ঢাকা, শুক্রবার, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৮ রমজান ১৪৪৫

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

ভোটার তালিকায় ছবি তোলা নিয়ে আইটি ক্রু’দের পেটালেন যুবলীগকর্মী

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১৩৯ ঘণ্টা, জুলাই ২, ২০২২
ভোটার তালিকায় ছবি তোলা নিয়ে আইটি ক্রু’দের পেটালেন যুবলীগকর্মী

চট্টগ্রাম: ভোটার তালিকায় ছবি তুলতে গিয়ে হামলা শিকার হয়েছেন নির্বাচন কমিশনের চুক্তবদ্ধ আইটি ক্রু’রা।  

গতকাল শুক্রবার (১ জুলাই) আনোয়ারা উপজেলার রায়পুর ইউনিয়নের রায়পুর বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ে এ হামলা শিকার হন তারা।

 

এ ঘটনায় শনিবার (২ জুলাই) আনোয়ারা থানায় আইটি ক্রুদের টিম লিডার ফয়সাল মিয়া (২৭) বাদি হয়ে মামলা দায়ের করেন। এতে এক আসামীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

মামলার এজাহারে বলা হয়, শনিবার (১ জুলাই) রায়পুর বহুমূখী উচ্চ বিদ্যালয়ে ১৩ জনের একটি টিম ভোটার তালিকায় ছবি তোলার কার্যক্রম পরিচালনা করছিল। সারা দিন শান্তিপূর্ণভাবে কার্যক্রম পরিচালনা করার পর আর কোনো লোক লাইনে না থাকায় বিকেল ৫টায় যন্ত্রপাতি গুছিয়ে আনোয়ারা উপজেলা নির্বাচন অফিসে আসার প্রস্তুতি শুরু করে ক্রুরা। আনুমানিক সন্ধ্যা ৬টা ২০ মিনিটের দিকে মো. রাসেল নামে একজন এসে সরঞ্জাম চালু করে তার এক লোকের রেজিস্ট্রেশন করে দিকে বলে। এসময় টিমের ডাটা এন্ট্রি অপারেটর টুটুল দাশ তাকে (মো. রাসেল) পরের দিন আসতে বলায় একে ক্ষুব্ধ হয়ে চড় থাপ্পড় মারতে শুরু করে। এক পর্যায়ে রাসেল তার বেশ কয়েকজন অনুসারীকে ডেকে এনে সকলকে এলোপাতাড়ি মারধর শুরু করে। এসময় ছবি তোলার কাজে ব্যবহৃত ল্যাপটপ সহ বিভিন্ন সরঞ্জাম ভাংচুর করে তারা। পরে স্থানীয়দের সহযোগীতায় তাদের উদ্ধার করা হয়।  

মামলার বাদি ফয়সাল মিয়া বাংলানিউজকে বলেন, আমরা ওই ছেলে বলার পর আরও ১৫-২০ মিনিট অপেক্ষা করি। কিন্তু যিনি আসার কথা তিনি তখনও আসতে পারেন নি। পরে আমরা সরঞ্জাম ঘুচিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করলে ওই এলাকায় আমাদের বেঁধে রাখার হুমকি দেয় রাসেল। আমরা বিষয়টি তৎক্ষণাত আনোয়ারা নির্বাচন কর্মকর্তাকে জানাই। পরে আমরা রুম থেকে বের হতে চাইলে ২০/২৫ এসে আমাদের ওপর হামলা চালায়। হামলাকারীরা সরকার দলীয় রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত বলে জানান তিনি।

জানা গেছে, হামলাকারী রাসেল ও তার সহযোগীরা স্থানীয় যুবলীগের রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত। কোনো পদপদবী না থাকলেও স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান আমিন শরীফের অনুসারী বলে জানিয়েছেন নাম প্রকাশ না শর্তে স্থানীয় এক ব্যক্তি।  

তবে বিষয়টি অস্বীকার করেন চেয়ারম্যান আমিন শরীফ। তিনি বাংলানিউজকে বলেন, আমি স্থানীয় আওয়ামী লীগের সভাপতি ও এলাকার চেয়ারম্যান। সে হিসেবে এখানে সবাই আমার অনুসারী। গতকাল যে ঘটনাটি ঘটেছে এটি পূর্ব পরিকল্পিত ও ষড়যন্ত্রমূলক। এ ঘটনায় ইতোমধ্যে থানায় মামলা হয়েছে শুনেছি। এমন ন্যাক্কারজনক ঘটনার নিন্দা জানাই।  

আনোয়ার উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা আবু জাফর সালেহ বাংলানিউজকে বলেন, আমরা বিষয়টি জানার পর তাদের তৎক্ষণাত নিরাপদে সরিয়ে নিয়ে আসার ব্যবস্থা করি। এ ঘটনায় ভোটার তালিকার কাজ করা আইটি ক্রুরা আহত হয়েছেন। সেই সঙ্গে ল্যাপটপ সহ বেশি কিছু সরঞ্জাম ভাংচুর করে তারা। সব মিলিয়ে সরকারি সরঞ্জাম ক্ষয়ক্ষতি ও ক্রুদের ব্যক্তিগত মোবাইল সহ প্রায় ২ লাখ টাকার মত ক্ষতি হয়েছে।  

এ বিষয়ে আনোয়ারা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) এস এম দিদারুল ইসলাম সিকদার বাংলানিউজকে বলেন, ভোটার তালিকার কাজ করা আইটি ক্রুদের হামলার ঘটনায় একটি মামলা দায়ের হয়েছে। এতে তিন জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত আরও ২০/২৫ জনকে আসামী করা হয়েছে। এ ঘটনার মূল আসামী রাসেলকে গ্রেফতার করে আদালতে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে।  

বাংলাদেশ সময়: ২১৩০ ঘণ্টা, জুলাই ০২, ২০২২
এমআর/টিসি
 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।