ঢাকা, শুক্রবার, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৮ রমজান ১৪৪৫

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

তামাকমুক্ত দেশ গড়তে প্রয়োজন শক্তিশালী তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন 

নিউজ ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯০৫ ঘণ্টা, অক্টোবর ১৬, ২০২১
তামাকমুক্ত দেশ গড়তে প্রয়োজন শক্তিশালী তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন 

চট্টগ্রাম: বাংলাদেশে প্রতিবছর ১ লক্ষ ৬১ হাজার মানুষ তামাকজনিত রোগে মারা যায়। পঙ্গুত্ব বরণ করেন আরও কয়েক লাখ মানুষ।

এখনও দেশের ৩৫ শতাংশ প্রাপ্তবয়স্ক জনগোষ্ঠী তামাক ব্যবহার করেন, যা অত্যন্ত উদ্বেগজনক। শক্তিশালী আইন প্রণয়ন ও বাস্তবায়নের মাধ্যমে তামাকের ব্যবহার নিয়ন্ত্রণ করতে না পারলে দেশ দ্রুতই তামাক মহামারির কবলে পড়বে।

সংশোধনীর মাধ্যমে বর্তমান তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনটি যুগোপযোগী করা এবং এবিষয়ে গণমাধ্যমের করণীয় সম্পর্কে তুলে ধরতে

শনিবার (১৬ অক্টোবর)  চট্টগ্রাম নগরীর একটি হোটেলে আয়োজিত এক কর্মশালা বক্তারা এ সব কথা বলেন।  

ক্যাম্পেইন ফর টোব্যাকো ফ্রি কিডস্ (সিটিএফকে) এর সহায়তায় গবেষণা ও অ্যাডভোকেসি প্রতিষ্ঠান প্রজ্ঞা (প্রগতির জন্য জ্ঞান) এবং অ্যান্টি টোব্যাকো মিডিয়া অ্যালায়েন্স (আত্মা) এ কর্মশালার আয়োজন করে।

কর্মশালায় চট্টগ্রাম বিভাগের আত্মা’র প্রতিনিধি, প্রিন্ট, ইলেক্ট্রনিক এবং অনলাইন মিডিয়ায় কর্মরত ২৪ জন সাংবাদিক অংশগ্রহণ করেন।

কর্মশালায় তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন সংশোধন বিষয়ে বেশ কিছু প্রস্তাব তুলে ধরা হয়। সেগুলো হচ্ছে, ধূমপানের জন্য নির্ধারিত স্থান বিলুপ্ত সহ সকল পাবলিক প্লেস, কর্মক্ষেত্র ও পাবলিক পরিবহনে ধূমপান নিষিদ্ধ করা, বিক্রয়স্থলে তামাকজাত দ্রব্য প্রদর্শন নিষিদ্ধ করা, তামাক কোম্পানির ‘সামাজিক দায়বদ্ধতা কর্মসূচি’ বা সিএসআর কার্যক্রম সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ করা, বিড়ি-সিগারেটের খুচরা শলাকা এবং প্যাকেটবিহীন জর্দা-গুল বিক্রয় নিষিদ্ধ করা; ই-সিগারেট এবং হিটেড টোব্যাকো প্রোডাক্টস (এইচটিপি) সহ সকল ইমার্জিং টোব্যাকো প্রোডাক্টস আমদানি, উৎপাদন ও বিক্রয় নিষিদ্ধ করা, এবং সচিত্র স্বাস্থ্য সতর্কবার্তার আকার বৃদ্ধিসহ তামাকপণ্য মোড়কজাতকরণে কঠোর বিধিনিষেধ আরোপ করা।

মূল উপস্থাপনায় বলা হয়, তামাক মৃত্যু ঘটায় এবং এটি কোভিড-১৯ সংক্রমণ সহায়ক। সম্প্রতি প্যারাগুয়ে কোভিড-১৯ সংক্রমণ ঝুঁকি থেকে জনসাধারণকে রক্ষার্থে সকল আচ্ছাদিত পাবলিক প্লেস, কর্মক্ষেত্র ও পাবলিক পরিবহনে ধূমপান শতভাগ নিষিদ্ধ করেছে। বাংলাদেশ সরকার ২০১৬ সালে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ফ্রেমওয়ার্ক কনভেনশন অন টোব্যাকো কন্ট্রোল- এফসিটিসি’র সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন সংশোধনের প্রত্যয় ব্যক্ত করলেও এ বিষয়ে কোনো দৃশ্যমান অগ্রগতি নেই।  দ্রুততম সময়ের মধ্যে বিদ্যমান তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন সংশোধন করে অধিকতর শক্তিশালী করা না গেলে ২০৪০ সালের মধ্যে তামাকমুক্ত বাংলাদেশ অর্জন কঠিন হয়ে পড়বে।

কর্মশালায় গণমাধ্যমকর্মীদের সামনে বিষয়ভিত্তিক উপস্থাপনা তুলে ধরেন প্রজ্ঞা’র তামাক নিয়ন্ত্রণ বিষয়ক প্রকল্প প্রধান হাসান শাহরিয়ার। তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন সংশোধন প্রক্রিয়ার বর্তমান অবস্থা এবং এ বিষয়ে গণমাধ্যমের ভূমিকা সম্পর্কে তুলে ধরেন সিটিএফকে’র কমিউনিকেশন ম্যানেজার সরকার শামস বিন শরীফ। আলোচক হিসেবে অংশ নেন চট্টগ্রাম আত্মা’র আহ্বায়ক দেশ টেলিভিশনের বিভাগীয় প্রতিনিধি আলমগীর সবুজ এবং আত্মা’র কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ও দৈনিক পূর্বকোণ পত্রিকার চিফ রিপোর্টার সাইফুল আলম।

উন্মুক্ত আলোচনা পর্বে কর্মশালায় অংশ নেয়া সাংবাদিকবৃন্দ তামাকের ক্ষতিকর প্রভাব এবং তামাকমুক্ত বাংলাদেশ অর্জনে বিদ্যমান আইন সংশোধনের প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরে বিষয়ভিত্তিক সংবাদ প্রকাশের প্রত্যয় ব্যক্ত করেন। সরকার দ্রুততম সময়ের মধ্যে তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন সংশোধন করবে বলেও কর্মশালায় আশাবাদ ব্যক্ত করা হয়।

বাংলাদেশ সময়: ১৮৫৬ ঘণ্টা, অক্টোবর ১৬, ২০২১
এমআই/টিসি
 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।