ঢাকা: যুক্তরাজ্যের সঙ্গে বাণিজ্য বাড়াতে একসঙ্গে কাজ করবে ব্যবসায়ীদের র্শীষ সংগঠন দ্য ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বারস অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (এফবিসিসিআই) এবং দি হংকং অ্যান্ড সাংহাই ব্যাংকিং কর্পোরেশন লিমিটেড (এইচএসবিসি)।
এ উপলক্ষে সোমবার (১৯ জুন) বিকেলে রাজধানীর একটি হোটেলে চুক্তি সই করেছে এফবিসিসিআই ও এইচএসবিসি।
চুক্তির আওতায় যুক্তরাজ্য-বাংলাদেশের বাণিজ্যিক বাজারভিত্তিক একটি সমীক্ষা পরিচালনা করবে আর্নস্ট অ্যান্ড ইয়ং এবং কে এশিয়া। এই গবেষণার প্রাথমিক উদ্দেশ্য বাংলাদেশ ও যুক্তরাজ্যের মধ্যে বিদ্যমান বর্তমান দ্বিপাক্ষিক ব্যবসা ও বিনিয়োগের উন্নয়ন। দুই দেশের মধ্যে পারস্পরিক সহযোগিতার নতুন ক্ষেত্রগুলো খুঁজে বের করার লক্ষ্যে এই উদ্যোগের উদ্বোধন করা হয় ‘বাংলাদেশ-ইউকে বিজনেস করিডোর: লিগ্যাসি অ্যান্ড দ্য ফিউচার’ শীর্ষক আয়োজনে।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাণিজ্য মন্ত্রী টিপু মুনশি। তিনি বলেন, সমসাময়িক রপ্তানি নীতি ও দ্বিপাক্ষিক সুসর্ম্পকের মাধ্যমে যুক্তরাজ্যের সাথে আমাদের ব্যবসার পরিসর ক্রমেই বৃদ্ধি পেয়েছে। দেশটির সঙ্গে স্থাপিত চুক্তির মাধ্যমে এই সম্পর্ক ভবিষ্যতেও উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পাবে। এই ধরনের সমীক্ষা পরিচালনার উদ্যোগ গ্রহণে এইচএসবিসি এবং এফবিসিসিআইকে আমি ধন্যবাদ জানাই। নিঃসন্দেহে এই সমীক্ষা , দুদেশের ব্যবসা ও বিনিয়োগের নতুন নতুন সম্ভাবনাময় সুযোগ উন্মোচন করবে।
এফবিসিসিআই সভাপতি মো. জসিম উদ্দিন বলেন, যুক্তরাজ্য এবং বাংলাদেশের মানুষদের মধ্যে রয়েছে এক চমৎকার আত্মিক সম্পর্ক। যদিও বাংলাদেশের জন্য যুক্তরাজ্য একটি গুরুত্বপূর্ণ রপ্তানি গন্তব্য, বর্তমানে এই বাণিজ্যিক সম্পর্ক কিছু নির্দিষ্ট পণ্যের ওপর সীমাবদ্ধ। আমি মনে করি, উভয় দেশের নীতিনির্ধারক এবং ব্যবসায়িক নেতৃবৃন্দের এই বাণিজ্যিক সম্পর্কের উন্নয়ন ও বৈচিত্রকরণে একসাথে কাজ করা প্রয়োজন। ক্রমবর্ধমান ব্যবসা, বিনিয়োগ এবং অর্থনৈতিক সম্পর্কের উন্নয়নে এই সমীক্ষা একটি সময়োপযোগী উদ্যোগ।
এফবিসিসিআই সভাপতি বলেন, বাংলাদেশ ও যুক্তরাজ্যের মধ্যে বাণিজ্যের পরিমাণ বর্তমানে ৫.৪৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে দাঁড়িয়েছে। গত অর্থবছরে রপ্তানি ছিল ৪ দশমিক ৮৩ বিলিয়ন ডলার এবং আমদানি ছিল শূণ্য দশমিক ৬৩ বিলিয়ন ডলার। যুক্তরাজ্যে আমাদের রপ্তানি পণ্যগুলোর মধ্যে নিটওয়্যার, বোনা পোশাক, হিমায়িত মাছ, পোশাক এবং টেক্সটাইলের মতো কয়েকটি আইটেম উল্লেখ্যযোগ্য। তবে আমাদের রপ্তানি পণ্যে বৈচিত্র্য আনতে হবে।
তিনি বলেন, আমি বিশ্বাস করি যে এই গবেষণাটি যুক্তরাজ্য এবং বাংলাদেশের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক ব্যবসায়িক এবং অর্থনৈতিক সম্পর্কেও ক্ষেত্রে একটি উল্লেখযোগ্য মাইলফলক সৃষ্টি করবে, দু’দেশের বিনিয়োগকারী এবং উদ্যোক্তাদের মধ্যে একটি সেতুবন্ধন তৈরিতে কাজ করবে।
এইচএসবিসি বাংলাদেশের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মাহবুব উর রহমান যুক্তরাজ্য-বাংলাদেশের ব্যবসায়িক সম্পর্কের ঐতিহাসিক গুরুত্বের পাশাপাশি উভয় দেশের মধ্যে বাণিজ্য উন্নয়নে এইচএসবিসির সক্ষমতার নতুন মাত্রা তুলে ধরেন। তিনি আরও বলেন, যুক্তরাজ্য বাংলাদেশে দ্বিতীয় বৃহত্তম বিনিয়োগকারী এবং তৃতীয় বৃহত্তম রপ্তানি গন্তব্য। এই গবেষণা আমাদের নিজস্ব ব্যবসা ও বিনিয়োগ ব্যবস্থায় নতুন সম্ভাবনার সন্ধান পেতে সাহায্য করবে। এই যৌথ উদ্যোগের মাধ্যমে আমরা সেইসব সুযোগকে কাজে লাগিয়ে এগিয়ে যেতে পারি এক সমৃদ্ধ ভবিষ্যতের দিকে। আমাদের দুই দেশের মধ্যে বিদ্যমান সুসমন্বয় শুধুমাত্র আমাদের অর্থনীতিকেই উপকৃত করবে না, বরং একইসাথে একটি সুদীর্ঘ, টেকসই সম্পর্ক গড়তেও সাহায্য করবে। আমি এফবিসিসিআই, আর্নস্ট অ্যান্ড ইয়ং এবং কে এশিয়াকে ধন্যবাদ জানাই।
অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে আরও বক্তব্য দেন এইচএসবিসি এশিয়া প্যাসিফিকের চিফ অব স্টাফ ফিলিপ ফেলোয়েস; অনলাইনে অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন যুক্তরাজ্যে বাংলাদেশের হাইকমিশনার সাইদা মুনা তাসনিম। অনুষ্ঠানে পিডব্লিউসি বাংলাদেশের কান্ট্রি ক্লায়েন্টস্ অ্যান্ড মার্কেট লিড মামুন রশিদ-এর সঞ্চালনায় “আনলকিং নিউ অপরচুনিটিজ ফর বাংলাদেশ অ্যান্ড ইউকে” শীর্ষক প্যানেল আলোচনায় মন্তব্য ও মত বিনিময় করেন ফিলিপ চৌধুরী, ডিরেক্টর, কে এশিয়া; শাহুল স্যালি, সহযোগী পরিচালক, নেক্সট সোর্সিং লিমিটেড এবং ইফতি ইসলাম, চেয়ারম্যান, এশিয়ান টাইগার ক্যাপিটাল।
অনুষ্ঠানে এফবিসিসিআইয়ের সহ-সভাপতি, পরিচালকসহ ঊর্ধ্বতন সরকারি কর্মকর্তা, চেম্বার এবং ব্যবসায়ী প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
বাংলাদেশ সময়: ২১৪৭ ঘণ্টা, জুন ১৯, ২০২৩
এমকে