চট্টগ্রাম: নামের মিল না থাকার পরও কুলসুম আক্তার কুলসুমীর বদলে মিনু কারাগারে থাকার ঘটনায় দায়ের করা মামলায় জড়িত মো. নুর আলম কাওয়াল (৪৮) ও মো. শাহাদাত হোসেনকে (৪২) গ্রেফতার করা হয়েছে। নূর আলম সীতাকুণ্ড থানার ১০ নম্বর জঙ্গল সলিমপুর কালাপানিয়া দরবেশনগরের ১ নম্বর ওয়ার্ডের ছিন্নমূল ৭ নম্বর সমাজের মৃত আলী হোসেন মোল্লার ছেলে ও শাহাদাত একই এলাকার মো. বেলায়েত হোসেনের ছেলে।
রোববার (১ আগস্ট) ভোরে সীতাকুণ্ড থানার জঙ্গল সলিমপুর কালাপানিয়া দরবেশনগর থেকে তাদের গ্রেফতার করা হয়েছে বলে বাংলানিউজকে জানান কোতোয়ালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নেজাম উদ্দিন।
ওসি নেজাম উদ্দিন বাংলানিউজকে বলেন, নামের মিল না থাকার পরও কুলসুম আক্তার কুলসুমীর বদলে মিনু কারাগারে থাকার ঘটনায় দায়ের করা মামলায় জড়িত আরও ২ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
গত ২৯ জুলাই ভোরে নগরের পতেঙ্গা এলাকা থেকে নামের মিল না থাকার পরও কুলসুম আক্তার কুলসুমীর বদলে মিনু কারাগারে থাকার ঘটনায় দায়ের করা মামলায় কুলসুমী ও সহযোগী মার্জিনা আক্তারকে গ্রেফতার করা হয়। একই দিন দুপুরে কোতোয়ালী থানায় উপপরিদর্শক (এসআই) আকাশ মাহমুদ ফরিদ বাদি হয়ে কুলসুমী ও মার্জিনা আক্তারসহ অজ্ঞাত একাধিকজনের বিরুদ্ধে মামলা করেন।
একই দিন বিকেলে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মেহনাজ রহমানের ভার্চুয়াল আদালত তাদের ২ দিনেরে রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
আদালত সূত্রে জানা যায়, নগরের রহমতগঞ্জে একটি বাসায় ২০০৬ সালের জুলাই মাসে মোবাইলে কথা বলার ঘটনাকে কেন্দ্র করে গার্মেন্ট কর্মী কোহিনূর আক্তার পারভীনকে গলাটিপে হত্যা করা হয়। এরপর রহমতগঞ্জে একটি গাছের সঙ্গে ঝুলিয়ে রাখা হয়। কোহিনূর আত্মহত্যা করেছে বলে দাবি করেন গার্মেন্ট কর্মী কুলসুম আক্তার কুলসুমী। পরে একটি অপমৃত্যু মামলা হয়। পুলিশ দুই বছর তদন্ত শেষে হত্যাকাণ্ডের প্রতিবেদন জমা দেয়।
২০১৭ সালে নভেম্বর তৎকালীন অতিরিক্ত চতুর্থ মহানগর দায়রা জজ আদালতের বিচারক মো. নুরুল ইসলাম আসামি কুলসুম আক্তার কুলসুমীকে পারভিন হত্যা মামলায় যাবজ্জীবন কারাদণ্ডসহ ৫০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও ১ বছরের কারাদণ্ডের আদেশ দেন। সাজার পরোয়ানামূলে কুলসুম আক্তার কুলসুমীর পরিবর্তে মিনু ২০১৮ সালের ১২ জুন কারাগারে যান। গত ১৮ মার্চ চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারের সিনিয়র জেল সুপার মো. শফিকুল ইসলাম খান নারী ওয়ার্ড পরিদর্শনকালে মিনু কোনো মামলার আসামি নন বলে জানান।
গত ২২ মার্চ বাংলানিউজে ‘এক নারীর সাজা খাটছেন অন্য নারী!’ শিরোনামে সংবাদ প্রকাশ হয়। এরপর বিষয়টি আদালতের নজরে আনেন হাইকোর্টের আইনজীবী মো. শিশির মনির। পরে জামিনে মুক্ত হন মিনু।
গত ২৮ জুন বায়েজিদ লিংক রোড সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত হওয়ার পর ‘অজ্ঞাত’ হিসেবে মিনুর মরদেহ দাফন করা হয়। ট্রাকচাপায় মিনু আক্তারের মৃত্যুকে অস্বাভাবিক দাবি করেন আইনজীবী গোলাম মাওলা মুরাদ।
মিনুর মৃত্যুর ঘটনায় সড়ক দুর্ঘটনা আইনে দায়ের করা মামলার তদন্ত কর্মকর্তা উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো. খোরশেদ আলম বাংলানিউজকে বলেন, সড়কের ভিডিও ফুটেজ সংগ্রহ করা হয়েছে। গাড়িটি শনাক্তের চেষ্টা চলছে। দুর্ঘটনাটি রাতের বেলায় হওয়ায় একটু সময় লাগছে।
বাংলাদেশ সময়: ১৬০৩ ঘণ্টা, আগস্ট ০১, ২০২১
এমএম/টিসি