চট্টগ্রাম: সত্তরোর্ধ্ব জাহাঙ্গীর আলম জীবনের অর্ধেক সময় কাটিয়েছেন প্রবাসে। খেয়ে না খেয়ে সন্তানদের জন্য পাঠিয়েছেন টাকা।
জাহাঙ্গীর আলম প্রতিবেশীদের কাছে শুনেছেন চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসকের মানবিকতার গল্প। তাই একদিন হাজির হন জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মমিনুর রহমানের কার্যালয়ে। সব ঘটনা শোনার পর দুঃখ প্রকাশ করেন জেলা প্রশাসক। পরে পতেঙ্গা সার্কেলের সহকারী কমিশনার (ভূমি) মিজানুর রহমানকে এক মাসের মধ্যে কাগজপত্র পর্যালোচনা করে জাহাঙ্গীর আলমের জমির নামজারি করার নির্দেশ দেন। পরে বৃদ্ধের নথিপত্র দেখে নামজারি করে দেন সহকারী কমিশনার (ভূমি)।
জানা গেছে, ২০১১ সালের জানুয়ারিতে নগরের পতেঙ্গা সার্কেল ভূমি অফিসে একটি মিস কেস মামলা করেন জাহাঙ্গীর আলম নামের এই প্রবাসী। পরে করণিকের ভুলের কারণে দীর্ঘদিন তার মিস কেসটি আটকে যায়। বিভিন্ন সময় তিনি ভূমি অফিসে গিয়েও কোনও সমাধান পাননি। পরে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসকের কাছে পরিত্রাণ চেয়ে আবেদন করেন।
ভূমি জরিপের পর চূড়ান্তভাবে মুদ্রিত ও প্রকাশিত খতিয়ানের ভুল মাঠপর্যায়েই সংশোধন বা রেকর্ড সংশোধন করতে পারবেন সহকারী কমিশনাররা (ভূমি)। তাঁদের এ নির্দেশ দিয়ে ২০২১ সালের ২৫ জুলাই একটি পরিপত্র জারি করে ভূমি মন্ত্রণালয়। এরপর পতেঙ্গা সার্কেল ভূমি অফিসের সহকারী কমিশনার মিজানুর রহমান বৃদ্ধ জাহাঙ্গীর আলমের সব নথিপত্র দেখে মিস কেসটি নিষ্পপ্তি করে দেন।
জাহাঙ্গীর আলম বাংলানিউজকে বলেন, করণিকের ভুলের কারণে দীর্ঘদিন আমি ভূমি উন্নয়ন কর ও নামজারি করতে পারিনি। পরে পতেঙ্গা সার্কেলের সহকারী কমিশনার (ভূমি) মিজানুর রহমান আমার জায়গার মৌজা ম্যাপ, এস এ খতিয়ান, মাঠ পর্চা, খতিয়ান, দাগ সূচি দেখে ও সরেজমিন তদন্ত করে ১২ বছর পর করণিক ভুলটি সংশোধন করে দিয়েছেন।
পতেঙ্গা সার্কেলের সহকারী কমিশনার (ভূমি) মিজানুর রহমান বাংলানিউজকে বলেন, বতর্মান সরকার ভূমিসেবা সহজীকরণের জন্য ডিজিটাল ভূমিসেবাসহ নানান উদ্ভাবনী পদক্ষেপ গ্রহণ করে ভূমি ব্যবস্থাপনায় বৈপ্লবিক পরিবর্তন সাধন করেছে। ভূমি সেবাসমূহ সেবাগ্রহীতাদের দোরগোড়ায় পৌঁছে দিতে আমরা সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।
বাংলাদেশ সময়: ১৫০০ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৩, ২০২২
বিই/টিসি