অনিয়মিত ক্লাস ও পরীক্ষার কারণে সেশনজট আছে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটে (আইইআর)। করোনা মহামারীর কারণে সেই সেশনজট এ ইনস্টিটিউটে আরও প্রকট হয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, ইনস্টিটিউটের ২০১৮-১৯ সেশনের ১ম বর্ষের পরীক্ষার তারিখ ঘোষণা করা হয় চলতি বছরের ২৫ মার্চ। কিন্তু করোনার কারণে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ১৮ মার্চ বন্ধ হয়ে গেলে পরীক্ষা স্থগিত করা হয়।
এরপর প্রায় ৭ মাস কেটে গেলেও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ থাকায় স্থগিত থাকা পরীক্ষা নেওয়া সম্ভব হয়নি। তাই সবমিলিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির ২২ মাস পরেও এখনো ১ম বর্ষের গণ্ডি থেকে বের হতে পারেননি ১৮-১৯ সেশনের শিক্ষার্থীরা।
এদিকে চলতি বছরের শুরুতে ২০১৯-২০ সেশনে যুক্ত হয়েছে প্রথম বর্ষের আরও একটি ব্যাচ। ফলে ২০১৮-১৯ সেশন এবং ২০১৯-২০ সেশন- মোট দুই বর্ষের শিক্ষার্থীরা এখনও ১ম বর্ষে আটকে আছেন।
গত ৬ সেপ্টেম্বর থেকে চবিতে অনলাইনে ক্লাস শুরু হলেও আইইআরের ১ম কিংবা ২য় বর্ষে কোথাও ক্লাস করার সুযোগ পাচ্ছেন না ২০১৮-১৯ সেশনের শিক্ষার্থীরা।
২০১৮-১৯ সেশনের শিক্ষার্থী নুরুল আমিন ফাহিম বাংলানিউজকে বলেন, আমাদের একটি কোর্স ছাড়া বাকি কোর্সগুলোর ক্লাস শুরু হয়েছিল গতবছরের জুলাইতে। ডিসেম্বরে পরীক্ষা নেওয়ার কথা থাকায় এক বছরের কোর্স ৬ মাসে শেষ করা হয়।
তিনি বলেন, কিন্তু এরপর আগের ব্যাচের রেজাল্ট বাকি আছে জানিয়ে জানুয়ারিতে পরীক্ষা নেওয়ার কথা বলা হয়। সর্বশেষ গত মার্চের ২৫ তারিখ পরীক্ষার নেওয়ার ঘোষণা করলেও এর আগেই বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ হয়ে যায়। আমাদের ব্যাচ দীর্ঘমেয়াদি জটে পড়বে এখন।
দীর্ঘমেয়াদি সেশনজট থেকে বাঁচতে ২০১৮-১৯ সেশনের শিক্ষার্থীরা রোববার (১৮ অক্টোবর) বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার বরাবর পরীক্ষা ও ফলাফলের জন্য বিকল্প তিনটি আবেদন করেন।
তাদের আবেদনের মধ্যে আছে- অনলাইনে ২য় বর্ষের ক্লাস শুরু করে কোর্স শেষ করা ও চবি খুললে প্রথম বর্ষের পরীক্ষা নিয়ে ধারাবাহিকভাবে ২য় বর্ষের পরীক্ষা নেওয়া। স্বাস্থ্যবিধি মেনে পরীক্ষা নেওয়ার ব্যবস্থা করা অথবা অনলাইনে পরীক্ষার ব্যবস্থা করা। অটো প্রমোশনের ব্যবস্থা করা।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ইনস্টিটিউটের পরিচালক অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ বশির আহাম্মদ বাংলানিউজকে বলেন, ইনস্টিটিউটের শিক্ষক স্বল্পতার কারণে সবকিছু টাইমলি করা সম্ভব হয় না।
তিনি বলেন, ১ম বর্ষের পরীক্ষা ডিসেম্বরে হওয়ার কথা থাকলেও দু-এক মাস পরে মার্চে তারিখ ঘোষণা করা হয়। কিন্তু মহামারীর কারণে আর পরীক্ষা নেওয়া হয়নি। তবে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ যদি কেন্দ্রীয়ভাবে পরীক্ষার বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত দেয়, সর্বপ্রথম তাদের পরীক্ষা নেব আমরা।
বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) এসএম মনিরুল হাসান বাংলানিউজকে বলেন, শিক্ষার্থীরা আমাদের কাছে পরীক্ষা ও বিকল্প ফলাফলের প্রক্রিয়ার বিষয়ে আবেদন করেছে। বিষয়টা গুরুত্বের সঙ্গে দেখবো আমরা। সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে আলোচনা করে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
বাংলাদেশ সময়: ১৯১০ ঘণ্টা, অক্টোবর ১৮, ২০২০
এমএ/টিসি