ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ৫ বৈশাখ ১৪৩১, ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ০৮ শাওয়াল ১৪৪৫

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

চমেক হাসপাতাল 

নয় মাসেও চালু হয়নি ক্যাজুয়াল্টি ও ফিজিক্যাল মেডিসিনের অন্তর্বিভাগ

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩১৭ ঘণ্টা, মার্চ ১, ২০২১
নয় মাসেও চালু হয়নি ক্যাজুয়াল্টি ও ফিজিক্যাল মেডিসিনের অন্তর্বিভাগ ফাইল ছবি।

চট্টগ্রাম: চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে করোনাভাইরাস আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসার জন্য নিচতলায় ক্যাজুয়াল্টি, ফিজিক্যাল মেডিসিন অ্যান্ড রিহ্যাবিলিটেশন বিভাগ সরিয়ে সেখানেই করোনা ব্লক তৈরি করা হয় গত বছরের মে মাসে।  

এর মধ্যে নয় মাস পেরিয়ে গেলেও এখনো চালু হয়নি ক্যাজুয়াল্টি, ফিজিক্যাল মেডিসিন অ্যান্ড রিহ্যাবিলিটেশন এর অন্তর্বিভাগের সেবা।

ফলে এ সংক্রান্ত জটিলতায় ভোগা রোগীরা অন্তর্বিভাগের চিকিৎসা সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। পাশাপাশি বৃহত্তর চট্টগ্রামের মানুষকে ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে।
এর বাইরে বিভাগ দুটির অধিকাংশ চিকিৎসকের বসার সুযোগও নেই।  

চমেক হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, পুরাতন (আগের জায়গায়) ফিজিক্যাল মেডিসিন অ্যান্ড রিহ্যাবিলিটেশন বিভাগে ২০ শয্যা ও ক্যাজুয়াল্টি বিভাগে ২৫ শয্যায় রোগী ভর্তি রেখে চিকিৎসা দেওয়া হতো। ফিজিক্যাল মেডিসিন অ্যান্ড রিহ্যাবিলিটেশন বিভাগে ৬-৭ জন এবং ক্যাজুয়াল্টি বিভাগে ৫-৬ জন নিয়মিত চিকিৎসক আছেন। এর বাইরে প্রতিটি বিভাগে এমএস বা এমডিসহ বিভিন্ন কোর্সে অধ্যয়নরত উল্লেখযোগ্য সংখ্যক অনারারি চিকিৎসক দায়িত্ব পালন করেন। তারাও রোগীদের চিকিৎসা সেবা দেন।

ফিজিক্যাল মেডিসিন অ্যান্ড রিহ্যাবিলিটেশন এর বহির্বিভাগে চিকিৎসা সেবা পেলেও অন্তর্বিভাগে (ইনডোর) ভর্তি রেখে চিকিৎসা সেবা দেওয়ার সুযোগ নেই। বিভাগ দুটির অধিকাংশ চিকিৎসকের বসার সুযোগও নেই। তারা কলেজ ও হাসপাতালে ছড়িয়ে ছিটিয়ে অফিস করছেন।  

চমেক হাসপাতালের প্রশাসনিক বিভাগ সূত্রে জানা যায়, ফিজিক্যাল মেডিসিন অ্যান্ড রিহ্যাবিলিটেশন বিভাগকে নতুন ভবনের (এনসিলারি বিল্ডিং) নবম তলায় স্থানান্তর করা হয়েছে। কিন্তু নতুন ভবনে পর্যাপ্ত জায়গা বা কক্ষ কোনটাই পায়নি। যে জায়গা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে তার কাজ ৯ মাসেও শেষ করা যায়নি। ফলে রোগী ভর্তি রেখে চিকিৎসা দেওয়ারও সুযোগ হয়নি ফিজিক্যাল মেডিসিন অ্যান্ড রিহ্যাবিলিটেশন বিভাগে।

সরেজমিন দেখা যায়, বহির্বিভাগে চিকিৎসা নিতে আসা অনেক রোগী টিকিট কেটে লাইনে দাঁড়িয়ে আছেন। টিকিট না কেটে চিকিৎসকের খোঁজখবর নিচ্ছেন আরও অনেকে। ডেন্টাল বিভাগের ভিতরে এক পাশে একটি রুমে বহির্বিভাগে সেবা দিচ্ছেন ফিজিক্যাল মেডিসিন অ্যান্ড রিহ্যাবিলিটেশন বিভাগের একজন চিকিৎসক। কক্ষের সামনেই রোগীর দীর্ঘ সারি। অন্তর্বিভাগের রোগীদের সেবা দিতে হিমশিম খাচ্ছেন চিকিৎসক।  

সেবা নিতে আসা কয়েকজনের সঙ্গে কথা হলে তারা জানান, ফিজিক্যাল মেডিসিন বিভাগে আর আগের মতো চিকিৎসাসেবা পাওয়া যায় না। ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষায় থেকে চিকিৎসকের দেখা পাওয়া যায়। বাধ্য হয়ে সেবা না নিয়েই অনেক সময় ফিরে যেতে হয়। আগে অন্তর্বিভাগে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা সেবা পাওয়া যেতো। সেই সেবা থেকে দীর্ঘদিন ধরে বঞ্চিত হচ্ছি।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ফিজিক্যাল মেডিসিন অ্যান্ড রিহ্যাবিলিটেশন বিভাগের একাধিক চিকিৎসক বাংলানিউজকে জানান, ‘দীর্ঘদিন ধরে এই ওয়ার্ড চালু হচ্ছে না। আমাদের বসার নির্দিষ্ট কোনও স্থান হচ্ছে না। বিভাগের সবাইকে ছড়িয়ে ছিটিয়ে অফিস করতে হচ্ছে’।  

চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ (চমেক) হাসপাতালের উপ-পরিচালক ডা. আফতাবুল ইসলাম বাংলানিউজকে বলেন, ক্যাজুয়াল্টির রোগীদের আপাতত সার্জারি বিভাগে ভর্তি দেওয়া হচ্ছে। এছাড়া ফিজিক্যাল মেডিসিন অ্যান্ড রিহ্যাবিলিটেশন বিভাগকে এনসিলারি বিল্ডিংয়ে স্থানান্তর করা হয়েছে। সেখানে কাজ চলছে। আপাতত ফিজিক্যাল মেডিসিন অ্যান্ড রিহ্যাবিলিটেশন বিভাগে কোনও রোগী ভর্তি করা হচ্ছে না। করোনার টিকা প্রদান কার্যক্রম চালু করাসহ অফিসের নানান কাজের কারণে এতদিন বিভাগটি চালু করা যায়নি।

ফিজিক্যাল মেডিসিন বিভাগের চিকিৎসকদের বসার সুযোগ হচ্ছে না এমন বক্তব্যের জবাবে ডা. আফতাবুল ইসলাম বলেন, সেটা সমাধানের চেষ্টা চলছে। আগামী সপ্তাহের মধ্যে চিকিৎসকদের বসার সুযোগ করে দেওয়া হবে।  

বাংলাদেশ সময়: ১৩১৩ ঘণ্টা, মার্চ ০১, ২০২১
এসি/টিসি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।