ঢাকা, শুক্রবার, ১২ আশ্বিন ১৪৩১, ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ২৩ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

জাতিকে কলঙ্কমুক্ত করার শপথ মুক্তিযোদ্ধা ও সন্তানদের 

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮৪৩ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৪, ২০২০
জাতিকে কলঙ্কমুক্ত করার শপথ মুক্তিযোদ্ধা ও সন্তানদের  শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবসে মুক্তিযোদ্ধা ও তাদের সন্তানদের আয়োজন। ছবি: উজ্জ্বল ধর

চট্টগ্রাম: সাদা হরফে মুক্তিযোদ্ধা সন্তানদের বুকে লেখা ‘ভাস্কর্য বাংলার ঐতিহ্য’, ‘মুক্তিযুদ্ধ আমাদের গর্বিত অহংকার’। হলুদ হরফে লেখা ‘আমি দাম দিয়ে কিনেছি বাংলা’, ‘মৌলবাদের আস্তানা জ্বালিয়ে দাও পুড়িয়ে দাও’।

মুক্তিযোদ্ধা সন্তান জয়নুদ্দিন জয়, আসাদুজ্জামান জিসান, মনি আহমেদ বিজয়, কাওসার চৌধুরী, জুনায়েন আহমেদ, মাসুম করিম, রাব্বি হোসেন জিসান, মো. হৃদয় বুকে পিঠে স্লোগান লিখে উপস্থিত সবার মননে নাড়া দেন।  

শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবসে আরও একবার জাতিকে পুরোপুরি কলঙ্কমুক্ত করার এবং যেকোনো মূল্যে দেশ থেকে স্বাধীনতাবিরোধী ও উগ্র মৌলবাদীদের প্রতিহত করার শপথ নিয়েছেন বীর মুক্তিযোদ্ধা ও তাদের সন্তানরা।

 
মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সন্তান কমান্ড চট্টগ্রাম মহানগর কমিটি সোমবার (১৪ ডিসেম্বর) নগরের ফয়’স  লেক বধ্যভূমিতে ব্যতিক্রমী এ কর্মসূচির আয়োজন করে।  

সন্তান কমান্ড মহানগর আহ্বায়ক শাহেদ মুরাদ সাকুর সভাপতিত্বে ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগী অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ ওমর ফারুক রাসেলের পরিচালনায় অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ চট্টগ্রাম মহানগর ইউনিট কমান্ডার মোজাফফর আহমদ। বিশেষ অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ চট্টগ্রাম মহানগর ডেপুটি কমান্ডার মো. শহীদুল হক চৌধুরী ছৈয়দ, সহকারী কমান্ডার সাধন চন্দ্র বিশ্বাস, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সাবেক সভাপতি অধ্যাপক ড. বেণু কুমার দে, পদার্থবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক ড. শ্যামল রঞ্জন চক্রবর্তী, কম্পিউটার সায়ন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক ড. খায়রুল ইসলাম।  
প্রধান বক্তা ছিলেন শহীদ মুক্তিযোদ্ধার সন্তান ও নগর যুবলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক  ফরিদ মাহমুদ।  

বুকে পিঠে স্লোগান লিখে শপথ নেন মুক্তিযোদ্ধা সন্তানরা।  ছবি: উজ্জ্বল ধরমোজাফফর আহমদ বলেন, মুক্তিযোদ্ধাদের রক্তে অর্জিত বাংলা কারো দানে পাওয়া নয়। কোটি প্রাণের বিনিময়ে পেয়েছি এ দেশ। দেশটি ছোট্ট হলেও প্রতি বর্গকিলোমিটার অর্জিত হয়েছে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের রক্তের বিনিময়ে। পাকিস্তানি হানাদাররা ১৯৭১ সালে চালিয়েছিল নারকীয় ও শতাব্দীর ঘৃণ্যতম হত্যাযজ্ঞ। বাঙালির চূড়ান্ত বিজয়ের মাত্র দুই দিন আগে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী ও তাদের দেশীয় দোসর রাজাকার, আলবদর, আলশামসের সদস্যরা জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানদের নিধনে মাঠে নামে। তারা বেছে বেছে অসংখ্য শিক্ষাবিদ, গবেষক, চিকিৎসক, প্রকৌশলী, সাংবাদিক, কবি ও সাহিত্যিকদের হত্যা করে।  

তিনি যুদ্ধাপরাধী জামায়াত ও মৌলবাদীচক্রের ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানান।

ফরিদ মাহমুদ বলেন, স্বাধীনতাবিরোধী চক্র বুঝতে পেরেছিল, তাদের পরাজয় অনিবার্য। তাই জাতিকে মেধাহীন করতে বরেণ্য ব্যক্তিদের বাসা এবং কর্মস্থল থেকে রাতের অন্ধকারে চোখ বেঁধে ধরে নিয়ে হত্যা করে। তারা দেশের নানা জায়গায় হত্যাযজ্ঞ চালালেও মূল হত্যাকাণ্ড ঘটায় রাজধানীর রায়ের বাজারের বধ্যভূমিতে।  

অসাম্প্রদায়িক ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনাভিত্তিক সমাজ গড়তে পারলেই শহীদ বুদ্ধিজীবীদের আত্মত্যাগ সার্থক হবে।  

বক্তব্য দেন মুক্তিযোদ্ধা আবদুল লতিফ, মোহাম্মদ ইউসুফ, সেলিম উল্লাহ, কুতুবউদ্দিন চৌধুরী, মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সন্তান কমান্ড কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য মো. সরওয়ার আলম চৌধুরী মনি, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা ইনস্টিটিউটের সহযোগী অধ্যাপক তাসলিমা আক্তার বাঁধন, রসায়ন বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মরিয়ম ইসলাম লিজা, মহানগর যুব লীগের সদস্য শেখ নাছির আহমেদ, দেলোয়ার হোসেন দেলু, মহানগর স্বেচ্ছাসেবক লীগ সদস্য মনোয়ার জাহান মনি, বীর মুক্তিযোদ্ধা সন্তান কাজী মুহাম্মাদ রাজিশ ইমরান, কামরুল হুদা পাভেল, রিপন চৌধুরী, সৈয়দ মইনুল আলম সৌরভ, কামাল হোসেন টিটু, মাসুদ করিম, নাসির খান,কৃষ্ণ চৌধুরী, বিবি হাসনাত প্রমুখ।  

বাংলাদেশ সময়: ১৮৩৫ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৪, ২০২০
এআর/টিসি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।