ঢাকা, শুক্রবার, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৮ রমজান ১৪৪৫

অর্থনীতি-ব্যবসা

আন্তর্জাতিক বাজারে এক বছরে চামড়ার দাম বেড়েছে ২৫ শতাংশ

সাইদ আরমান/মসিউর আহমেদ মাসুম | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১১৫৩ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৮, ২০১০
আন্তর্জাতিক বাজারে এক বছরে চামড়ার দাম বেড়েছে ২৫ শতাংশ

ঢাকা: আন্তর্জাতিক বাজারে চামড়ার দাম বেশ চড়া। ২০০৮-২০০৯ অর্থবছরের তুলনায় ২০০৯-২০১০ অর্থবছরে চামড়াজাত পণ্য রপ্তানিতে প্রবৃদ্ধি হয়েছে ২৭ শতাংশ।

চলতি বছর চামড়ার চাহিদাও অনেক বেশি। তাই এবার চামড়া ব্যবসায় জড়িত সংগঠনগুলোর বেঁধে দেওয়া দামের তুলনায় বেশি দামেই বিক্রি হচ্ছে কোরবানির পশুর চামড়া।

বিশ্ব অর্থনৈতিক মন্দার কারণে আন্তর্জাতিক বাজারে চামড়ার চাহিদা কমে যাওয়ায় গতবছর কোরবানি পশুর চামড়ার চাহিদা ছিল খুবই কম। ফলে স্বাভাবিকভাবেই চামড়ার দামও পড়ে গিয়েছিল। অনেককে তখন বলা যায় পানির দামেই চামড়া বিক্রি করতে হয়েছিল।

তবে বিশ্বমন্দা কাটতে শুরু করায় আন্তর্জাতিক বাজারে চামড়ার চাহিদা বাড়লেও গত তিন মাসে চামড়ার সরবরাহ ছিল কম। অ্যানথ্রাক্স আতংকে পশুজবাই প্রায় বন্ধ থাকায় এই পরিস্থিতি হয়েছিল বলে জানান সংশ্লিষ্টরা। এর প্রভাব পড়ে চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য রপ্তানিতে। কমে যায় রপ্তানি।

ঈদের আগেভাগে অ্যানথ্রাক্স আতংক কেটে যাওয়ায় এবার প্রচুর পশু জবাই হয়েছে। এতে চামড়া শিল্পে যে অনিশ্চয়তা বিরাজ করছিল তা অনেকটাই কাঠিয়ে ওঠা সম্ভব বলে মনে করেন বাংলাদেশ ট্যানার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মো. শাহীন আহমেদ।

তিনি বাংলানিউজকে বলেন, আমরা ধারণা করছি এবার ৫৫ থেকে ৬০ লাখ পশু জবাই হবে।    

বাজারে পশুর দাম কম ও অ্যানথ্রাক্সের আতংক না থাকায় পশু জবাই বাড়বে বলে তারা মনে করছেন।

এবার কোরবানির পশুর চামড়ার বাজার চড়া হওয়ার কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, এবছর আন্তর্জাতিক বাজারে চামড়ার দাম বেড়েছে প্রায় ২৫ শতাংশ। ফলে দেশের বাজারেও চামড়ার দাম বাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে সমপরিমাণে। আর অ্যানথ্রাক্স আতংকে কিছু দিন পশু জবাই বন্ধ থাকায় ট্যানারিগুলোতেও চামড়ার অভাব রয়েছে।

সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, এবছর চামড়ার মোট চাহিদা নির্ধারণ করা হয়েছে ২২ কোটি বর্গফুট। আর মোট চাহিদার প্রায় ৪৫ থেকে ৫০ শতাংশই পূরণ হবে কোরবানির চামড়া থেকে।

সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, চামড়া ব্যবসার সঙ্গে জড়িত সংগঠনগুলোর নির্ধারণ করে বেঁধে দেওয়া মূল্যের তুলনায় বেশি দামে চামড়া কিনছেন ক্রেতারা।

ঢাকায় প্রতি বর্গফুট চামড়া বিক্রি হয়েছে ৬৫ থেকে ৭০ টাকায়। আর বেধে দেওয়া মূল্য হল ৫৫ থেকে ৬০ টাকা। ঢাকার বাইরে ৪৫ থেকে ৫০ টাকা। ঈদের দিন খাসির চামড়া ১৮০ টাকা থেকে ২০০ (প্রতি পিস) বিক্রি হতে দেখা গেছে।

বেশি দামে চামড়া কেনাবেচা প্রসঙ্গে শাহীন আহমেদ বলেন, মৌসুমী ব্যবসায়ীরা দাম বাড়িয়ে দিচ্ছে। কিন্তু ট্যানারি মালিকরা তাদের নির্ধারিত মূল্যেই চামড়া কিনবে। এতে যদি কেউ আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হয় সেটা আমাদের দেখার বিষয় নয়।

তিনি জানান, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি) ২০০৯-২০১০ অর্থবছরে ২৩০ কোটি ডলারের চামড়াজাত পণ্য রপ্তানি লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছিল। আর এবার সেটা ২৯৫ কোটি ডলার।

উল্লেখ্য, বাংলাদেশের চামড়ার ক্রেতা হচ্ছে ইতালি, স্পেন, দ:কোরিয়া, হংকং, চায়না এবং জাপান।

বাংলাদেশ সময়: ১১৩৪ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৮, ২০১০

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।