ঢাকা, শুক্রবার, ২০ বৈশাখ ১৪৩১, ০৩ মে ২০২৪, ২৩ শাওয়াল ১৪৪৫

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

ট্রান্সশিপমেন্টের আরেকটি ট্রায়াল হবে চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১৩১ ঘণ্টা, আগস্ট ২৮, ২০২২
ট্রান্সশিপমেন্টের আরেকটি ট্রায়াল হবে চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে চট্টগ্রাম বন্দরের এনসিটি পরিদর্শন করেন নৌ প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী।

চট্টগ্রাম: নৌ পরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, ট্রান্সশিপমেন্টের বিষয়ে ভারতের সঙ্গে চুক্তি ইতিমধ্যে হয়ে গেছে। প্রথম ট্রায়াল ভালোভাবে সম্পন্ন হয়েছে।

সেকেন্ড ট্রায়াল মোংলা বন্দরে হয়ে গেছে। চট্টগ্রাম বন্দরে আরেকটা ট্রায়াল শিগগির হবে।
চারটি ট্রায়াল হওয়ার কথা। চট্টগ্রাম বন্দরের সার্বিক ব্যবস্থাপনা আপগ্রেড করতে চাই, হচ্ছে আপনারা দেখছেন। পতেঙ্গা কনটেইনার টার্মিনাল (পিসিটি), ওভার ফ্লো ইয়ার্ড রেডি হচ্ছে। ভারত থেকে জাহাজগুলো আসতে শুরু করলে চট্টগ্রাম বন্দরের ওপর চাপ তৈরি হবে। সেই চাপ সামাল দিতে চট্টগ্রাম বন্দর প্রস্তুতি নিচ্ছে। কয়েক দিনের মধ্যে একটি ট্রায়াল হবে। এনবিআর থেকে এসআরওটা হয়ে গেলে নিয়মিত ভারতের সেভেন সিস্টারের পণ্য নিয়ে জাহাজ রেগুলার আসা শুরু করবে।

রোববার (২৮ আগস্ট) চট্টগ্রাম বন্দরের এনসিটি পরিদর্শনকালে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।  

ট্যারিফ নির্ধারণ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, বাংলাদেশ একটা মানবিক রাষ্ট্র। মহান মুক্তিযুদ্ধে ত্রিশ লাখ মানুষ দেশমাতৃকার জন্য জীবন দিয়েছেন। আমরা সবসময় মানবিক পদক্ষেপ নিয়েছি। আমাদের জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের বিদেশ নীতি হচ্ছে- সকলের সঙ্গে বন্ধুত্ব কারও সঙ্গে বৈরিতা নয়। আমরা পুরো পৃথিবীকে মানবিক বিশ্ব হিসেবে দেখতে চাই। কাজেই এ জায়গায় আমাদের সিদ্ধান্ত মানবিক আছে। আমরা জানি এ অঞ্চলের মানুষ লকড অবস্থায় আছে। ভারতের দিকে আমরা মানবতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছি।   

পিসিটির অপারেটিং সিস্টেম প্রসঙ্গে বলেন, আমাদের নীতিগত সিদ্ধান্ত পিসিটি পরিচালনায় পিপিপি মডেলে যাব আমরা। অনেক দেশের প্রস্তাবনা আছে। সৌদি, দুবাই, ডেনমার্ক, ভারতের প্রস্তাবনা আছে। এসব প্রস্তাবনা চট্টগ্রাম বন্দরের কাছে নেই, পিপিপির কাছে আছে। অ্যাডভাইজারও নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। প্রস্তাবনা মূল্যায়ন করে পর্যালোচনা করে বিষয় চূড়ান্ত হবে। পিসিটি পুরোপুরি অপারেশনে যাওয়ার আগে টেস্ট, ট্রায়াল হবেই। ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান যারা কাজ করেছে তাদের কাছ থেকে বুঝে নেওয়া হবে।  

বন্দরের নিরাপত্তা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, বন্দরকে আইএসপিএস কোড মেনেই চলতে হয়। চট্টগ্রাম বন্দরের সক্ষমতা আছে। বন্দর কাজটা কী? আমরা শুধু হ্যান্ডলিং করি। এখানে কী পণ্য আসছে, যাচ্ছে বন্দরের জানার কথা নয়। নিশ্চিদ্র নিরাপত্তার জন্য স্ক্যানার বসাচ্ছি। স্ক্যানার যাতে বসানো না হয় সে লক্ষ্যে একটি সংঘবদ্ধ চক্র জোরালোভাবে কাজ করছে, বিভিন্ন প্রকার অপপ্রচার চালাচ্ছে। ডিজিটাল বাংলাদেশের ছোঁয়া যেন এখানে না লাগে সেটি চায় তারা। কিন্তু মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, চট্টগ্রাম বন্দর আমাদের লাইফলাইন। পৃথিবীর সঙ্গে আমাদের ব্যবসা-বাণিজ্য এ বন্দর দিয়ে পরিচালিত হয়। বিশ্বমানের বন্দর করতে ইক্যুইপমেন্ট আনা হচ্ছে। গ্যান্ট্রি ক্রেন বসানো হয়েছে। চট্টগ্রাম বন্দর আমাদের মর্যাদার নাম। এ মর্যাদা আমাদের রক্ষা করতে হবে। এর জন্য বন্দর কর্তৃপক্ষ দৃঢ়প্রতিজ্ঞ। বন্দরের প্রতিটি গেটে আসা-যাওয়ার ক্ষেত্রে, আমদানি রফতানির ক্ষেত্রে আমরা স্ক্যানার বসাব। শুধু চট্টগ্রাম বন্দর নয়, সব সমুদ্রবন্দর, সব স্থলবন্দরেও স্ক্যানার বসানো হবে।
 
এনসিটিতে গিয়ার ভ্যাসেল বার্থিং প্রসঙ্গে বন্দর চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল এম শাহজাহান বলেন, চট্টগ্রাম বন্দরে দুই ধরনের ভ্যাসেল আসে। গিয়ারলেস ভ্যাসেলকে এনসিটিতে বার্থিং দিই। যেসব জাহাজে গিয়ার আছে সেগুলো জিসিবিতে বার্থিং দেওয়া হয়। বার্থ খালি থাকলে গিয়ার ভ্যাসেলও গ্যান্ট্রির নিচে চলে আসে। কিছু গিয়ার ভ্যাসেলের গিয়ার নষ্ট হলে সেগুলো এনসিটিতে বার্থিং দেওয়া হয়। কিউজিসি (গ্যান্ট্রি ক্রেন) অপারেশন দ্রুত হয়। জাহাজের ক্রেন দিয়ে অপারেশন ধীরগতিতে হয়। ৪৮ ঘণ্টা কাট অফ টাইম মেনটেইন করি। আমাদের রেভিনিউও বেশি হয়।  

সেভেন সিস্টারের ব্যাপারে চট্টগ্রাম বন্দর শতভাগ প্রস্তুত। ওদের জাহাজ কোস্টাল ভ্যাসেল হয়ে থাকে। এনসিটি-১ বার্থে দুইটি মোবাইল হারবার গ্যান্ট্রি ক্রেন আছে। সেখানে কিউজিসিও অপারেট করতে পারে। এ ছাড়া ছোট ছোট জাহাজের জন্য লাইটারেজ জেটি তৈরি করছি। অলরেডি ব্যাকআপ ফ্যাসিলিটি তৈরি হয়ে গেছে। ভারতের সঙ্গে আমাদের একটি চুক্তি আছে। একটি ট্রায়াল রান হয়েছে। শিগগির আরেকটি ট্রায়াল রান হবে। আমাদের বন্দর ব্যবহারের জন্য শতভাগ প্রস্তুত আছি।  

এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, ডেঞ্জারেস কার্গো দুই ধরনের। কিছু ধ্বংসযোগ্য কিছু নিলামযোগ্য। পণ্য ধ্বংস করার জন্য একটি কমিটি হয়েছে, কাজ চলছে। আরেকটি মিটিং শিগগির হবে। এনবিআর বেশ কয়েকজন কর্মকর্তাকে স্পেশালি দায়িত্ব দিয়েছে।  

তিনি বলেন, পিসিটির ইয়ার্ডের কাজ শেষ হয়েছে। অবকাঠামো তৈরি হয়েছে। অপারেটর নিয়োগ দিলে তারা ইক্যুইপমেন্ট লাগাবে। দ্রুততার সঙ্গে সব টেস্ট শেষ হবে। ইতিমধ্যে ট্রানজেকশন অ্যাডভাইজার নিয়োগ হয়ে গেছে। মডেল তৈরি করে দিলে দরকষাকষি করে অ্যাগ্রিমেন্ট সাইন করলে অপারেশন শুরু করা যাবে।

বাংলাদেশ সময়: ২১৩১ ঘণ্টা, আগস্ট ২৮, ২০২২
এআর/টিসি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।