ঢাকা, বুধবার, ১১ বৈশাখ ১৪৩১, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ শাওয়াল ১৪৪৫

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

অনাহারীর মুখে খাবার বিতরণের অনন্য উদ্যোগ তথ্যমন্ত্রীর

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯৪৯ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৫, ২০২২
অনাহারীর মুখে খাবার বিতরণের অনন্য উদ্যোগ তথ্যমন্ত্রীর অনাহারীর মুখে খাবার তুলে দিচ্ছে এনএনকে ফাউন্ডেশন। 

চট্টগ্রাম: করোনাভাইরাসের প্রকোপ এখন নেই বললেই চলে। তাই সরকারি-বেসরকারি ও ব্যক্তি উদ্যোগে ভাসমান, দরিদ্র মানুষের মধ্যে ত্রাণ বিতরণও তেমন একটা নেই।

তবে এসব গরিব-অসহায়, ভাসমান মানুষের পাশে এখনও আছে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদের পরিবারিক প্রতিষ্ঠান এনএনকে ফাউন্ডেশন।  

শুক্রবার (২৫ নভেম্বর) দুপুরে চট্টগ্রাম নগরের দেওয়ানজী পুকুর লেনে তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদের বাসার সামনে নবাব সিরাজদ্দৌলা সড়কে দেখা গেছে, দুই শতাধিক মানুষ লাইনে দাঁড়িয়েছেন; বিনামূল্যে ভরপেট খাবার পাওয়ার নিশ্চয়তায় এখানে এসেছেন তারা।

 

ভিড় সামলে তাদের হাতে তুলে দেওয়া হচ্ছে প্যাকেটভর্তি খাবার। পরম মমতায় খাবার তুলে দিতে ব্যস্ত সময় পার করছেন তথ্যমন্ত্রীর ব্যক্তিগত কর্মকর্তাসহ অন্যরা।  

এভাবেই গত দু’বছর ধরেই সপ্তাহে চার দিন (শনিবার, রোববার, মঙ্গলবার, বৃহস্পতিবার) অনাহারী মানুষের মধ্যে খাবার বিতরণ করে আসছে তথ্যমন্ত্রীর পারিবারিক প্রতিষ্ঠান এনএনকে ফাউন্ডেশন। কোনো দিন বিরিয়ানি, কোনো দিন মাছভাজা দিয়ে খিচুড়ি, কখনো সবজি খিচুড়ি বা ডিম খিচুড়ি, আবার কখনো মুরগি দিয়ে খিচুড়ি রান্না করা খাবার বিতরণ করা হয় বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।  

দুপুরে খাবার নিতে আসা পঞ্চাশোর্ধ্ব আবদুল মান্নান বলেন, বার্ধ্যক্যের কারণে টাকা উপার্জনের সুযোগ নেই। চেয়েচিন্তে চলতে হয়। পুরো সপ্তাহে চারদিন মন্ত্রী মহোদয়ের বাড়িতে খাবার পাই। খাবার সুস্বাদু হয়। করোনাকালেও অনেক সহায়তা পেয়েছি। আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করি, মন্ত্রীকে যেন আল্লাহতায়ালা দীর্ঘায়ু দান করে এবং সুস্থ রাখেন।

হাতের লাঠিতে ভর করে খাবার নিতে আসা বৃদ্ধা শীপা রায় বলেন, স্বামী নেই, ছেলে-মেয়ে থেকেও নেই। ভিক্ষা করে চলি। পেলে খাই, না পেলে উপোস থাকি। করোনার সময় থেকে এ পর্যন্ত প্রত্যেকবার এখানে এসেছি খাবার নিতে। তৃপ্তি ভরে খাই আর মন্ত্রীর জন্য ভগবানের কাছে প্রার্থনা করি।

জানা যায়, শুধু খাবার বিতরণই নয়, প্রতিষ্ঠার পর থেকে বিভিন্নভাবে এনএনকে ফাউন্ডেশন লাখো মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছে। বিশেষত করোনার ভয়াবহ দিনগুলোতে প্রতিদিনই অভুক্ত মানুষকে খাবার, পোশাক, নগদ টাকা ও খাদ্যসামগ্রী দিয়ে সহযোগিতা করেছে প্রতিষ্ঠানটি। কঠোর লকডাউনে সরকারি বিধিনিষেধ মেনে বাসায় বাসায় পৌঁছে দিয়েছে ভালোবাসার উপহার। তথ্যমন্ত্রীর পরিবারের অনন্য এ উদ্যোগ নজর কেড়েছে চট্টগ্রামবাসীর।

তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদের ব্যক্তিগত কর্মকর্তা এমরুল করিম রাশেদ বলেন, করোনার সময় মানুষ যখন কর্মহীন হয়ে ঘরবন্দি হয়ে পড়েন, তখন মন্ত্রী মহোদয় খাবার বিতরণের এই উদ্যোগটা নিয়েছিলেন। যা এখনো নিয়মিত চলছে। তাঁর ইচ্ছা আমৃত্যু এ কার্যক্রম অব্যাহত রাখবেন এবং ছেলে-মেয়েদের বলে দিয়েছেন, তাঁর মৃত্যুর পরও যেন এভাবে অনাহারীর মাঝে খাবার বিতরণ অব্যাহত রাখে; এ কার্যক্রম যেন কোনোদিন বন্ধ না হয়।

রাশেদ আরও বলেন, তবে দীর্ঘ দুই বছর ধরে এ কার্যক্রম চললেও মন্ত্রী মহোদয় কখনও চাননি এটি মিডিয়ায় প্রকাশ পাক। এই খাবার বিতরণের সম্পূর্ণ খরচ মন্ত্রী মহোদয় নিজেই বহন করে চলেছেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৯৪০ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৫, ২০২২
এআর/টিসি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।