ঢাকা, শুক্রবার, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৮ রমজান ১৪৪৫

অর্থনীতি-ব্যবসা

নেপাল ও ভুটানের সঙ্গে ট্রানজিট এক সপ্তাহের মধ্যেই চূড়ান্ত

আনোয়ারুল করিম, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০১২৩ ঘণ্টা, নভেম্বর ২১, ২০১০
নেপাল ও ভুটানের সঙ্গে ট্রানজিট এক সপ্তাহের মধ্যেই চূড়ান্ত

ঢাকা: নেপাল ও ভুটানের সঙ্গে স্থলপথে বাংলাদেশের ট্রানজিটের রূপরেখা চলতি সপ্তাহেই চূড়ান্ত হতে যাচ্ছে।

ভারতের আগ্রহের পরিপ্রেক্ষিতে ট্রানজিট নিয়ে আলোচনা এবং সিদ্ধান্ত গ্রহণের জন্য প্রধানমন্ত্রীর অর্থনৈতিক উপদেষ্টা ড. মসিউর রহমান রোববার নেপালের রাজধানী কাঠমান্ডু যাচ্ছেন।

সেখান থেকে তিনি যাবেন ভুটানের রাজধানী থিম্পুতে।

এ ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা ড. মসিউর রহমান বাংলানিউজকে বলেন, ‘রোববার ও সোমবার কাঠমান্ডুতে অবস্থান করে মঙ্গলবার তিনি থিম্পু যাবেন। ’

তিনি বলেন, ‘নেপাল সফরের প্রথম দু’দিন নেপালের প্রধানমন্ত্রী, অর্থমন্ত্রী, বাণিজ্য, যোগাযোগ ও বিদ্যুৎমন্ত্রীর সঙ্গে ট্রানজিট ইস্যুগুলো নিয়ে আলোচনা হবে। ’

ভুটানের রাজধানী থিম্পুতে মঙ্গল ও বুধবার ভুটান সরকারের শীর্ষ পর্যায়ের নেতাদের সঙ্গেও একই ইস্যু নিয়ে আলোচনা হবে বলে জানান ড. মসিউর।

প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের একটি সূত্র জানায়, বাংলাদেশের ভূখণ্ড ব্যবহারের আগেই বাংলাদেশকে নেপাল ও ভুটানের সঙ্গে ট্রানজিট সুবিধা দিতে চায় নয়াদিল্লি। ত্রিপুরার পালাটানায় বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের মালামাল পরিবহন শুরুর আগেই বাংলাদেশ যেন নেপাল ও ভুটানের সঙ্গে ট্রানজিট চালু করতে পারে, সে দিকেই লক্ষ্য ভারত সরকারের। এ লক্ষ্যে গত সপ্তাহে নয়াদিল্লি থেকে বাংলাদেশ সরকারকে বিষয়গুলো চটজলদি শেষ করার আহ্বান জানানো হয়। এরই পরিপ্রেক্ষিতে প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা নেপাল ও ভুটান সফরে যাচ্ছেন।    

ড. মসিউর বলেন, ‘নেপাল ও ভুটানের সঙ্গে বাংলাদেশের আমদানি-রপ্তাানি হয় ভারতের করিডোর ব্যবহার করে। নেপাল থেকে পণ্য আনা নেওয়ার ক্ষেত্রে রোহনপুর ও নেপালের সিঙ্গাবাদ পয়েন্ট এবং বুড়িমারি ও ভুটানের ফুনসিলিং বন্দর ব্যবহার করা হয়। ’

তিনি বলেন, ‘ভারতের সঙ্গে নেপাল ও ভুটানের ট্রানজিট সম্পর্ক থাকায় এ দুটি দেশের পণ্যবাহী ট্রাক ভারতের ভূখণ্ড ব্যবহার করতে পারলেও বাংলাদেশের ট্রাক সে সুযোগ পায় না। সীমান্তের স্থলবন্দরে বাংলাদেশের ট্রাক থেকে নেপালের ট্রাকে মাল তুলতে হয়। ’

তিনি বলেন, ‘ট্রানজিট হয়ে গেলে সীমান্তে আর ট্রাক পাল্টানোর প্রয়োজন হবে না। এক দেশ থেকে অন্য দেশে সরাসরি মাল পরিবহন করা যাবে। ’

প্রসঙ্গত, নেপাল ও ভুটানের সঙ্গে বাংলাদেশের ট্রানজিটের প্রধান সমস্যা ছিল ভারতের করিডোর ব্যবহার নিয়ে। গত জুলাইয়ে ঢাকায় অনুষ্ঠিত বাংলাদেশ ও নেপালের বাণিজ্য সচিব পর্যায়ের বৈঠকে মংলা বন্দর ব্যবহার ও নেপালকে ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়।

প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা জানান, ‘নেপাল থেকে প্রবেশের পর নেপালের ট্রাক বাংলাদেশের বাংলাবান্ধা-পঞ্চগড়-ঠাকুরগাঁও-সৈয়দপুর-রংপুর-বগুড়া-নাটোর-দাশুরিয়া-পাকশী-কুষ্টিয়া-ঝিনাইদহ-যশোর এবং খুলনা হয়ে মংলা বন্দরে যাবে এবং একই রুট দিয়ে ফিরে যাবে। ’

তিনি বলেন, ‘শুধু পণ্য পরিবহন নয়, কাঠমান্ডু ও ঢাকার মধ্যে রেল যোগাযোগ, সরাসরি বাস চলাচল নিয়েও আলোচনা হবে। রোহনপুর-সিঙ্গাবাদ হয়ে বাংলাদেশের সঙ্গে নেপালের রেল যোগাযোগের জন্য এরই মধ্যে নেপাল তাদের পক্ষে প্রস্তুতিও নিয়েছে। ’

ড. মসিউর রহমান বলেন, ‘আঞ্চলিক সহযোগিতার আওতায় ভুটানের সঙ্গেও মংলা বন্দর ব্যবহার এবং ট্রানজিটের বিষয়গুলো চূড়ান্ত করা হবে। ’

ট্রানজিট ও ট্রান্সশিপমেন্ট ছাড়াও দেশ দু’টির সঙ্গে বিদ্যুৎ আমদানি, পানি ব্যবস্থাপনা এবং জলবায়ু পরিবর্তন নিয়ে আলোচনা হবে বলে জানান প্রধানমন্ত্রীর অর্থনৈতিক উপদেষ্টা ড. মসিউর।

বাংলাদেশ সময়: ১২০০ ঘণ্টা, নভেম্বর ২১, ২০১০

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।