চট্টগ্রাম: প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারী ও আওয়ামী লীগের দফতর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া বলেছেন, নৌকা প্রতীকের প্রার্থীকে জয়ী করলে সমৃদ্ধ, আধুনিক নগরী হবে চট্টগ্রাম। চট্টগ্রামে শেখ হাসিনা অনেক প্রকল্প বাস্তবায়ন করছেন।
মেয়র প্রার্থী রেজাউল করিম চৌধুরী ভূঁইফোড় কিংবা হাইব্রিড নন।
শনিবার (২৩ জানুয়ারি) বিকেলে আগ্রাবাদের ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারের বঙ্গবন্ধু সম্মেলন কক্ষে মেয়র প্রার্থী রেজাউল করিম চৌধুরীর সঙ্গে ব্যবসায়ীদের মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, চট্টগ্রাম থেকে বঙ্গবন্ধুর নির্দেশে এ রাষ্ট্রের স্বাধীনতা ঘোষিত হয়েছিল। বঙ্গবন্ধু কন্যা চট্টগ্রামের স্কাই লাইন চেঞ্জ করে দিয়েছেন। এ শহরের মর্যাদা রাজধানীর চেয়ে কোনো অংশে কম নয়। চট্টগ্রামে বঙ্গবন্ধু কন্যার অনেক ব্যক্তিগত স্মৃতি আছে। চট্টগ্রামের হাটহাজারীর মরিচের চারা গণভবনের আঙিনায় লাগিয়েছেন।
চসিক নির্বাচনে সরকার পরিবর্তন হবে না। কিন্তু রেজাউল ভাইকে জয়ী করতে পারলে শেখ হাসিনার কাছে আমাদের মুখ উজ্জ্বল হবে। প্রধানমন্ত্রী চট্টগ্রাম বন্দরের উন্নয়ন করছেন, বে টার্মিনাল করছেন। বঙ্গবন্ধু শিল্পনগরে এ পর্যন্ত ২৩ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ এসেছে। ১৫ লাখ মানুষের কর্মসংস্থান হবে।
'সম্মিলিত ব্যবসায়ী পরিষদ চট্টগ্রাম' ব্যানারে আয়োজিত সভায় সভাপতিত্ব করেন চিটাগাং চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (সিসিসিআই) সভাপতি, পরিষদের আহ্বায়ক মাহবুবুল আলম।
মেয়র প্রার্থী রেজাউল করিম চৌধুরী বলেন, চট্টগ্রাম ব্যবসার প্রাণ কেন্দ্র ছিল উপনিবেশিক আমলে। সেই গৌরব আমরা হারিয়েছি। এ চট্টগ্রাম সমৃদ্ধ করলে সমগ্র দেশ সমৃদ্ধ হবে। মহাত্মা গান্ধি বলেছিলেন, চট্টগ্রাম সর্বাগ্রে। জননেত্রী শেখ হাসিনা চট্টগ্রামের প্রতি আন্তরিক। আমরা যদি এক হতে পারি চট্টগ্রামকে পেছনে তাকাতে হবে না৷ পরিকল্পিতভাবে এ চট্টগ্রামকে গড়ে তুলতে হবে। সব শ্রেণি পেশার মানুষকে সমৃদ্ধির জায়গায় নিয়ে আসতে চাই। সবার পরামর্শ প্রয়োজন আছে। সবার মেধাকে কাজে লাগাতে চাই টেকসই উন্নয়নের জন্য।
নগর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মাহতাব উদ্দিন চৌধুরী বলেন, বঙ্গবন্ধু কন্যার নেতৃত্বে ব্যবসায়ীদের পরিশ্রম, মেধায় দেশ এগিয়ে যাচ্ছে। দেশপ্রেমিক মুক্তিযোদ্ধা রেজাউলের জন্য শহীদ পরিবারের সন্তান হিসেবে আমি ভোট ভিক্ষা করছি।
নগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন ব্যবসায়ীদের উদ্দেশে বলেন, চট্টগ্রাম এগিয়ে যাওয়া মানে বাংলাদেশ এগিয়ে যাওয়া৷ চট্টগ্রাম অনেকাংশে ঢাকার চেয়েও গুরুত্বপূর্ণ। আমার নগর এ মানসিকতা লালন করলে সবার প্রত্যাশা পূরণ সময়ের ব্যাপার মাত্র।
তিনি বলেন, আপনারা সমাজের ভালো জায়গায় অবস্থান করছেন, নিজস্ব আঙিনা আছে। নাগরিক হিসেবে সঠিক দায়িত্ব পালন করলে মেয়রের কাছ থেকে সেবা পাবেন। শহরের আদিবাসী হিসেবে এ নগরের প্রতি আমার আলাদা টান আছে। প্রধানমন্ত্রী আপ্রাণ চেষ্টা করছেন এ শহরের উন্নয়নের জন্য। সেবা সংস্থাগুলোর সমন্বয় নিশ্চিত হলে পরিকল্পিত, টেকসই উন্নয়নের সুফল মিলবে।
চেম্বারের সাবেক সভাপতি এসএম আবুল কালাম বলেন, রেজাউল করিমকে জয়ী করতে হবে চট্টগ্রামের মানুষের দাবি আদায়ের জন্য।
শেখ মোহাম্মদ তানভীরের সঞ্চালনায় সভায় বক্তব্য দেন চেম্বারের পরিচালক এসএম আবু তৈয়ব, অহীদ সিরাজ চৌধুরী স্বপন, সাবেক পরিচালক মাহফুজুল হক শাহ, চট্টগ্রাম উইম্যান চেম্বারের আবিদা মোস্তফা, সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের যুগ্ম সম্পাদক কাজী মাহমুদ ইমাস বিলু, দোকান মালিক সমিতির সভাপতি সালামত আলী, সালেহ আমদ সোলেমান, নেছার আহমদ, তাসকিন আহমেদ, মোস্তাক আহমদ চৌধুরী, মো. শাহাবউদ্দিন, মুহাম্মদ জামাল হোসেন, আনোয়ার হোসেন খান, চৌধুরী জাফর আহমদ, রেখা আলম চৌধুরী প্রমুখ।
ব্যবসায়ী নেতারা চসিকের ট্রেড লাইসেন্স ফি কমানো ও ডিজিটাল করা এবং আয়কর আলাদা আদায়ের আবাসিকে গ্যাস সংযোগ চালু, হকারদের শৃঙ্খলায় আনা, বিলবোর্ড ও যানজটমুক্ত শহর, প্রতিটি স্কুলে ইংলিশ স্পিকিং কোর্স চালু, দোকান ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে সাপ্তাহিক ছুটি একদিন করা, ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে ১৩ টনের খড়গ তুলে দেওয়া, অবহেলিত চাক্তাই-খাতুনগঞ্জের অবকাঠামো উন্নয়ন, ব্যবসাবান্ধব নগর গড়ে তোলা, স্বর্ণকারদের হয়রানি বন্ধে আইন সংশোধন, আমদানি পর্যায়ে সারাদেশে একই শুল্কহার নির্ধারণ, শাহ আমানত বিমানবন্দরের আধুনিকায়ন দাবির পাশাপাশি রেজাউল করিম চৌধুরীকে পূর্ণ সমর্থন জানান।
খাতুনগঞ্জ ট্রেড অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ ছগীর আহমদ চট্টগ্রাম সিটির মেয়রকে পূর্ণ মর্যাদা দেওয়ার জন্য প্রধানমন্ত্রীর প্রতি আহ্বান জানান।
বাংলাদেশ সময়: ১৮১২ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৩, ২০২১
এআর/এমআর/টিসি