ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৯ বৈশাখ ১৪৩১, ০২ মে ২০২৪, ২২ শাওয়াল ১৪৪৫

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

বাঁশখালী ইউপি নির্বাচন: কথা রাখলেন নৌকার প্রার্থী মুজিব!

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪৫৩ ঘণ্টা, অক্টোবর ১২, ২০২২
বাঁশখালী ইউপি নির্বাচন: কথা রাখলেন নৌকার প্রার্থী মুজিব! ...

চট্টগ্রাম: ‘ইভিএম না থাকলে রাতেই ভোট নিয়ে নিতাম, আপনারা ভোটকেন্দ্রে যাবেন, আঙুলের ছাপ দিয়ে ভোট দেবেন। ছাপ দিতে না পারলে সেখানে আমি ছাপ দেওয়ার মানুষ রাখবো’।

 

গত ২৮ মে নির্বাচনী প্রচারণায় গিয়ে প্রকাশ্যে এমন বক্তব্য দিয়েছিলেন বাঁশখালী উপজেলার চাম্বল ইউনিয়নের নৌকা প্রতীকের প্রার্থী মুজিবুল হক চৌধুরী।

এ নিয়ে সমালোচনার মুখে পড়লে নির্বাচন স্থগিত করে দেয় নির্বাচন কমিশন।

দুই দফা স্থগিত হওয়ার পর বুধবার (১২ অক্টোবর) অনুষ্ঠিত হওয়া নির্বাচনে ঠিক ৫ মাস আগে জনসম্মুখে দেওয়ার কথাই রেখেছেন তিনি।  

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হওয়া একটি ভিডিওতে দেখা যায়,  কালো পর্দায় ঘেরা ভোটের গোপন কক্ষে একজন মহিলা ভোট দিতে গেলে তার সঙ্গে ঢুকে পড়েন কালো পাঞ্জাবি পরিহিত ব্যক্তি। মহিলা দাঁড়িয়ে থাকলেও বোতাম টিপে বেরিয়ে আসেন ওই ব্যক্তি। এছাড়া আরেকটি ভাইরাল হওয়া ছবিতে দেখা যায়, ভোট দেওয়ার গোপন কক্ষে এক মহিলা ভোটারের পাশে দাঁড়িয়ে আছেন ব্যক্তি।  

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ভাইরাল হওয়া ভিডিওটি ৭ নম্বর ওয়ার্ড চাম্বল উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রের। কালো পাঞ্জাবি পরিহিত ব্যক্তির নাম মিজানুর রহমান। তিনি নৌকা প্রতীকের প্রার্থী মুজিবুল হক চৌধুরীর ভাগ্নে এবং ওই কেন্দ্রের দায়িত্বরত নৌকা প্রতীকের নির্বাচনী এজেন্ট। তাছাড়া ভাইরাল হওয়া ছবিটি ২ নম্বর ওয়ার্ডের পশ্চিম সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রের। তবে গোপন কক্ষে থাকা ব্যক্তির পরিচয় জানা যায়নি।  

এ বিষয়ে জানতে চাইলে নৌকা প্রতীকের প্রার্থী মুজিবুল হকের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি ব্যস্ত আছেন বলে সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেন।  

কেন্দ্রে বহিরাগতরা ঢুকে ভোট দেওয়ার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যাচ্ছেন বলে জানালেও কোন কেন্দ্রে এমন ঘটনা ঘটেছে তা জানেন না বলে জানান চাম্বল ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা রকর চাকমা।

গোপন কক্ষে প্রবেশের বিষয়ে ৭ নম্বর ওয়ার্ডের প্রিজাইডিং অফিসার আবু বক্কর সিদ্দীকের কাছে জানতে চাইলে এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।  

এদিকে নির্বাচনী নিরাপত্তার দায়িত্ত্বে থাকা র‌্যাব-৭ এর পুলিশ সুপার তাহিয়াত আহমেদ চৌধুরী বাংলানিউজকে বলেন, অভিযোগগুলো খতিয়ে দেখা হচ্ছে। সত্যতা পাওয়া গেলে অপরাধীকে কোনোভাবে ছাড় দেওয়া হবে না।  

এর আগে গত ২৮ মে বাঁশখালী উপজেলার চাম্বল ইউনিয়নের বাংলাবাজার ১ নম্বর ওয়ার্ডে প্রচারণায় গিয়ে প্রার্থী মুজিবুল হক চৌধুরী বক্তব্য দেন। এসময় সঙ্গে থাকা সমর্থকরাও তার বক্তব্যে সায় দেন।  

ভাইরাল হওয়া ভিডিওতে দেখা যায়, মুবিজুল হক হ্যান্ডমাইকে বক্তব্য দিচ্ছেন। এসময় তিনি বলছিলেন, ‘রিকশায় করে পারেন, যেমন করে পারেন ভোট দেওয়ার জন্য… কারণ ইভিএমের ভোট। ইভিএম না হলে সব আমি মেরে দিতাম। কাউকে খুঁজতাম না। কথা বুঝেন নাই। ইভিএমে আইডি কার্ড না ঢুকালে হয় না। ওটা হলে ভোট আমি রাতেই নিয়ে নিতাম। তাই আপনাদের কষ্ট করে সেটা (এনআইডি) নিয়ে যেতে হবে। মেশিনে ফিঙ্গার দিতে হবে। কথা বুঝেন নাই। আমি তো প্লেয়ার ওইটা, একেবারে ২০ হাজার নিয়ে ফেলি। সরকার ইভিএম একটা করছে, কী করবো...। কষ্ট করে নিয়ে গিয়ে আঙ্গুলে ছাপ দিয়ে ভোট দিতে হবে। ছাপ দিতে না পারলে সেখানে আমি ছাপ দেওয়ার মানুষ রাখবো। আমার জন্য একটু দোয়া করবেন সবাই। ’  

আরও খবর>>প্রচারণায় প্রার্থী বললেন, ইভিএম না থাকলে রাতেই ভোট নিয়ে নিতাম

বাংলাদেশ সময়: ১৪৪৪ ঘণ্টা, অক্টোবর ১২, ২০২২
এমআর/টিসি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।