চট্টগ্রাম : সামর্থ্য থাকলেও শ্রমিক সংকটের কারণে চট্টগ্রামের রফতানিমুখী পোশাক কারখানার ২০ শতাংশ রফতানি অর্ডার হাতছাড়া হয়ে যাচ্ছে।
শ্রমিক সংকট কাটাতে পোশাক কারখানাগুলোর নানা উদ্যোগ থাকলেও সেগুলো কাজে লাগছে না।
শ্রমিক সংকটের জন্য নারী শ্রমিকদের নিরাপত্তার অভাববোধ ও আবাসন সংকটকে মূল কারণ বলে মনে করছেন পোশাক কারখানার মালিকরা।
প্রসঙ্গত দেশের সবচেয়ে বড় এই রপ্তানি খাতটিতে কর্মরত শ্রমিকদের ৮০ শতাংশই নারী।
পোশাক শিল্প মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএ সূত্র জানায়, গত বছরের তুলনায় চলতি বছরে রফতানির পরিমান ২০ শতাংশ বেড়েছে। বর্তমানে প্রচুর অর্ডার রয়েছে গার্মেন্টগুলোর হাতে। কিন্তু পর্যাপ্ত শ্রমিক না থাকায় এসব অর্ডার ফেরত দিতে হচ্ছে ।
চট্টগ্রামের চালু থাকা সাড়ে পাঁচ শ’ পোশাক কারাখানায় বর্তমানে প্রায় পাঁচ লাখ শ্রমিক কর্মরত রয়েছে। ঘাটতি রয়েছে আরও দেড় লাখ। মেশিন অপারেটর ও হেলপারসহ বিভিন্ন ক্যাটাগরির শ্রমিক না থাকায় ছোট-বড় সব গার্মেন্টে এক তৃতীয়াংশ মেশিন খালি পড়ে থাকে ।
এ প্রসঙ্গে বিজিএমইএ’র প্রথম সহ-সভাপতি মোহাম্মদ নাসিরুদ্দিন চৌধুরী বাংলানিউজকে বলেন, ‘বিদ্যু-গ্যাস সংকটের পাশাপাশি চট্টগ্রামে শ্রমিক সংকট প্রকট হয়ে উঠেছে। পর্যাপ্ত শ্রমিক না থাকায় এখন ২০ শতাংশ রফতানি আদেশ আমাদের ছেড়ে দিতে হচ্ছে। ’
চাহিদার তুলনায় ৩০ শতাংশ শ্রমিক কম আছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘নারী শ্রমিকদের আবাসনের জন্য সিডিএর সহায়তায় আমরা ডরমিটরি নির্মাণের কথা ভাবছি। কিন্তু শ্রমিক সংকট নিরসনে এলাকাভিত্তিক ডরমিটরি নির্মাণে সরকারকে এগিয়ে আসতে হবে। এছাড়া আর কোনো বিকল্প নেই। ’
আবাসনের ব্যবস্থা করতে পারলে নারী শ্রমিকদের নিরাপত্তার অভাব বোধ করবে না। এতে গ্রামের বেকার নারীরা কাজ করতে আগ্রহী হবে বলে এই বিজিএমইএ নেতা মত দেন।
বিজিএমইএ’র সাবেক পরিচালক ও এমএস গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আনম সাইফুদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘শ্রমিক সংকটের কারণে চট্টগ্রামে ছোট-বড় কোনো গার্মেন্টে সামর্থ্য অনুযায়ী বুকিং নিতে পারছে না। শ্রমিকের অভাবে আমার প্রতিষ্ঠানে ৪০ শতাংশ মেশিন অলস পড়ে আছে আছে। ’
তিনি আরও বলেন, ‘ঢাকার তুলনায় চট্টগ্রামের গার্মেন্টে শ্রমিক সংকট প্রকট। পর্যাপ্ত শ্রমিক থাকলেও আমাদের রপ্তানি আরও অনেক বাড়তো। গার্মেন্ট পল্লী নির্মাণে সরকারকে বার বার বলা সত্বেও এক্ষত্রে কোনো সাড়া পাওয়া যাচ্ছে না। ’
বাংলাদেশ সময় : ১৬১০ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৩, ২০১০