ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

টিম চিটাগং: চায়ের আড্ডা থেকে তরুণদের আস্থার ঠিকানা

নিউজ ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১২৩৫ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৯, ২০২১
টিম চিটাগং: চায়ের আড্ডা থেকে তরুণদের আস্থার ঠিকানা টিম চিটাগংয়ের অ্যাকসেস টু ফিউচার প্রোগ্রামে অংশগ্রহণকারীরা।

চট্টগ্রাম: চট্টগ্রামের তরুণদের দক্ষতা উন্নয়ন, দলগতভাবে সুবিধাবঞ্চিতদের জীবনমান উন্নয়ন এবং একইসঙ্গে চট্টগ্রামকে বিশ্বমঞ্চে তুলে ধরার লক্ষ্যে ২০১৫ সালের ২৫ এপ্রিল যাত্রা শুরু করেছিলো টিম চিটাগং।  

নানা কার্যক্রম, সাফল্যকে সঙ্গী করে ছয় বছরে পদার্পণ করলো এ সংগঠনটি।

চায়ের আড্ডা থেকে শুরু হওয়া সংগঠনটি বিগত বছরগুলোয় নিজেকে পরিণত করেছে চট্টগ্রামের তরুণদের আস্থার ঠিকানায়।

২০১৫ সালে এক আড্ডা থেকে টিম চিটাগংয়ের প্রতিষ্ঠাতা ইমতিয়াজ উদ্দীন জিহাদ, সহ-প্রতিষ্ঠাতা আহমেদ সাব্বির, আবদুল্লা কায়সার, জহির রায়হানসহ আরো কয়েকজন স্বপ্নবাজ তরুণ মিলে তাদের স্বপ্ন ও পরিকল্পনা বাস্তবায়নে ঝাঁপিয়ে পড়েন।

তাদের চিন্তা ছিলো- কিভাবে চট্টগ্রাম শহরের তরুণদের  আরো দক্ষ ও সুনাগরিক হিসেবে গড়ে তুলতে সাহায্য করা যায়, বিশ্বমঞ্চে প্রতিনিধিত্ব করতে পারবে এমন ব্যক্তিত্ব গড়ে তোলা যায়। এই প্রতিযোগিতামূলক বিশ্বে এ শহরের তরুণরা যাতে নিজের অবস্থানকে টিকিয়ে রাখতে পারে, সে লক্ষ্যেই মূলত এই উদ্যোগ।

শুরুর পথটি সহজ না হলেও স্বল্প সময়ে টিম চিটাগাং তরুণদের কাছে জনপ্রিয়তা পায়। শুরুর দিকে টিম চিটাগাং দক্ষতা উন্নয়ন নিয়ে ওয়ার্কশপসহ বিভিন্ন কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে তরুণদের নিজ নিজ দক্ষতা উন্নয়নে সাহায্য করেছে। তারই প্রেক্ষিতে এই প্রতিষ্ঠানের অনেক তরুণ নিজেদের দক্ষতাকে আরো পরিপক্ব করে বিভিন্নভাবে দেশের সেবা করে যাচ্ছে। শূন্য থেকে বর্তমানে এ সংগঠটির সদস্য সংখ্যা ৪ শতাধিক। এখানে প্রত্যেক সদস্যকে ক্যাপ্টেন হিসেবে ডাকা হয়।

টিম চিটাগং-এর বেশ কিছু প্রোগ্রাম রয়েছে, যেমন একটি প্রোগ্রামের নাম ‘স্কুল অব ফোর এস’, এই প্রোগ্রামটি ডিজাইন করা হয়েছে ৬ষ্ঠ থেকে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত পড়ুয়া ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য। এ প্রোগ্রামের মাধ্যমে তাদের দেশের বাইরে পড়ালেখার সাধারণ ধারণা দেওয়া থেকে শুরু করে কম্পিউটার প্রশিক্ষণসহ বিভিন্ন সফট স্কিলে দক্ষ করে তোলা হয়।  

‘অ্যাকসেস টু ফিউচার’ প্রোগ্রামের মাধ্যমে তরুণদের কর্মজীবনে প্রবেশের ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। এ প্রোগ্রামে দেশের বিভিন্ন ক্ষেত্রে সফল ব্যক্তিত্বরা দিকনির্দেশনামূলক বক্তব্য ও পরামর্শ দিয়ে থাকেন। এছাড়া ‘ব্লাড ফর লাইফ’ ‘ঈদ ফর অল’ এসব প্রোগ্রামের মাধ্যমে ক্যাপ্টেনদের মাঝে সামাজিক দায়বদ্ধতা ও মানবিকতাবোধ গড়ে তোলা হয়।  

এ সংগঠনের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ প্রোগ্রাম হলো ‘প্রজেক্ট স্বাবলম্বীকরণ’। এর মাধ্যমে অসচ্ছল পরিবাকে স্বাবলম্বী করে তুলতে উপার্জনের ব্যবস্থা, যেমন রিক্সা, সেলাই মেশিন প্রদান বা ছোট দোকান গড়ে দেওয়া হয় এবং পরবর্তী দুই বছর পরিবারগুলোকে সংগঠনের তত্ত্বাবধানে রাখা হয়, যাতে এর মাঝে তাদের কোনো সমস্যায় সাহায্য করা যায়।

সংগঠনটির স্বপ্নদ্রষ্টা, সভাপতি ইমতিয়াজ উদ্দীন জিহাদ বলেন, আমরা কতটুকু সফল তা এখনো ভেবে দেখার সময় হয়নি। তবে আমরা মনে করি, যে লক্ষ্যে আমাদের যাত্রা তাতে কিছুটা হলেও স্বার্থকতা অর্জন করতে পেরেছি গত ৫ বছরে। আমাদের ক্যাপ্টেনদের মধ্যে গ্রাজুয়েশন শেষ করেছে এমন একজনও আজ বেকার নেই। প্রত্যেকে ভালো ভালো প্রতিষ্ঠানে কাজ করছে। এই কঠিন চাকরির বাজারে এটাই আমাদের স্বার্থকতা।

 ‘এছাড়া আমরা তিনটি পরিবারকে ৩টি রিক্সা দিয়েছিলাম এবং পরবর্তী এক বছর নিজেদের তত্ত্বাবধানে রেখে বিভিন্ন সমস্যায় সাহায্য করেছি। পরিবারগুলো এখন স্বচ্ছল জীবনযাপন করছে, এখানেই আমাদের সাফল্য’ বলেন তিনি।

ইমতিয়াজ উদ্দীন জিহাদ আরো বলেন, আমরা চট্টগ্রামের তরুণদের নিয়ে কাজ করছি। আশা করি ভবিষ্যতে আমাদের এ কাজ পুরো বাংলাদেশে ছড়িয়ে পড়বে। আমাদের স্বপ্ন, বাংলাদেশে অদক্ষ তরুণের সংখ্যা শূন্যে নেমে আসবে এবং একটি স্বাবলম্বী বাংলাদেশ তৈরি হবে।

বাংলাদেশ সময়: ১২৩০ ঘণ্টা, মার্চ ২৯, ২০২১
এসি/টিসি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
welcome-ad