ঢাকা, সোমবার, ১৫ বৈশাখ ১৪৩১, ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১৯ শাওয়াল ১৪৪৫

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

সাইফের মাল্টিমডাল গ্রিন কনটেইনার টার্মিনালের কাজ পরিদর্শন রেলমন্ত্রীর

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫৫৫ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ৬, ২০২২
সাইফের মাল্টিমডাল গ্রিন কনটেইনার টার্মিনালের কাজ পরিদর্শন রেলমন্ত্রীর বক্তব্য দেন রেল মন্ত্রী নূরুল ইসলাম সুজন।

চট্টগ্রাম: চট্টগ্রাম বন্দর স্টেডিয়ামের সামনে কার অকশন শেডের পেছনে বাংলাদেশ রেলওয়ের পরিত্যক্ত জায়গায় মাল্টিমডাল কনটেইনার টার্মিনাল নির্মাণের কাজ পরিদর্শন করেছেন রেল মন্ত্রী নূরুল ইসলাম সুজন।

শনিবার (৫ ফেব্রুয়ারি) বিকেল সাগে ৩টায় পরিদর্শনকালে উপস্থিত ছিলেন রেলপথ মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. হুমায়ুন কবীর, বাংলাদেশ রেলওয়ের মহাপরিচালক ধীরেন্দ্র নাথ মজুমদার, বাংলাদেশ রেলওয়ের মহাব্যবস্থাপক (পূর্ব) মো. জাহাঙ্গীর হোসেন, বাংলাদেশ রেলওয়ের সহযোগী প্রতিষ্ঠান কনটেইনার কোম্পানি অব বাংলাদেশ লিমিটেডের (সিসিবিএল) ব্যবস্থাপনা পরিচালক বেলাল হোসেন, সাইফ পাওয়ার গ্রুপের পরিচালক এবং সাইফ লজিস্টিকস অ্যালায়েন্স লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক তরফদার রুহুল সাইফ এবং সাইফ পাওয়ার গ্রুপের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।

অতিথিদের ফুলেল শুভেচ্ছা ও ক্রেস্ট দিয়ে বরণ করেন সাইফ পাওয়ার গ্রুপের কর্মকর্তারা।  

মন্ত্রী মাল্টিমডাল কনটেইনার টার্মিনালের প্রস্তাবিত জায়গা দেখেন এবং মাটি কেটে কাজের উদ্বোধন করেন।

পরবর্তীতে সাইফ পাওয়ার গ্রুপের পক্ষ থেকে সাইফ লজিস্টিকস অ্যালায়েন্স লিমিটেডেরর কনসালটেন্ট ইঞ্জিনিয়ার রফিকুল ইসলাম মাল্টিমডাল কনটেইনার টার্মিনাল স্থাপনার ব্যাপারে মন্ত্রী ও বাংলাদেশ রেলওয়ের কর্মকর্তাদের বিস্তারিত বুঝিয়ে দেন।  

এ বিষয়ে বাংলাদেশ রেলওয়ের সহযোগী প্রতিষ্ঠান কনটেইনার কোম্পানি অব বাংলাদেশ লিমিটেডের (সিসিবিএল) ব্যবস্থাপনা পরিচালক বেলাল হোসেন মাল্টিমডাল কনটেইনার টার্মিনাল নির্মাণে বাংলাদেশ রেলওয়ের আর্থিক লাভ এবং সর্বোপরি দেশের রাজস্ব আদায়ে মাল্টিমডাল টার্মিনালের ভূমিকা তুলে ধরেন।
 
এছাড়া, সাইফ পাওয়ার গ্রুপের পরিচালক এবং সাইফ লজিস্টিকস অ্যালায়েন্স লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক তরফদার রুহুল সাইফ বলেন, এই টার্মিনাল হবে দেশের একমাত্র প্রথম পরিবেশবান্ধব মাল্টিমডাল গ্রিন কনটেইনার টার্মিনাল। এই টার্মিনালের সঙ্গে সড়কপথ, রেলপথ এবং সমুদ্রপথের সরাসরি যোগাযোগ রয়েছে।  এখানে কোনো জ্বালানী তেল ব্যবহৃত যন্ত্রপাতি দিয়ে টার্মিনাল পরিচালিত হবে না। এখানে সম্পূর্ণ ইলেকট্রিক ও সোলার ব্যবহার করে যন্ত্রপাতি পরিচালিত হবে। এছাড়া, এ মাল্টিমডাল কন্টেইনার টার্মিনালে উন্নত দেশের আধুনিক টার্মিনালের মতো সব অপারেশানাল কাজ পরিচালিত করা হবে। আধুনিক যন্ত্রপাতি, সর্বাধুনিক প্রযুক্তির স্ক্যানার এবং আইএসপিএসের সব নিয়মকানুন মেনে এই টার্মিনাল পরিচালিত হবে। যা দেশের জন্য একটি মাইলফলক হিসেবে বিবেচিত হবে। এছাড়া এই পরিবেশবান্ধব মাল্টিমডাল গ্রিন কনটেইনার টার্মিনালে বছরে ৩ লাখ ৫০ হাজার টিইইউস কনটেইনার হ্যান্ডলিং হবে এবং ১ লাখ ২৫ হাজার টিইইউস কনসুলেশান সেন্টার হবে। যা দেশের আমদানি রফতানি খাতে বিশাল খরচ কমাবে। তাছাড়া, দেশের রফতানি খাতে এই টার্মিনাল গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।

অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি রেলপথ মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী  নূরুল ইসলাম সুজন বলেন, স্বাধীনতার পরবর্তীতে বাংলাদেশ রেলওয়েকে লাভজনক প্রতিষ্ঠান হিসেবে গড়ে তোলার জন্য জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমান বেশ কিছু প্রদক্ষেপ গ্রহণ করেছিলেন। কিন্তু ৭৫’এর ১৫ আগস্ট জাতির পিতাকে সপরিবারকে হত্যার পর সেই সব পদক্ষেপ বন্ধ হয়ে যায়। পরবর্তীতে গণতন্ত্রের মানসকন্যা জাতির পিতার সুযোগ্য কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা সেই সব পদক্ষেপ বাস্তবায়ন করার নির্দেশ প্রদান করেন। তারই আঙ্গিকে বাংলাদেশ রেলওয়ের আয়ের উৎস বাড়ানোর প্রয়াসে রেলওয়ের একটি সহযোগী প্রতিষ্ঠান কনটেইনার কোম্পানি অব বাংলাদেশ লিমিটেড (সিসিবিএল) গঠন করেন। সেই প্রতিষ্ঠান রেলওয়ের পরিত্যক্ত জায়গায় আয়ের উৎস বাড়ানোর জন্য বেশ কিছু পদক্ষেপ গ্রহণ করে। তারই আদলে এই পরিত্যক্ত জায়গায় পাবলিক পার্টনারশিপ হিসেবে সাইফ লজিস্টিকস অ্যালায়েন্স লিমিটেডের সঙ্গে একটি মাল্টিমডাল কনটেইনার টার্মিনাল নির্মাণের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন।  

মন্ত্রী বলেন, এটি একটি সরকারি প্রতিষ্ঠানের কাজ। সরকারের রাজস্ব বাড়ানোর একটি পদক্ষেপ।  উন্নত বিশ্বে রেলওয়ে একটি লাভজনক প্রতিষ্ঠান। কিন্তু আমাদের দেশের রেলওয়েকে সরকার থেকে ভর্তুকি দিয়ে চলতে হয়। এভাবে যদি বাংলাদেশ রেলওয়ে নিজেদের সম্পদ কাজে লাগিয়ে নতুন নতুন কাজ সৃষ্টি করতে পারে তাহলে সরকারকে আর ভর্তুকি দিতে হবে না। বরং বাংলাদেশ রেলওয়ে হবে একটি লাভজনক প্রতিষ্ঠান।  

মন্ত্রী বলেন, চট্টগ্রাম বন্দর এখন বছরে ৩২ লাখ টিইইউস কনটেইনার হ্যান্ডলিং করে। আর সেই ৩২ লাখ টিইইউসের মাত্র ৫ শতাংশ কনটেইনার বাংলাদেশ রেলওয়ের মাধ্যমে পরিবহন হয়। এই ৫ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ১০-১৫ শতাংশ কনটেইনার বাংলাদেশ রেলওয়ের মাধ্যেমে পরিবহন করতে হবে। এতে যেমন সড়কপথের ওপর চাপ কমবে, তেমনি বাংলাদেশে রেলওয়ের অতিরিক্ত রাজস্ব আদায় হবে। এর জন্য মন্ত্রী সব সংস্থার সহযোগিতা কামনা করেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৫৫০ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ০৬, ২০২২
এআর/টিসি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।