ঢাকা, শনিবার, ৬ বৈশাখ ১৪৩১, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

১৫ বছরেও শেষ হয়নি ছাত্রলীগ নেতা রুবেল হত্যার বিচার

মিনহাজুল ইসলাম, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১০৫৬ ঘণ্টা, অক্টোবর ১৭, ২০২১
১৫ বছরেও শেষ হয়নি ছাত্রলীগ নেতা রুবেল হত্যার বিচার এরশাদুল হাবীব রুবেল

চট্টগ্রাম: ওমরগণি এমইএস কলেজ ছাত্র সংসদের সদস্য ও কুতুবদিয়া উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি এরশাদুল হাবীব রুবেল হত্যার বিচার ১৫ বছরেও শেষ হয়নি। হত্যাকাণ্ডে জড়িতরা প্রকাশ্যে ঘুরছে, সাক্ষীদের দিচ্ছে হুমকি।

 

কক্সবাজার অতিরিক্ত জেলা জজ ১ম আদালতে চলমান মামলার সাক্ষীদের সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু না হওয়ায় বিচারিক কার্যক্রম সম্পন্ন হচ্ছে না। প্রায় ১১ বছরের বেশি সময় অতিবাহিত হলেও আদালতে কোনও সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ হয়নি।

 

গত ১৫ অক্টোবর ছিল রুবেলের ১৫তম মৃত্যুবার্ষিকী। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০১৭ সালের ৬ মে কক্সবাজারে এক অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে রুবেল হত্যা ও পরিবারের সদস্যদের ওপর নির্যাতনের কথা স্মরণ করে দোষীদের বিচার আওতায় আনার দাবি জানান।  

জানা গেছে, ২০০৬ সালের ১৫ অক্টোবর কুতুবদিয়ার বড়ঘোপ এলাকায় সম্পত্তির লোভে ও রাজনৈতিক জনপ্রিয়তায় ঈর্ষান্বিত হয়ে গুলি ও কুপিয়ে এরশাদুল হাবীব রুবেলকে হত্যা করা হয়। এ ঘটনার দুইদিন পরে ১৭ অক্টোবর মা মমতাজ সুফিয়া আক্তার প্রকাশ শেফালী ১৮ জনকে আসামি করে হত্যা মামলা দায়ের করেন।  

২০০৮ সালে কুতুবদিয়া থানা পুলিশ আদালতে ৮ জনকে আসামি করে অভিযোগপত্র জমা দেন। আদালত র শুনানি শেষে ৮ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র গ্রহণ করেন। ২০১০ সালে বিচারিক কার্যক্রম শুরু হয়।  

এদিকে ২০১৫ সালের ১৩ নভেম্বর মামলার বাদী মমতাজ সুফিয়া আক্তার প্রকাশ শেফালী মৃত্যুবরণ করেন। গত ২১ জানুয়ারি আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের আবেদনের প্রেক্ষিতে মামলার বাদীর জায়গায় স্থলাভিষিক্ত হন রুবেলের ছোট ভাই ব্যারিস্টার মো.হানিফ বিন কাশেম। মামলার পরবর্তী ধার্য তারিখে গত ১৪ ফেব্রুয়ারি কক্সবাজার অতিরিক্ত দায়রা জজ আদালতে অনুমতিপত্র জমা দিলে আসামিরা ক্ষিপ্ত হয়। আদালতের এজলাসের বাইরে এসে ব্যারিস্টার মো.হানিফ বিন কাশেমকে তারা ঘিরে ফেলে এবং মামলা পরিচালনা করা বা মামলার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট থাকলে হত্যা করে মরদেহ গুম করার হুমকি দেয়।  

একইদিন নিরাপত্তাহীনতার কারণে ব্যারিস্টার মো.হানিফ বিন কাশেম কক্সবাজার সদর থানায় সাধারণ ডায়েরি করেন। তদন্ত কর্মকর্তা গত ২০ মার্চ তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করলে থানায় মামলা হিসেবে গ্রহণ করা হয়। এই মামলায় চারজনকে আসামি করা হয়েছে। তারা হলেন- কুতুবদিয়া থানার বড়ঘোপ ইউনিয়ন ২ নম্বর ওয়ার্ড মাতবর বাড়ির এরশাদ প্রকাশ জুয়েল, জাহিদুল ইসলাম প্রকাশ ফরহাদ, মো.সৈয়দ ও আব্দুল্লাহ আল মামুন প্রকাশ সোহেল।  

এই মামলার বাদী ব্যারিস্টার মো.হানিফ বিন কাশেম বলেন, আমি মামলার বাদী হওয়ার পর থেকে আমাকে হত্যা করে মরদেহ গুম করার হুমকি দিচ্ছে আসামিরা। সাক্ষীদেরও নানাভাবে হুমকি-ধমকি দেওয়া হচ্ছে, যাতে বিচার প্রক্রিয়া এগিয়ে না যায়। মামলার আসামি ও সন্ত্রাসীদের হুমকির কারণে সাক্ষীরা সাক্ষ্য দিতে আদালতে আসতে পারছে না।

তিনি বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে আকুল আবেদন আওয়ামী লীগের নিবেদিতপ্রাণ আমার ভাই রুবেলের হত্যার মদদদাতা, পরিকল্পনাকারী ও চার্জশীটভুক্ত আসামিদের বিচারের মাধ্যমে দ্রুত দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই। আমার ভাইয়ের মামলাটি চট্টগ্রাম বিভাগীয় দ্রুত বিচার ট্যাইবুনালের মাধ্যমে দ্রুত বিচারকার্য শেষ করলে সুবিচার পাবো।  

বাংলাদেশ সময়: ১০৪০ ঘণ্টা, অক্টোবর ১৭, ২০২১ 
এমআই/এসি/টিসি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।