চট্টগ্রাম: ২০২১-২২ চা নিলামবর্ষের প্রথম নিলাম চট্টগ্রাম কেন্দ্রে অনুষ্ঠিত হবে আগামী ৩ মে। ৫ মে শ্রীমঙ্গল চা নিলাম কেন্দ্রের প্রথম নিলাম হবে।
বাংলাদেশ চা বোর্ডের চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল মো. জহিরুল ইসলামের সভাপতিত্বে রোববার (১১ এপ্রিল) জুম এপ্লিকেশনের মাধ্যমে অনুষ্ঠিত টি সেলস কো-অর্ডিনেশন কমিটির সভায় এমন সিদ্ধান্ত হয়েছে।
সভায় বোর্ডের চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল মো. জহিরুল ইসলাম করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধে গতবারের মতো এবারও যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি মেনে বেশ কিছু স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করে চা নিলাম কার্যক্রম পরিচালনার জন্য টিটিএবি ও টিপিটিএবিকে নির্দেশনা দেন।
এর মধ্যে রয়েছে- নিলাম কেন্দ্র, ব্রোকার হাউস এবং ওয়্যারহাউসে হাত ধোয়ার জন্য সাবান বা স্যানিটাইজার, মাস্ক ও হ্যান্ড গ্লাভসের ব্যবহার নিশ্চিত করাসহ সরকারের জারি করা সব নির্দেশনা ও স্বাস্থ্যবিধি যথাযথভাবে অনুসরণ করা। সবাই জীবাণুমুক্ত হয়ে নিলাম কেন্দ্রে ঢোকা। নিলাম কেন্দ্র নিলাম শুরুর আগে ও পরে জীবাণুনাশক স্প্রের মাধ্যমে পরিশোধন করা। নিলাম কেন্দ্রে সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে ন্যূনতম ৭ ফুট পর পর বসার ব্যবস্থা করা, বিদ্যমান নিলাম কেন্দ্রে সবার জন্য জায়গা সংকুলান না হলে কোনো বড় হলরুমে নিলাম কেন্দ্র স্থানান্তর করা। নিলাম চলাকালে নিলাম কেন্দ্রে শুধু অপরিহার্য জনবলের উপস্থিতি নিশ্চিত করা।
তিনি দ্রুত অনলাইন চা নিলাম সিস্টেম পরিপূর্ণরূপে চালুর বিষয়েও নির্দেশনা দিয়ে বলেন, বর্তমানে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় চা বিপণন কার্যক্রম অব্যাহত রাখতে ই-অকশনের বিকল্প নেই।
গত ১৫ মার্চ চট্টগ্রাম চা নিলাম কেন্দ্রের ২০২০-২১ নিলামবর্ষের সর্বশেষ নিলামটির একাংশ অনলাইন চা নিলাম সিস্টেমের মাধ্যমে চা বোর্ডের সদস্য (অর্থ ও বাণিজ্য) ড. নাজনীন কাউসার চৌধুরীর উপস্থিতিতে পরীক্ষামূলকভাবে পরিচালিত হয়েছে। ২০২০-২১ চা নিলামবর্ষে চট্টগ্রাম চা নিলাম কেন্দ্রে ৪২টি এবং শ্রীমঙ্গলে ২০টি নিলাম অনুষ্ঠিত হয়েছে।
সভায় চা রফতানির ওপর গুরুত্বারোপ করে রপ্তানিকারকগণকে বোর্ডের চেয়ারম্যান বলেন, আন্তর্জাতিক বাজারের চাহিদা ও ট্রেন্ড বিবেচনায় এনে গুণগতমানসম্পন্ন ও বৈচিত্র্যপূর্ণ চা উৎপাদন করতে হবে এবং উন্নত, আকর্ষণীয় ও আন্তর্জাতিক মানের চায়ের প্যাকেজিং ব্যবহার করতে হবে।
এ বিষয়ে বোর্ডের সদস্য (অর্থ ও বাণিজ্য) ড. নাজনীন কাউসার চৌধুরী বলেন, চা রফতানি বেগবান করতে চা বোর্ড সম্প্রতি নানা উদ্যোগ নিয়েছে। চা ক্রয়ের ১৮০ দিনের মধ্যে চা রফতানি করার যে বাধ্যবাধকতা ছিল, তা জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের সঙ্গে পত্রালাপের মাধ্যমে শিথিল করা হয়েছে। চা রফতানিকারকগণকে নগদ ভর্তুকি ও প্রণোদনা দেওয়ার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। আন্তর্জাতিক বাজারের চাহিদার সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে বাংলাদেশি চায়ের গুণগতমান বজায় রাখার জন্য উৎপাদক ও রফতানিকারকদের প্রয়োজনীয় দিকনির্দেশনা দেওয়া হচ্ছে এবং বিষয়টি চা বোর্ড থেকে নিয়মিত মনিটরিং করা হচ্ছে।
সভায় অংশ নেন বাংলাদেশ চা বোর্ডের সদস্য (গবেষণা ও উন্নয়ন) মোহাম্মদ নুরুল আলম চৌধুরী, চা বোর্ডের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ, বাংলাদেশ টি অ্যাসোসিয়েশনের চেয়ারম্যান শাহ আলম, টি ট্রেডার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (টিটিএবি) চেয়ারম্যান শাহ মাইনুদ্দিন হাসান, টি প্লান্টার্স ও ট্রেডার্স অ্যাসোসিয়েশনের (টিপিটিএবি) সভাপতি মেসবাহুর রহমান, বাংলাদেশ স্মল টি গার্ডেন ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি আমিরুল হক খোকন, বাংলাদেশ বটলিফ ফ্যাক্টরি ওনার্স অ্যাসোসিয়শনের সাধারণ সম্পাদক মোশারফ হোসেন, ডানকান ব্রাদার্স লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ইমরান আহমেদ, জেমস ফিনলে গ্রুপের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা এসএএ মাসরুর, হালদা ভ্যালি টি এস্টেট লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক নাদের খান, কাজী অ্যান্ড কাজী টি এস্টেট লিমিটেডের শোয়াইব আহমেদ, ন্যাশনাল ব্রোকার্স লিমিটেডের চেয়ারম্যান এম সাইফুল ইসলাম, প্রগ্রেসিভ ব্রোকার্সের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আলতামাস হাসান প্রমুখ।
বাংলাদেশ সময়: ২১২৭ ঘণ্টা, এপ্রিল ১২, ২০২১
এআর/টিসি