ঢাকা, রবিবার, ১৫ বৈশাখ ১৪৩১, ২৮ এপ্রিল ২০২৪, ১৮ শাওয়াল ১৪৪৫

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

একদিকে শিক্ষার্থীদের আন্দোলন, অন্যদিকে শিক্ষকদের উৎসব

ইউনিভার্সিটি করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০০৪২ ঘণ্টা, জুলাই ২২, ২০২২
একদিকে শিক্ষার্থীদের আন্দোলন, অন্যদিকে শিক্ষকদের উৎসব

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়: ছাত্রী হেনস্তার প্রতিবাদে একদিকে যখন শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে ক্যাম্পাস উত্তাল, ঠিক তখনই বর্ষাবরণ ও ফল উৎসব করেছে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (চবি) শিক্ষক সমিতি। এতে শিক্ষার্থীদের মধ্যে দেখা গেছে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া।

বৃহস্পতিবার (২১ জুলাই) সকাল থেকে সারাদিন দফায় দফায় আন্দোলন করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। একই দিন সকাল ১১টায় চবির ব্যবসায় প্রশাসন অনুষদের মিলনায়তনে ফল উৎসবের আয়োজন করে চবি শিক্ষক সমিতি।

শিক্ষক সমিতির সভাপতি সেলিনা আখতারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন চবি উপাচার্য শিরীণ আখতার। মুখ্য আলোচক ছিলেন ইংরেজি বিভাগের অধ্যাপক সুকান্ত ভট্টাচার্য এবং শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন সমিতির সাধারণ সম্পাদক সজীব কুমার ঘোষ।

শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মধ্যে এ ধরনের অনুষ্ঠানের আয়োজনে ক্ষুদ্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়ে শিহাব উদ্দিন সাকিব নামে এক শিক্ষার্থী সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে লিখেছেন, ‘মাছের পচন ধরে নাকি মাথা থেকে। আমাদের ভিসি ম্যাম তার এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত স্থাপন করলেন। শ্লীলতাহানির শিকার হয়ে একজন মেয়ে যেখানে ট্রমাতে আছে, হাজার হাজার ছাত্রী যখন নিরাপত্তার অভাবে শঙ্কিত। তখন তাদের অভিবাবক, যৌন নিপীড়ন বিরোধী সেলের প্রধান তাঁর প্রশাসন নিয়ে ফলাহার উৎসবে মত্ত। এ থেকেই বোঝা যায় অপরাধী ধরতে প্রশাসন কতটুকু সিরিয়াস। আজ যদি উপাচার্য নিজে বা তাঁর মেয়ে এমন ঘটনায় আক্রান্ত হতো, তাহলে তিনি কি পারতেন এমন একটি অনুষ্ঠান করতে!’

এছাড়াও জানা গেছে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের সঙ্গে সংহতি জানিয়ে ফল উৎসবে সংগীত পরিবেশন করতে আসেননি সংগীত বিভাগের শিক্ষার্থীরা।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে বেশ কয়েকজন শিক্ষক বাংলানিউজকে বলেন, এমন একটি ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়জুড়ে যখন প্রতিবাদ করছেন সবাই, তখন শিক্ষকদের এমন উৎসব সত্যিই বিব্রতকর। এমনকি এ ঘটনার চারদিন পার হয়ে গেলেও এখন পর্যন্ত শিক্ষক সমিতি একটি বিবৃতিও দেয়নি। অথচ তাঁরা চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের প্রতিনিধিত্ব করছেন।

বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক সজীব কুমার ঘোষ বলেন, আমাদের অনুষ্ঠানের পরিকল্পনা দুই মাস আগেই হয়েছে। তাই এ অনুষ্ঠানের প্রস্তুতি আরও আগেই নেওয়া হয়েছে। এ জন্য হঠাৎ করে অনুষ্ঠান স্থগিত করা সম্ভব হয়নি। তবে আমাদের একটি সভায় এ ঘটনায় বিবৃতি দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। আমরা খুব সহসা বিবৃতি দেব।

এর আগে গত ১৭ জুলাই রাতে ক্যাম্পাসে এক ছাত্রীকে হেনস্তার অভিযোগে পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করে প্রশাসন। তবে এ ঘটনার বিচারসহ চারটি দাবিতে বুধবার রাতে আন্দোলনে নামেন চবি ছাত্রীরা। পরে প্রশাসনের লিখিত আশ্বাসে রাত ১টায় হলে ফেরেন আন্দোলনকারী ছাত্রীরা। একই দাবিতে বৃহস্পতিবার দিনভর দফায় দফায় আন্দোলন করেন চবি শিক্ষার্থীরা।

বাংলাদেশ সময়: ০০৪০ ঘণ্টা, জুলাই ২২, ২০২২
এমএ/টিসি/এমজেএফ
 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।