ঢাকা, শুক্রবার, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৮ রমজান ১৪৪৫

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

বৈরুত বিস্ফোরণের ক্ষতিগ্রস্ত ‘বিজয়’ ফিরলো দেশে

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮০২ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৫, ২০২০
বৈরুত বিস্ফোরণের ক্ষতিগ্রস্ত ‘বিজয়’ ফিরলো দেশে বাংলাদেশ নৌবাহিনীর যুদ্ধজাহাজ বিজয়

চট্টগ্রাম: ভূমধ্যসাগরে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে দায়িত্বরত অবস্থায় গত ৪ আগস্ট বৈরুত বন্দরে বিস্ফোরণের ক্ষতিগ্রস্ত বাংলাদেশ নৌবাহিনীর যুদ্ধজাহাজ ‘বিজয়’ দেশে ফিরেছে। গত ২৪ সেপ্টেম্বর দেশের উদ্দেশে যাত্রা শুরু করে প্রায় ১০ হাজার ২০ কিলোমিটার সমুদ্রপথ পাড়ি দিতে হয়েছে জাহাজটিকে।

বর্তমানে ‘বানৌজা সংগ্রাম’ যুদ্ধজাহাজ ‘বিজয়’র প্রতিস্থাপক হিসেবে ভূমধ্যসাগরে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা কার্যক্রমের আওতায় লেবাননে দায়িত্ব পালন করছে।

রোববার (২৫ অক্টোবর) লেবাননে মাল্টিন্যাশনাল মেরিটাইম টাস্কফোর্সের আওতায় সফলভাবে দায়িত্ব পালন শেষে ‘বিজয়’ চট্টগ্রাম নেভাল জেটিতে আসলে স্বাগত জানান নৌবাহিনী প্রধান অ্যাডমিরাল এম শাহীন ইকবাল।

এ সময় নৌবাহিনী প্রধান জাহাজে উপস্থিত সব কর্মকর্তা ও নাবিকদের সফলভাবে মিশন সমাপ্তের জন্য আন্তরিক অভিনন্দন ও শুভেচ্ছা জানান।  

কর্মকর্তা ও নাবিকদের  উদ্দেশে নৌপ্রধান বলেন, বৈরুত বন্দরে বিস্ফোরণের ঘটনায় জাহাজটি ক্ষতিগ্রস্ত হওয়া এবং নৌসদস্যদের আহত হওয়ার বিষয়ে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী অত্যন্ত আন্তরিকতার সঙ্গে সার্বক্ষণিক খোঁজখবর নেন। সেই সঙ্গে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জাহাজের ক্ষয়ক্ষতি কাটিয়ে ওঠা এবং নৌসদস্যদের সুচিকিৎসার ক্ষেত্রে সবধরনের ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দেন।  

বক্তব্য দেন নৌবাহিনী প্রধান অ্যাডমিরাল এম শাহীন ইকবালসবার সুস্থতা নিশ্চিত করার পাশাপাশি জাহাজের প্রয়োজনীয় মেরামত শেষে নিরাপদে জাহাজটি দেশে ফিরিয়ে আনার জন্য নৌপ্রধান জাহাজের প্রতিটি সদস্যের অসীম সাহস, উদ্যম এবং পেশাদারত্বের ভূয়সী প্রশংসা করেন।  

নৌপ্রধান বলেন, সফলভাবে দেশে প্রত্যাবর্তনের মাধ্যমে প্রমাণিত হলো বাংলাদেশ নৌবাহিনী তার ওপর ন্যস্ত যেকোনো দায়িত্ব পালনের চ্যালেঞ্জ পেশাদারত্বের সঙ্গে মোকাবেলা করতে সক্ষম। এ ছাড়া বিশ্বব্য্যপী করোনা ভাইরাস মহামারী পরিস্থিতিতে জাহাজের নৌসদস্যরা করোনা থেকে মুক্ত থাকায় সবার প্রতি আন্তরিক ধন্যবাদ জানান।

অনুষ্ঠানে জানানো হয়, আন্তর্জাতিক জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে অংশ নিতে জাহাজটি ২০১৭ সালের ১ লেবানন গমন করে। যোগদানের পর থেকে জাহাজটি লেবানিজ জলসীমায় মেরিটাইম ইন্টারডিকশন অপারেশন, সন্দেহজনক জাহাজ ও এয়ারক্রাফটের ওপর নজরদারি, দুর্ঘটনা কবলিত জাহাজে উদ্ধার তৎপরতা এবং লেবানিজ নৌবাহিনীর সদস্যদের প্রশিক্ষণ দিয়ে আসছিল। লেবাননে অবস্থানকালে বিগত তিন বছরে জাহাজটিতে পর্যায়ক্রমে বাংলাদেশ নৌবাহিনীর ৩৩০ জন সদস্য অত্যন্ত দক্ষতা, পেশাদারত্ব, আন্তরিকতা ও শৃঙ্খলার সঙ্গে অর্পিত দায়িত্ব পালন করেন।  

জাহাজটি আন্তর্জাতিক মেরিটাইম টাস্কফোর্সের অধীন উন্নত বিশ্বের অন্যান্য দেশের জাহাজের সঙ্গে নিয়মিত শান্তিরক্ষা টহল ও বিভিন্ন কার্যক্রমে সক্রিয়ভাবে অংশ নিয়েছে। এতে অন্যান্য দেশের নৌবাহিনী সম্পর্কে ধারণা লাভের পাশাপাশি ওইসব জাহাজের সঙ্গে সমুদ্র মহড়ায় অংশগ্রহণের মাধ্যমে জাহাজের কর্মকর্তা ও নাবিকদের পেশাগত দক্ষতা বেড়েছে। তা ছাড়া জাহাজটি ভূমধ্যসাগরে সাফল্যের সঙ্গে আন্তর্জাতিক দায়িত্ব পালনের মাধ্যমে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করেছে।  

বাংলাদেশ সময়: ১৭৫৭ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৫, ২০২০
এআর/টিসি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।