ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৭ রমজান ১৪৪৫

অর্থনীতি-ব্যবসা

খুলনায় বাংলাদেশ কেবল শিল্প লিমিটেড-এ অপটিক্যাল ফাইবার তৈরির উদ্যোগ

শেখ হেদায়েতুল্লাহ, জেলা প্রতিনিধি | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮১৬ ঘণ্টা, নভেম্বর ১, ২০১০
খুলনায় বাংলাদেশ কেবল শিল্প লিমিটেড-এ অপটিক্যাল ফাইবার তৈরির উদ্যোগ

খুলনা: দেশের একমাত্র রাষ্ট্রায়ত্ত্ব টেলিফোন ক্যাবল প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান ‘বাংলাদেশ ক্যাবল শিল্প লিমিটেড প্রথমবারের মত অপটিক্যাল ফাইবার ক্যাবল তৈরির উদ্যোগ নিয়েছে।

সবকিছু ঠিক থাকলে ডিসেম্বর থেকেই এ প্রতিষ্ঠান থেকে অপটিক্যাল ফাইবার কেবল উৎপাদন শুরু হবে।

এর ফলে কোটি কোটি টাকা ব্যয়ে আর বিদেশ থেকে এ ক্যাবল আমদানি করতে হবে না।

প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপক (উৎপাদন) এস এম জাকির হোসেন বাংলানিউজকে জানান, দেশে উৎপাদিত না হওয়ায় বর্তমানে খোদ বিটিসিএলকেও বিদেশ থেকে অপটিক্যাল ফাইবার আমদানি করতে হয়। তবে খুলনায় প্লান্ট স্থাপন হলে কোটি কোটি টাকা ব্যয়ে আর বিদেশ থেকে অপটিক্যাল ফাইবার আমদানি করতে হবে না।

প্রতিষ্ঠানের অর্থ ও বাণিজ্য বিভাগের ব্যবস্থাপক মোস্তাফিজুর রহমান বাংলানিউজকে জানান, অপটিক্যাল ফাইবার প্লান্ট স্থাপনে প্রায় ১০ কোটি টাকা ব্যয় হবে। চীন থেকে অপটিক্যাল ফাইবার তৈরির অত্যাধুনিক মেশিনসহ প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি আমদানির জন্য গত এপ্রিলের শেষ দিকে এলসি খোলা হয়েছে। সপ্তাহ খানেকের মধ্যে এসব যন্ত্রপাতি দেশে পৌঁছে যাবে।

যন্ত্রপাতি পৌঁছানোর পর তা দ্রুত স্থাপন শেষে আগামী ডিসেম্বর থেকেই অপটিক্যাল ফাইবার তৈরির কাজ শুরু হবে বলে কর্তৃপ আশা করছে।
 
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, এ প্রতিষ্ঠানে বর্তমানে ২৪০ জন কর্মকর্তা-কর্মচারি ও শ্রমিক কর্মরত রয়েছেন। প্লান্ট স্থাপনের পর আরও অভিজ্ঞ জনবল নিয়োগসহ বর্তমান কর্মরতদের মধ্য থেকে কয়েকজনকে অপটিক্যাল ফাইবার ক্যাবল তৈরির ওপর বিশেষ প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে।

দুই শিফটে প্লান্ট চালানো হলে বছরে প্রায় ছয় হাজার কিলোমিটার ফাইবার কেবল তৈরি করা সম্ভব হবে। এ শিল্প প্রতিষ্ঠানে ভবিষ্যতে বিভিন্ন প্রকার বৈদ্যুতিক তার উদপাদনের পরিকল্পনা রয়েছে।

খুলনা নগরীর শিরোমনি শিল্পাঞ্চলের ভৈরব নদের তীরে প্রায় ৩২ একর জমির ওপর গড়ে উঠেছে বাংলাদেশ কেবল শিল্প লিমিটেড। ১৯৭০ সালে সরকারের ৯৪.৩০ শতাংশ ও জার্মানির সিমেন্স কোম্পানির ৫.৭০ শতাংশ মালিকানায় এ প্রতিষ্ঠানে পরীক্ষামূলক উৎপাদন শুরু হয়।

১৯৭২ সালে প্রতিষ্ঠানটি বাণিজ্যিকভাবে উৎপাদন শুরু করে। এরপর থেকেই প্রতিষ্ঠানটি বাংলাদেশ তার ও টেলিফোন বোর্ডের (বর্তমানে বিটিসিএল) সকল প্রকার টেলিফোন ক্যাবলের চাহিদা পূরণ করে আসছে।

এক সময় প্রতিষ্ঠানে উদপাদিত তার বা ক্যাবল দেশের চাহিদা পূরণ করে বিদেশেও রপ্তানি হতো। কিন্তু গত কয়েক বছর ধরে দেশে মোবাইল ফোনের চাহিদা ব্যাপকহারে বৃদ্ধি পায়। এর বিরূপ প্রভাব পড়ে ল্যান্ড টেলিফোন ব্যবহারের ওপর। একইসঙ্গে কমতে থাকে কপার ক্যাবলের চাহিদাও। ফলে দেশের একমাত্র রাষ্ট্রায়ত্ত্ব প্রতিষ্ঠানটির উৎপাদনও আশঙ্কাজনকভাবে কমে যায়।

এ অবস্থায় পরিচালনা পরিষদ, ব্যবস্থাপনা কর্তৃপ ও সিবিএ যৌথভাবে এ প্রতিষ্ঠানটিকে লোকসানের হাত থেকে বাঁচানোর উদ্যোগ গ্রহণ করে। টেলিফোনের তার তৈরির পাশাপাশি অন্য কোনো প্লান্ট স্থাপন করা যায় কি না তা নিয়ে শুরু হয় ব্যাপক সমীক্ষা।

বাংলাদেশ সাবমেরিন ক্যাবল কোম্পানি লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালককে প্রধান ও ক্যাবল শিল্প লিমিটেডের একজন উর্ধ্বতন প্রকৌশলীকে উপপ্রধান করে একটি কমিটি গঠন করা হয়। কমিটি যাচাই-বাছাই করে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপরে কাছে রিপোর্ট জমা দেয়।

রিপোর্টে অপটিক্যাল ফাইবার ক্যাবল প্লান্ট স্থাপনের পে মতামত দেওয়া হয়। গত বছর ২৩ মে বাংলাদেশ ক্যাবল শিল্প লিমিটেডের পরিচালনা পরিষদের এক সভায় অপটিক্যাল ফাইবার প্লান্ট স্থাপনের বিষয়টি অনুমোদন করা হয়।

বাংলাদেশ সময়: ১৭১০ ঘণ্টা, নভেম্বর ১, ২০১০

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।