চট্টগ্রাম: নগরে ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করে চলেছে টিনু গ্রুপের সদস্যরা। সাংবাদিক থেকে শুরু করে পুলিশ কেউই রেহাই পাননি এ গ্রুপের হামলা থেকে।
টিনুর পৃষ্ঠপোষকতায় ছিনতাই-চাঁদাবাজিতে কয়েকটি গ্রুপের নিয়ন্ত্রণে আছেন- টিনুর ছোট ভাই চকবাজার থানা ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি নুরুল আলম শিপু, চকবাজার ওয়ার্ড ছাত্রলীগের সভাপতি সাদ্দাম হোসেন ইভান, মেডিক্যাল এলাকার রবিউল ইসলাম রাজু, পুরাতন চারতলা এলাকার সানিসহ ২০ জন । তাদের বিরুদ্ধে নগরের বিভিন্ন থানায় রয়েছে একাধিক মামলা।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, টিনুর পক্ষে চকবাজার, বহদ্দারহাট, কাপাসগোলা, বাকলিয়াসহ টিনুর নিয়ন্ত্রিত এলাকায় কোচিং সেন্টার, নির্মাণাধীন ভবন, বাজার, ফুটপাত, পরিবহন খাতে চাঁদাবাজি নিয়ন্ত্রণ করে সাদ্দাম হোসেন ইভান, রবিউল হোসেন রাজু, কায়সার হামিদ এবং র্যাবের হাতে টিনুর সঙ্গে গ্রেফতার হওয়া জসিম উদ্দিন ওরফে বাইক জসিম। এদের মধ্যে অস্ত্র ভাণ্ডার নিয়ন্ত্রণে গুরু দায়িত্ব পালনের জন্য ‘সেকেন্ড ইন কমান্ড’ হিসেবে বিশেষ পরিচিতি আছে সাদ্দাম হোসেন ইভান, রিফাত ও রাজুর।
২০১৯ সালের ২২ সেপ্টেম্বর রাত ১২টায় নগরের কাপাসগোলা এলাকা থেকে টিনুকে একটি পিস্তল, ৫ রাউন্ড গুলিসহ আটক করে র্যাব। পরে তার বাসায় তল্লাশি চালিয়ে একটি শর্টগান ও ৬৭ রাউন্ড গুলি উদ্ধার করা হয়। বিভিন্ন সময় বিভিন্ন কলেজে আধিপত্য বিস্তার ও সংঘর্ষে জড়িয়েছেন নুর মোস্তফা টিনু। সংঘর্ষে পুলিশের ওপর হামলার ঘটনাও ঘটেছে। অস্ত্র আইনে মামলা করে টিনুকে নগরের পাঁচলাইশ মডেল থানায় হস্তান্তর করা হয়। ২৩ সেপ্টেম্বর টিনুকে আদালতে সোপর্দ করে পুলিশ ৭ দিনের রিমান্ড আবেদন করে। আদালত ২৬ সেপ্টেম্বর শুনানি শেষে এক দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। এর আগে ২০০৩ সালে অত্যাধুনিক একে-২২ অস্ত্রসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হাতে আটক হয়ে প্রথমবারের মতো আলোচনায় আসেন টিনু। সেই মামলায় দীর্ঘদিন কারাভোগও করেছিলেন তিনি।
এক বছর চার মাস এই মামলায় কারাগারে থাকার পর চলতি বছরের ২৩ জানুয়ারি অস্থায়ী জামিনে মুক্তি পান টিনু। সর্বশেষ ২০ জুন র্যাবের হাতে অস্ত্রসহ গ্রেফতারের মামলায় নুর মোস্তফা টিনুর জামিন বাতিল করে তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন চট্টগ্রাম মহানগর দায়রা জজ ৪র্থ আদালতের বিচারক আফরোজা জেসমিন কলি। গত ২৩ মে অস্ত্র মামলায় টিনুর জামিন বাতিল করে বিচারিক আদালতে আত্মসমর্পণের নির্দেশ দেন হাইকোর্টের আপিল বিভাগ। আর সেই নির্দেশে আত্মসমর্পণ করে পুনরায় জামিনের আবেদন করলে আদালত তা নাকচ করে টিনুকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
২০১৭ সালের ১৮ ফেব্রুয়ারি রাতে ছিনতাইয়ের অভিযোগে আটক হওয়া চকবাজার থানা ছাত্রদলের সভাপতি শিপুকে ছাড়াতে চকবাজার থানার সামনে প্রায় দু’ঘণ্টা অবরোধ করেছিল টিনুর নেতৃত্বে ছাত্রলীগ-যুবলীগের একাংশ।
>> চসিকের চকবাজার ওয়ার্ডের কাউন্সিলর পদে টিনু জয়ী
বাংলাদেশ সময়: ২০৩৪ ঘণ্টা, অক্টোবর ০৭, ২০২১
এমআই/টিসি