ঢাকা, শনিবার, ৬ বৈশাখ ১৪৩১, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫

অর্থনীতি-ব্যবসা

পুঁজিবাজার: ডিমেট না করায় ২৫ কোম্পানি তালিকাচ্যুত

এসএম গোলাম সামদানী, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮৫৮ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ৩০, ২০১০
পুঁজিবাজার: ডিমেট না করায় ২৫ কোম্পানি তালিকাচ্যুত

ঢাকা: আবারো ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) থেকে ২৫টি কোম্পানিকে তালিকাচ্যুত করা হয়েছে। বাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিমনের (এসইসি) বেঁধে দেওয়া সময় ৩০ সেপ্টেম্বরের মধ্যে কাগজের শেয়ার থেকে ডিমেট প্রক্রিয়ায় আসতে না পারায় বৃহস্পতিবার লেনদেন শেষে এসব কোম্পানিকে তালিকাচ্যুত করা হয়।



এসইসি বলছে, এখন এসব কোম্পানির শেয়ার লেনদেন মূল মার্কেটে বন্ধ থাকবে। লেনদেন হবে ওভার দ্য কাউন্টার (ওটিসি) মার্কেটে।

অন্যদিকে, ওটিসি মার্কেটে বিক্রেতা থাকলেও ক্রেতা না থাকার কারণে গত এক বছরে সেখানে কোনো ধরনের লেনদেন হচ্ছে না বলেই চলে। এর আগে ওটিসিতে পাঠানো ৫০টি কোম্পানির কাছে বিনিয়োগকারীদের কয়েক হাজার কোটি টাকা আটকে রয়েছে। এ অবস্থায় বিনিয়োগকারীদের আশঙ্কা একই পরিণতি বরণ করতে যাচ্ছে নতুন তালিকাচ্যুত এই ২৫ কোম্পানির হাজার কোটি টাকার শেয়ার। অবশ্য তালিকাচ্যুত এই কোম্পানিগুলোর পরিশোধিত মূলধন ১৯৭ কোটি ৭০ লাখ টাকা।

এ ব্যাপারে ডিএসইর সভাপতি মো. শাকিল বিজভী বাংলানিউজকে বলেন,  ‘তালিকাচ্যুত ২৫ কোম্পানিকে কাগজের শেয়ার থেকে ডিমেট করার জন্য এসইসি কোম্পানিগুলোকে বারবার সময় দেওয়ার পরও তারা ডিমেট করতে ব্যর্থ হয়েছে। ফলে ডিএসই এসব কোম্পানিকে এসইসি নির্দেশে তালিকাচ্যুত করেছে। এখন এসব কোম্পানির শেয়ার ওটিসি মার্কেটে লেনদেন হবে। ’

ডিমেট করলে আবারো মূল মার্কেটে তাদের ফিরে আসার সুযোগ রয়েছে বলেও জানান তিনি।
          
এসইসির সদস্য মো. ইয়াসিন আলী বাংলানিউজকে বলেন, ‘কমিশন বাজারের স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে সকল কাগজের শেয়ারকে ডিমেট শেয়ারে রুপান্তরিত করতে নির্দেশ দেয়। কিন্তু এসব কোম্পানি তা করতে ব্যর্থ হওয়ায় এদেরকে মূল মার্কেট থেকে বের করে ওটিসিতে পাঠানোর পূর্ব সিদ্ধান্ত কমিশন বহাল রেখেছে। ’
 
অবশ্য বিনিয়োগকারীরা বলছেন, তালিকাচ্যুত না করে এসব কোম্পানিকে এসইসি শাস্তি দিতে পারতো।  

মো. বেলাল হোসেন নামের একজন বিনিয়োগকারী বাংলানিউজকে বলেন, ‘অলটেক্স ইন্ডাট্রিজকে তালিকাচ্যুত করার কারণে আমার বিনিয়োগকৃত প্রায় ২ লাখ টাকা আটকে গেছে। ’
 
তালিকাচ্যুত ২৫ কোম্পানির মধ্যে রয়েছে খাদ্য ও অনুষঙ্গিক খাতের ৯টি  কোম্পানি, টেক্সটাইল খাতের ৪টি, ওষুধ ও রসায়ন খাতের ৩টি, বিবিধ খাতের ২টি, সেবা খাতের ২টি। এছাড়াও ট্যানারি, প্রকৌশল, কাগজ, সিমেন্ট ও পাট খাতের ১টি কোম্পানি রয়েছে।

খাদ্য ও অনুষঙ্গিক খাতের ৯টি কোম্পানি হলো- আলফা টোবাক্কো, বাংলাদেশ লিফ টোবাক্কো কোম্পানি (বিএলটিসি), ইউসুফ ফ্যাওয়ার, বাংলাদেশ প্লান্টেশন, হিল প্ল্যান্টেশন, গালফ ফুড, জিলবাংলা সুগার, শ্যামপুর সুগার, মর্ডান ইন্ডস্ট্রিজ।

টেক্সটাইল খাতের ৪টি কোম্পানি হলো- মর্ডান ডাইং, আনলিমা ইয়ার্ন, অলটেক্স ইন্ডাসট্রিজ, কাসেম সিল্ক, রসায়ন খাতের বাংলা প্রসেস, ওরিয়ন ইনফিউশন্স, থিরাপেটিকস, বিবিধ খাতের হিমাদ্রি, দি ইঞ্জিনিয়ার্স।

সেবা খাতের ২টি কোম্পানি হলো- বাংলাদেশ সার্ভিসেস ও বাংলাদেশ হোটেলস। এছাড়া ট্যানারি খাতের সমতা লেদার, প্রকৌশল খাতের রেনউইক জজ্ঞেশ্বর, কাগজ খাতের আজাদী প্রিন্টার্স, সিমেন্ট খাতের নিলয় সিমেন্ট, পাট খাতের নর্দান জুট।

গত ২৫ মে এসইসি পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত সব কাগজের শেয়ার ১ জুলাইয়ের মধ্যে ডিমেটে শেয়ারে রূপান্তরের নির্দেশ  দেয়। ওই নির্দেশে বলা হয়, বেঁধে দেওয়া সময়ের মধ্যে কোনো কোম্পানি কাগজের শেয়ার থেকে ডিমেট শেয়ারে রূপান্তর করতে ব্যর্থ হলে তাদেরকে ১ জুলাই থেকে ‘জেড’ ক্যাটাগরিতে নামিয়ে দেওয়া হবে। ‘জেড’ ক্যাটাগরিতে নামিয়ে দেওয়ার পরও ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ওইসব কোম্পানিকে মূল মার্কেটে লেনদেনের সুয়োগ দেওয়া হবে। এরপরও যদি তারা ডিমেট না করে তাহলে ১ অক্টোবর থেকে ওইসব শেয়ারকে মূল বাজারে লেনদেন করতে দেওয়া হবে না।

বাংলাদেশ সময়: ১৮৪৬ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ৩০, ২০১০

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।