ঢাকা, শুক্রবার, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৮ রমজান ১৪৪৫

অর্থনীতি-ব্যবসা

ভারতের কাছ থেকে অবশ্যই ট্রানজিট ফি নেওয়া হবে: দীপু মনি

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭১৪ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৫, ২০১০
ভারতের কাছ থেকে অবশ্যই ট্রানজিট ফি নেওয়া হবে: দীপু মনি

ঢাকা: ট্রানজিটের জন্য বাংলাদেশের ভূখণ্ড ব্যবহারের জন্য ভারতকে অবশ্যই ফি দিতে হবে। এ মুহূর্তে  এই ফি নির্ধারণের কাজ চলছে।



পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডা. দীপু মনি সোমবার বিকালে মন্ত্রণালয়ে এক নিয়মিত সংবাদ ব্রিফিংয়ে এ কথা বলেন।

দীপু মনি বলেন, ‘বিদ্যমান নৌ-প্রটোকলের বাইরে আর কোন কোন খাতে কি হারে ফি নেওয়া হবে অর্থ মন্ত্রণালয় তা চূড়ান্ত করছে। ’

পররাষ্ট্রমন্ত্রী আরও জানান, ভারতকে ট্রানজিট সুবিধা দেওয়ার পর উত্তর পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যগুলোর সঙ্গে আমদানি-রপ্তানির পরিমাণ কত হবে এবং তা বাংলাদেশের আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্যে কী প্রভাব ফেলবে তা খতিয়ে দেখে বাস্তব সম্মত ট্রানজিট ফি নির্ধারণ করতে হবে। ভারতের সঙ্গে দরকষাকষি করে এই ফি চূড়ান্ত করা হবে।   উইন-উইন সিচুয়েশনের (উভয় দেশেরই যাতে লাভ হয়) ভিত্তিতে এটা নির্ধারণ করা হবে।

নতুন করে ট্রানজিট ফি নির্ধারণের কথা মাথায় রেখেই সম্প্রতি জারি করা এনবিআরের এসআরওটি বাতিল করা হয়েছে বলেও তিনি জানান।

দীপু মনি বলেন, বিদ্যমান নৌ-প্রটোকলের আওতায় যে ধরনের কাজ হয় সে অনুযায়ী ফি আদায় করা হচ্ছে। কিন্তু ট্রানজিটের আওতায় এর বাইরে আরও অনেক বিষয় আছে।

ট্রানজিটের আওতায় যেসব বিষয় নতুন যুক্ত হবে সেগুলোর জন্য কোন হারে ফি আদায় করা হবে তা নির্ধারণ করতে হবে। এসব ফি নির্ধারণের আগে নতুন করে কোনো ফি চাপিয়ে দেওয়া হবে না।

মালয়েশিয়ার শ্রমবাজার:

বন্ধ করে দেওয়া কলিং ভিসা চালু না করলেও মালয়েশিয়া বিশেষ ক্যাটাগরিতে বাংলাদেশ থেকে শ্রমিক নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে। শিগগিরই এ প্রক্রিয়া শুরু হবে।

দীপু মনি বলেন, জনশক্তি রপ্তানিকারকরা সব সময় বৈধ পথ অনুসরণ না করায় সাধারণ অভিবাসীরা প্রতারণার শিকার হচ্ছেন। জনশক্তি রপ্তানিকারকদের প্রতারণা বন্ধ করা এবং সম্ভাব্য অভিবাসীদের সচেতন করার জন্য সরকার কাজ করছে।

মালয়েশিয়া দূতাবাস প্রবাসীদের পাশে দাঁড়ায় না বলে যে অভিযোগ রয়েছে সে প্রসঙ্গে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, সেখানে পাঁচ লাখ প্রবাসীর জন্য দূতাবাসে মাত্র কয়েকজন কর্মকর্তা রয়েছে। দূতাবাসগুলোতে জনবলের অভাব রয়েছে। আবার মন্ত্রণালয়েও জনবলের অভাব থাকায় লোক নিয়োগ দেওয়া যাচ্ছেনা। জনবল বাড়ানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

ত্রিপুরা-সফর প্রসঙ্গ:

ত্রিপুরার মূখ্যমন্ত্রী মানিক সরকার ঢাকা-চট্টগ্রাম-আগরতলার মধ্যে সরাসরি বিমান যোগাযোগ স্থাপনের প্রস্তাব দিয়েছেন বলে দীপু মনি সাংবাদিকদের জানান।

তিনি বলেন, তার সাম্প্রতিক ত্রিপুরা সফরের সময় দ্বিপাক্ষিক আলোচনার সময় মানিক সরকার এ প্রস্তাব দেন।

এছাড়া ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার সম্মত হলে পালাটানা বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে ত্রিপুরা রাজ্য সরকার বাংলাদেশে একশ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ রপ্তানি করবে বলেও মূখ্যমন্ত্রী জানান।

দীপু মনি বলেন, ত্রিপুরার সঙ্গে সড়ক ও রেল যোগাযোগ এবং চট্টগ্রাম ও মংলা বন্দর ব্যবহার নিয়েও বৈঠকে আলোচনা হয়। ত্রিপুরার ব্যবসায়ীরাও চট্টগ্রাম ও মংলা বন্দর ব্যবহারে আগ্রহ দেখিয়েছেন।

এছাড়া বাংলাদেশের ভেতর দিয়ে প্রবাহিত আন্ত:সীমান্ত নদীগুলোর অববাহিকায় যেসব দেশ রয়েছে তাদের সমন্বয়েই এসব নদীর ব্যবস্থাপনার উপর জোর দিয়েছেন দীপু মনি। ত্রিপুরাও এ প্রস্তাবে একমত হয়েছে।

গভীর সমুদ্রবন্দর নির্মাণে ভারতের সহায়তা প্রসঙ্গ:

ত্রিপুরা সফরে দীপু মনি বঙ্গোপসাগরে গভীর সমুদ্র নির্মাণে ভারতের অংশগ্রহণ ও সহায়তা চেয়েছেন।

এ বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, গভীর সমুদ্রবন্দরকে টেকসই করতে হলে প্রতিবেশী সব দেশের ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে।

তিনি আরও জানান, চীনের কারিগরি দক্ষতা আছে তারা সমুদ্রবন্দর নির্মাণে সহায়তা করতে পারে। গভীর সমুদ্রবন্দরকে আঞ্চলিক ‘হাব’ করতে হলে ভারতসহ প্রতিবেশিদেরও এর সঙ্গে যুক্ত করতে হবে। তাই যারা এ বন্দর ব্যবহার করবে নির্মাণ প্রক্রিয়ার সঙ্গে তাদের যুক্ত করতে পারলে ভাল হবে।

যৌথ সীমান্ত ওয়ার্কিং গ্রুপের বৈঠক প্রসঙ্গে:

গত ১০ ও ১১ নভেম্বর ভারতের নয়াদিল্লিতে অনুষ্ঠিত যৌথ সীমান্ত ওয়ার্কিং গ্রুপের বৈঠক প্রসঙ্গে দীপু মনি বলেন, বৈঠকে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হয়েছে। আশা করি, শিগগিরই সচিব পর্যায়ের বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে।

মুজিব-ইন্দিরা চুক্তির আলোকে শিগগির সীমান্ত সংক্রান্ত দীর্ঘ অমীমাংসিত বিষয়গুলোর সমাধান হবে বলেও দীপু মনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৯৩১ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৫, ২০১০

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।