ঢাকা, মঙ্গলবার, ৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ শাওয়াল ১৪৪৫

অর্থনীতি-ব্যবসা

তেল-গ্যাস অনুসন্ধান: কাল কনোকোকে সিদ্ধান্ত জানাবে সরকার

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮০১ ঘণ্টা, অক্টোবর ৪, ২০১০
তেল-গ্যাস অনুসন্ধান: কাল কনোকোকে সিদ্ধান্ত জানাবে সরকার

ঢাকা: বঙ্গোপসাগরের বিরোধপূর্ণ এলাকায় তেল গ্যাস অনুসন্ধানের জন্য প্রাথমিক চুক্তির বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক বহুজাতিক কোম্পানি কনোকো ফিলিপসকে সরকারের নীতিগত সিদ্ধান্ত জানানো হবে।

এ উপলক্ষে আগামীকাল মঙ্গলবার সকালে কনোকোর চার সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল জ্বালানি সচিবের সঙ্গে সাক্ষাত করবেন।

এ সময় সরকারের ওই নীতিগত সিদ্ধান্তের কথা জানানো হবে বলে মন্ত্রণালয়ের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা জানিয়েছেন।

এর আগে গত ৩১ আগস্ট জ্বালানি বিভাগের এক বৈঠকে কনোকোর সঙ্গে প্রাথমিক চুক্তির বিষয়ে নীতিগত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর জ্বালানি বিষয়ক উপদেষ্টা ড. তৌফিক-ই-ইলাহী চৌধুরী, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী এনামুল হক, জ্বালানি সচিব মোহাম্মদ মেজবাহ উদ্দিন, পেট্রোবাংলার চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. হোসেন মনসুরসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।

কনোকোর প্রতিনিধি দলে থাকবেন- এশিয়া প্যাসিফিক অঞ্চলের ভাইস প্রেসিডেন্ট (বিজনেস ডেভলমেন্ট) উইলিয়াম জি ল্যাফারেন্ড্রে, জেনারেল কনসোল ডগফিন নিগার্ড, সিনিয়র এক্সপ্লোরেশন নেগোশিয়েটর জেমস ওয়েলিন ও এক্সপ্লোরেশন ডিরেক্টর টম আর্লে।

এ ব্যাপারে কথা বলার জন্য জ্বালানি সচিবের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তাকে পাওয়া যায়নি।

তবে পেট্রোবাংলার চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. হোসেন মনসুর বাংলানিউজকে বলেন, ‘আমরা কনোকোর সঙ্গে ধারাবাহিক আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছি। আমরা আমাদের সিদ্ধান্তের কথা তাদের জানাব। ’

বঙ্গোপসাগরের বিরোধপূর্ণ এলাকায় অনুসন্ধান কাজ চালানোর অনুমতি দেওয়া হলেও ভারত এবং মিয়ানমারের সঙ্গে বিরোধের মীমাংসার পরই কেবল কনোকো অনুসন্ধান চালাতে পারবে।

তবে তার আগে বিরোধহীন এলাকায় কনোকো তাদের অনুসন্ধান কাজ চালাতে পারবে বলে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক জ্বালানি বিভাগের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা জানিয়েছেন।

তিনি বলেন, ‘গভীর সমুদ্রের ১০ নম্বর ব্লকের বিরোধপূর্ণ এলাকায় অনুসন্ধান চালানোর বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তবে প্রতিবেশী দেশ দু’টির সঙ্গে বিরোধ মীমাংসার আগপর্যন্ত কনোকো-ফিলিপস বাকি এলাকায় অনুসন্ধান কাজ চালাবে। ’


আন্তর্জাতিক আদালতের রায় বাংলাদেশের পে এলে এ অঞ্চলে অনুসন্ধানের দায়িত্ব কনোকোই পাবে।
তবে বিরোধপূর্ণ অংশও পিএসসির (উৎপাদন বণ্টন চুক্তি) আওতায় থাকবে। এজন্য উভয় পরে মধ্যে একটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর করা হবে।

কনোকো ফিলিপস মোট আটটি ব্লকের জন্য দরপত্রে অংশ নিলেও প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে তাদের দু’টি ব্লক দেওয়া হয়। গভীর সমুদ্রের এ ব্লকগুলো হচ্ছে ১০ ও ১১ নম্বর।

জানা গেছে, দেড় বছরের বেশি সময় ধরে কনোকোর সঙ্গে জ্বালানি বিভাগ ও পেট্রোবাংলার আলোচনা চলছিল। ২০০৯ সালের ৫-৮ অক্টোবর দু’পরে মধ্যে প্রথম দফা এবং চলতি বছর ১৮ জানুয়ারি দ্বিতীয় দফা আনুষ্ঠানিক বৈঠক হয়।

এছাড়া উভয় পরে মধ্যে এ বিষয়ে বিভিন্ন সময়ে আরও কয়েক দফা আলোচনা হয়।

এসব বৈঠকে মার্কিন এ কোম্পানিটি গভীর সমুদ্রের এ দু’টি ব্লকের বিরোধপূর্ণ অংশে অনুসন্ধান কাজ দেওয়ার দাবি জানিয়ে আসছিল।

পাশাপাশি তারা তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় অন্য ছয়টি ব্লকেও (১২, ১৫, ১৬, ১৭, ২০ ও ২১) প্রতিযোগিতামূলক দরপত্রে অংশ নিয়ে যোগ্য বিবেচিত হয়। কিন্তু বর্তমান সরকার ক্ষমতায় এসে তা নাকচ করে দেয়।

উল্লেখ্য, গভীর সমুদ্রে গ্যাস অনুসন্ধানে বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক দরপত্র আহ্বান করার পর ভারত ৫ ও ১০ নং ব্লকে এবং মিয়ানমার ১১ নং ব্লকের সীমানা নিয়ে আপত্তি জানায়। উভয় দেশই বাংলাদেশের নির্ধারিত সীমাকে নিজেদের এলাকা বলে দাবি করে।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে বাংলাদেশ বিরোধপূর্ণ এলাকার সমাধান করতে ভারত ও মিয়ানমারের সঙ্গে আলোচনা করছে এবং বিরোধ নিষ্পত্তির জন্য জাতিসংঘের মাধ্যমে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

বাংলাদেশ সময় : ১৮৪৬, অক্টোবর ০৪, ২০১০

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।