ঢাকা, শনিবার, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫

অর্থনীতি-ব্যবসা

বৈদেশিক সাহায্য ব্যবস্থাপনা নীতি প্রণয়নে ধীরগতি

সোহেল রহমান, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭৪১ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৩, ২০১০
বৈদেশিক সাহায্য ব্যবস্থাপনা নীতি প্রণয়নে ধীরগতি

ঢাকা: সরকার বৈদেশিক সাহায্য ব্যবস্থাপনা নীতি ও কৌশল প্রণয়নের উদ্যোগ নিলেও জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ এই নীতিমালা প্রণয়নের কাজ চলছে ঢিমেতালে। নীতিমালা চূড়ান্ত হতে আরও বছরখানেক লাগতে পারে বলে ‘অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ’ (ইআরডি) সূত্রে জানা গেছে।



অথচ স্বাধীনতার পর থেকে বিদেশ থেকে ঋণ ও অনুদান গ্রহণ এবং পরিশোধের ধারা অব্যাহত থাকলেও প্রথমবারের মতো এ সংক্রান্ত একটি নীতিমালা প্রণয়নের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

উল্লেখ্য, বর্তমানে দেশে বৈদেশিক সাহায্য ব্যবস্থাপনা সংক্রান্ত কোনো নীতিমালা নেই। অথচ সাহায্য গ্রহীতা প্রায় সব দেশেই এ সংক্রান্ত সমন্বিত নীতি-কাঠামো রয়েছে।

বাংলাদেশের কোনো নিজস্ব নীতিমালা না থাকায় একদিকে যেমন উন্নয়ন সহযোগীদের সঙ্গে সরকারের কাঠামোগত চুক্তিগুলো (ফ্রেমওয়ার্ক এগ্রিমেন্ট) একেকটি একেক ধরনের হয়ে যাচ্ছে। অন্যদিকে সাহায্য ব্যবস্থাপনা ও তহবিল ব্যবহারে নানা সমস্যা সৃষ্টি হচ্ছে।

পাশাপাশি অনেক ক্ষেত্রে বৈদেশিক সাহায্য সংক্রান্ত বিষয়ে চটজলদি কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়াও সম্ভব হয় না। ফলে দাতাদের চাপিয়ে দেওয়া শর্ত সরকারের মেনে নেওয়া ছাড়া কোনো উপায়ও থাকেনা।
 
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, নীতিমালা প্রণয়নে এরই মধ্যে রুয়ান্ডা ও ভিয়েতনামসহ ছয়টি দেশের এ সংক্রান্ত নীতি পর্যালোচনা করে একটি প্রাথমিক খসড়া তৈরি করেছে ইআরডি।

প্রাথমিক খসড়ার ব্যাপারে সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও উন্নয়ন সহযোগীদের কাছ থেকে পরামর্শ পাওয়ার পর একটি ‘এইড ম্যানেজমেন্ট রিভিউ’ ও ‘এইড ম্যানেজমেন্ট ক্যাপাসিটি এসেসমেন্ট’ চূড়ান্ত করা হবে। পরবর্তীতে বৈদেশিক সাহায্য ব্যবস্থাপনা নীতি ও কৌশল চূড়ান্ত করতে সরকার প্রয়োজনে একটি কমিটি গঠন করতে পারে।
 
ইআরডি’র তৈরি প্রাথমিক খসড়ায় বলা হয়েছে, এ ধরনের নীতি প্রণয়নের উদ্দেশ্য হচ্ছে জাতীয় উন্নয়ন কৌশলের সঙ্গে বৈদেশিক সাহায্যকে সমন্বয় করা, বৈদেশিক সাহায্যের দেশিয় ব্যবহার, বৈদেশিক সাহায্যের উন্নয়ন মূল্যকে কমিয়ে দেয় এমন বিষয়গুলো কমিয়ে আনা, পরিচালন ব্যয় কমানোর উদ্যোগ গ্রহণ, বৈদেশিক সাহায্যের শর্ত কমিয়ে আনা ও সরকার-উন্নয়ন সহযোগী যৌথ এসেসমেন্ট ফ্রেমওয়ার্কের উদ্যোগ নেওয়া ইত্যাদি।
 
পাশাপাশি বৈদেশিক সাহায্য ব্যবস্থাপনা নীতিতে যে সব গুরুত্বপূর্ণ বিষয় অন্তর্ভুক্ত থাকতে পারে তার মধ্যে রয়েছে সাহায্যের অগ্রাধিকার নির্ণয়ের মানসমূহ নির্ধারণ, বৈদেশিক সাহায্যের কৌশলের কাঠামো, আর্থিক শর্ত ও ব্যবস্থাপনা, তহবিল পরিচালনা, এনজিওদের মাধ্যমে সাহায্য ব্যবহার, কারিগরি সহায়তার (টিএ) নিয়ম, সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোর ভূমিকা, দাতাদের কাছ থেকে সাহায্য সংগ্রহের বিষয় ব্যবস্থাপনা, বিদেশি তহবিলের স্থায়িত্ব, তদারকি ও মূল্যায়ন, সরকার ও উন্নয়ন সহযোগী সংস্থার মধ্যে সংলাপের কৌশল, সরকার ও দাতা উভয়ের জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা ইত্যাদি।

এদিকে দেশে বৈদেশিক সাহায্য ব্যবস্থাপনা নীতি ও কৌশল না থাকলেও বাংলাদেশের জন্য আগামী চার বছরে সহায়তা দেওয়ার বিষয়ে এরই মধ্যে কৌশলপত্র তৈরি করেছে বিশ¡ব্যাংক।

‘দেশভিত্তিক সহায়তা কৌশলপত্র’ (সিএএস) শীর্ষক এই প্রতিবেদন বিশ¡ব্যাংকের পরিচালনা পরিষদ অনুমোদনও করেছে। এই কৌশলপত্রের আওতায় ২০১০-১১ থেকে ২০১৪-১৫ সাল পর্যন্ত বিশ্বব্যাংক বাংলাদেশকে ৬শ’ ৫৫ কোটি ডলার ঋণ সহায়তা দেবে।

প্রসঙ্গত, গত ২০০৯-১০ অর্থবছরে উন্নয়ন সহযোগীদের কাছ থেকে বাংলাদেশ মোট ২শ’ ১৫ কোটি ডলার আর্থিক সহায়তা পেয়েছে। এর মধ্যে একশ ৫৯ কোটি ৬৭ লাখ ডলার এসেছে অনুদান হিসেবে। বাকি অর্থ এসেছে ঋণ হিসেবে।

বাংলাদেশ সময়: ১৭২০ ঘণ্টা, ২৩ অক্টোবর, ২০১০

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।