ঢাকা, সোমবার, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

‘বাংলাদেশে শিগগিরই কমোডিটি এক্সচেঞ্জ চালু হবে’

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫০৮ ঘণ্টা, জুলাই ২৫, ২০২৩
‘বাংলাদেশে শিগগিরই কমোডিটি এক্সচেঞ্জ চালু হবে’

ঢাকা: বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) কমিশনার ড. শেখ শামসুদ্দিন আহমেদ বলেছেন, কমোডিটি এক্সচেঞ্জ বাস্তবায়নে অনেক চ্যালেঞ্জ রয়েছে। এসব চ্যালেঞ্জ ও প্রতিবন্ধকতা কাটিয়ে উঠে কমোডিটি এক্সচেঞ্জের প্রতিষ্ঠায় বিএসইসি কাজ করছে।

বাংলাদেশে খুব শিগগিরই কমোডিটি এক্সচেঞ্জ চালু হবে।

মঙ্গলবার (২৫ জুলাই) রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বিএসইসির আয়োজনে ‘বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (কমোডিটি এক্সচেঞ্জ) বিধিমালা, ২০২৩’ এর খসড়া বিধিমালার ওপর মুখ্য প্রাতিষ্ঠানিক অংশীজনদের নিয়ে আয়োজিত কর্মশালায় সমাপনী বক্তব্যে তিনি একথা বলেন।

একটি সুষ্ঠু ও সুস্পষ্ট আইনি কাঠামোর মাধ্যমে কমোডিটি এক্সচেঞ্জের প্রতিষ্ঠার বিষয়ে উল্লেখ করে শেখ শামসুদ্দিন আহমেদ বলেন, দেশের বিনিয়োগকারীদের নিরাপদ বিনিয়োগের প্ল্যাটফর্ম উপহার দিতে চাই আমরা। এটি বাস্তবায়নে অনেক চ্যালেঞ্জ রয়েছে এবং চ্যালেঞ্জ ও প্রতিবন্ধকতা কাটিয়ে উঠে কমোডিটি এক্সচেঞ্জের প্রতিষ্ঠায় বিএসইসি কাজ করছে। বাংলাদেশে খুব শিগগিরই কমোডিটি এক্সচেঞ্জ চালু করা হবে।

তিনি বলেন, দেশের আর্থিক বাজারের জন্য কমোডিটি এক্সচেঞ্জ প্ল্যাটফর্মের ধারণাটি নতুন এবং বাংলাদেশের মতো বৃহৎ বাজার বিবেচনায় এদেশে কমোডিটি এক্সচেঞ্জের সম্ভাবনা অনেক। কমোডিটি এক্সচেঞ্জ চালুর মাধ্যমে দেশের অর্থনীতিতে উন্নয়নের এক নতুন মাত্রা যোগ হবে।

কর্মশালায় বিএসইসির কমিশনার ড. রুমানা ইসলাম বলেন, বাংলাদেশে কমোডিটি এক্সচেঞ্জ প্রতিষ্ঠার জন্য বাংলাদেশ বিএসইসি দীর্ঘদিন ধরে কাজ করছে। এ সম্ভাবনাকে কাজে লাগিয়ে দেশের পুঁজিবাজারের উন্নয়ন সাধন করতে হবে।

তিনি বলেন, কমোডিটি এক্সচেঞ্জের অবারিত সম্ভাবনা রয়েছে এবং সেই সম্ভাবনাকে কাজে লাগিয়ে দেশের পুঁজিবাজারের উন্নয়ন সাধন করতে হবে। এজন্য তিনি সংশ্লিষ্ট সবার সহায়তা কামনা করেন।

কর্মশালায় ‘Commodity Exchange: Prospects and Challenges’ শীর্ষক মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বিএসইসির নির্বাহী পরিচালক মোহাম্মদ রেজাউল করিম। তিনি ডেরিভেটিভস ও ডেরিভেটিভস মার্কেটের ধারণা, কমোডিটি এক্সচেঞ্জের প্রোডাক্ট ও তার লেনদেন, বাংলাদেশে কমোডিটি ডেরিভেটিভস মার্কেটের সুযোগ-সম্ভাবনা, এক্সচেঞ্জে কমোডিটি ডেরিভেটিভের ট্রেডিং মেকানিজম, কমোডিটি ডেরিভেটিভসমূহের ট্রেডিংয়ের ক্লিয়ারিং ও সেটলমেন্ট প্রক্রিয়া ইত্যাদি বিষয়ে আলোচনা করেন। এছাড়া বাংলাদেশে কমোডিটি ডেরিভেটিভস মার্কেট চালু করার ক্ষেত্রে বিদ্যমান চ্যালেঞ্জসমূহ ও তাদের সম্ভাব্য সমাধানসমূহের বিষয়ে আলোকপাত করেন তিনি।

‘বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (কমোডিটি এক্সচেঞ্জ) বিধিমালা, ২০২৩’ এর খসড়া বিধিমালার সংক্ষিপ্তসার: বিধিমালার প্রথম অধ্যায়ে বিধিমালার সংক্ষিপ্ত শিরোনাম ও প্রয়োগ এবং বিধিমালায় ব্যবহৃত বিভিন্ন টার্মের সংজ্ঞা দেওয়া হয়েছে।  

দ্বিতীয় অধ্যায়ে কমোডিটি এক্সচেঞ্জের রেজিস্ট্রেশন প্রক্রিয়া, কমোডিটি এক্সচেঞ্জের দায়িত্বসমূহ, এর নিয়ন্ত্রণ ও পরিপালন, কমোডিটি এক্সচেঞ্জ শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের ক্ষমতা, কমোডিটি এক্সচেঞ্জের রেজিস্ট্রেশন সাসপেনশন বা বাতিল এবং এক্সচেঞ্জের হিসাব ও নিরীক্ষা সংক্রান্ত বিষয়ে বলা রয়েছে।  

তৃতীয় অধ্যায়ে ক্লিয়ারিং হাউস ও এর রেজিস্ট্রেশন সম্পর্কে বলা হয়েছে। চতুর্থ অধ্যায়ে কমোডিটি এক্সচেঞ্জে অংশগ্রহণকারী যেমন কমোডিটি ডেরিভেটিভস ব্রোকার ও কমোডিটি অনুমোদিত প্রতিনিধিদের রেজিস্ট্রেশন প্রক্রিয়া এবং রেজিস্ট্রেশন ও নবায়ন ফি সম্পর্কে বলা হয়েছে।  

পঞ্চম অধ্যায়ে নিবন্ধিত ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের আচরণের মানদণ্ড ও নিয়ন্ত্রিত ক্রিয়াকলাপের পরিচালনা সম্পর্কে বলা হয়েছে। ষষ্ঠ অধ্যায়ে নিবন্ধিত ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের হিসাব ও নিরীক্ষার বিষয়ে বলা রয়েছে। সপ্তম অধ্যায়ে ইনসাইডার ট্রেডিং সংক্রান্ত বিধানাবলী সংযোজিত রয়েছে। অষ্টম অধ্যায়ে ফলস ট্রেডিং, বাকেটিং, প্রাইস ম্যানিপুলেশনসহ অন্যান্য বাজার অপব্যবহার সম্পর্কিত বিধানসমূহ উল্লেখ করা হয়েছে।  

নবম অধ্যায়ে কমোডিটি এক্সচেঞ্জ ও এ বাজারের সুপারভিশন ও ইনভেস্টিগেশন সম্পর্কিত বিধানাবলী সংযোজিত রয়েছে। দশম অধ্যায়ে রেজিস্ট্রারড ব্যক্তিদের কার্যক্রমের নিয়ম ও ডিসিপ্লিনারি অ্যাকশন সম্পর্কিত বিধানসমূহ দেওয়া হয়েছে।  

এছাড়া একাদশতম অধ্যায়ে কমিশনের পূর্বানুমতি সাপেক্ষে কমোডিটি এক্সচেঞ্জ রেগুলেশন ও গাইডলাইন তৈরির ক্ষেত্রে বিবেচ্য ক্ষেত্রসমূহসহ অন্যান্য বিষয়ে উল্লেখ করা হয়েছে।

বিএসইসির মাল্টিপারপাস হলে আয়োজিত কর্মশালায় বাংলাদেশ ব্যাংক, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়, অর্থ মন্ত্রণালয়, শিল্প মন্ত্রণালয়, কৃষি মন্ত্রণালয়, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ট্যারিফ কমিশন, এক্সপোর্টি প্রমোশন ব্যুরো, জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর, এফবিসিসিআই, ডিসিসিআই, বিজিএমইএ, ডিএসই, সিএসই, সিডিবিএস, সিসিবিএল, ডিএসই ব্রোকার্স অ্যাসোসিয়েশন, বাংলাদেশ মার্চেন্ট ব্যাংকার্স অ্যাসোসিয়েশন, বসুন্ধরা গ্রুপ ও মেঘনা গ্রুপসহ ব্যাংক এবং সংশ্লিষ্ট আরও অনেক প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিরা অংশগ্রহণ করেন।

অনুষ্ঠানে খসড়া বিধিমালার ওপর প্রেজেন্টেশন উপস্থাপন করেন বিএসইসির পরিচালক মো. আবুল কালাম ও বিএসইসির উপ-পরিচালক মুহাম্মদ ওয়ারিসুল হাসান রিফাত।  

বাংলাদেশ সময়: ১৫০৭ ঘণ্টা, জুলাই ২৫, ২০২৩
এসএমএকে/আরবি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।