ঢাকা, মঙ্গলবার, ৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ শাওয়াল ১৪৪৫

অর্থনীতি-ব্যবসা

পুঁজিবাজারে বড় ধরনের দরপতন

গোলাম সামদানী, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮১৩ ঘণ্টা, অক্টোবর ১০, ২০১০
পুঁজিবাজারে বড় ধরনের দরপতন

ঢাকা: টানা ১১ দিন ঊর্ধমুখী থাকার রোববার পুঁজিবাজারে বড় ধরনের দরপতন হয়েছে। এদিন ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) ও চট্রগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) লেনদেন হওয়া বেশির ভাগ কোম্পানির শেয়ারের দাম কমেছে।

সেই সঙ্গে কমেছে সব সূচক ও বাজার মূলধন।

অবশ্য এই দরপতনকে স্বাভাবিক হিসেবেই দেখছেন বাজার বিশ্লেষকরা। তাদের মতে টানা ঊর্ধমুখী থাকার পর বাজারে মূল্য সংশোধন হওটা জরুরি ছিল।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষক ও পুঁজিবাজার বিশ্লেষক অধ্যাপক আবু আহমেদ বাংলানিউজকে বলেন, ‘টানা ঊর্ধমুখীর পর আজ (রোববার) বাজারে স্বাভাবিক মূল্য সংশোধন হয়েছে। এ নিয়ে বিনিয়োগকারীদের আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। ’

তিনি আরও বলেন, বাজারে মূল্য সংশোধন হওয়ার পেছনে দুটি বিষয় কাজ করেছে, প্রথমটি ডিএসই ও সিএসই সভাপতির গতকালের সংবাদ সম্মেলন এবং রোববার মার্জিন লোন সংক্রান্ত মামলায় আপিল বিভাগের রায় এসইসির পক্ষে যাওয়া। ’     

অন্যদিকে ডিএসই সভাপতি মো. শাকিল রিজভী বলেন, বাজারে মূল্য সংশোধন হওয়াটা পুঁজিবাজারের স্বার্থেই জরুরী ছিল। এটি আরো আগে হলে ভালো হতো। তবে দেরিতে হলেও বাজার স্বাভাবিকভাবে কারেকশন হয়েছে। এটি বাজারের জন্য ভালো দিক।

অন্যদিকে, বিনিয়োগকারী আলাউদ্দিন আহমেদ বিজভী বাংলানিউজকে বলেন, ‘শেয়ারবাজার তার স্বাভাবিক নিয়মেই কারেকশন হবে। কিন্তু আজ ডিএসই ও সিএসই সংবাদ সম্মেলন করে এক প্রকার জোর করে বাজারের কারেকশন করেছে। এটা ঠিক হয়নি। এতে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে এক ধরনের আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। ’     

এদিন ডিএসইতে সাধারণ মূল্যসূচক আগের দিনের চেয়ে ১৮৭ দশমিক ৭৯ পয়েন্ট কমে ৭ হাজার ২৯২ দশমিক ৫৪ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। এটি গত ২৫ জুলাইয়ের পর একদিনে সর্বো”” সূচক পতন। ওইদিন ডিএসইতে সাধারন মূল্যসূচক ২০৪ পয়েন্ট কমেছিল।

লেনদেন হওয়া ২৪০টি কোম্পানির মধ্যে দাম বেড়েছে মাত্র ২৫ টির, কমেছে ২১২ টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ৩টি শেয়ার। দিনশেষে লেনদেনের পরিমাণ ২ হাজার ৩৬৪ কোটি ৭৬ লাখ ৩৩ হাজার ২৫০ টাকা যা আগের দিনের চেয়ে ৪৩৬ কোটি ৩৩ লাখ টাকা কম।

রোববারের আগে ডিএসইতে গত ২৩ সেপ্টেম্বর থেকে ৭ অক্টোবর পর্যন্ত ১১ কার্যদিবসে সাধরাণ মূল্যসূচক ৫৯৮ পয়েন্ট বেড়ে যায়। এই সময়ে বাজার মূলধন বাড়ে ১৮ হাজার ১৭২ কোটি টাকা। বাজারের এই ঊর্ধমুখীতে এসইসি বাজার নিয়ন্ত্রণে বিভিন্ন পদক্ষেপ নেয়। এসইসির এসব পদক্ষেপ আইনি বাধার সম্মুখীন হয়।

তবে আজ সর্বোচ্চ আদালত এসইসির মার্জিন লোন সংক্রান্ত সিদ্ধান্ত বহাল রাখায় বাজারে মূল্য সংশোধন হয়েছে।

সিএসইতেও এদিন লেনদেন হওয়া ১৮২টি কোম্পানির মধ্যে দাম বেড়েছে মাত্র ২৫টির, কমেছে ১৫১টির এবং ৬টির দাম অপরিবর্তিত ছিল। দিনশেষে লেনদেনের পরিমাণ দাঁড়ায় ২১৭ কোটি টাকা৫৬ লাখ ৬ হাজার টাকা, যা আগের দিনের চেয়ে ৬ কোটি ৮৯ লাখ  ৫৬ হাজার ৯৫৭ টাকা কম। সাধারণ মূল্যসূচক আগের দিনের চেয়ে ২ দশমিক ৫৮৬৩ শতাংশ  কমে ২১ হাজার ২৪৫ দশমিক ৬৭৬৭ পয়েন্টে দাঁড়ায়।

উভয় স্টক এক্সচেঞ্জে সূচক ও বেশির ভাগ কোম্পানির শেয়ারের দাম কমলেও আর্থিক লেনদেন তেমন একটা কমেনি। এদিন বেশির ভাগ বিনিয়োগকারী ব্যাংকের শেয়ারের দিকে ঝুঁকে পড়ে। ফলে দিনশেষে উভয় স্টক এক্সচেঞ্জে লেনদেনের শীর্ষ ১০ কোম্পানির তালিকায় বেশির ভাগই ছিল ব্যাংকিং খাতের শেয়ার।

বাংলাদেশ সময়: ১৭৩৫ ঘণ্টা, অক্টোবর ১০, ২০১০

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
welcome-ad