ঢাকা, শনিবার, ৭ বৈশাখ ১৪৩১, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫

অর্থনীতি-ব্যবসা

গার্মেন্ট মালিকদের উদার ও আন্তরিক হওয়ার আহ্বান শ্রম প্রতিমন্ত্রীর

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫০৭ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ৫, ২০১০
গার্মেন্ট মালিকদের উদার ও আন্তরিক হওয়ার আহ্বান শ্রম প্রতিমন্ত্রীর

ঢাকা: নতুন বেতন কাঠামো অনুযায়ী তৈরি পোশাক শ্রমিকদের পারিশ্রমিক দিতে মালিকদের উদার ও আন্তরিক হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী বেগম মুন্নুজান সুফিয়ান।

রোববার বিজিএমইএ ভবনে অনুষ্ঠিত এক সভায় তিনি বলেন, ‘মালিকদের নভেম্বর মাস থেকে নতুন বেতন কাঠামো বাস্তবায়নেরদাবি ছিল।

সরকার তা মেনে নিয়েছে। এখন নভেম্বর মাসের বেতন দেওয়ার সময় এসেছে। ’

আগামী দুই’একদিনের মধ্যে নতুন কাঠামো অনুযায়ী শ্রমিকদের বেতন পরিশোধ করার ক্ষেত্রে উদারতা ও আন্তরিকতা দেখানোর জন্য মালিকদের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।

রপ্তানিমুখী পোশাক শিল্পের শ্রম পরিস্থিতি নিয়ে মতবিনিময়ের জন্য আয়োজিত এ সভায় তিনি প্রধান অতিথির বক্তৃতা করছিলেন।

এ সময় প্রতিমন্ত্রী এনজিওর সহযোগিতা নিয়ে কারখানায় অনুমোদনহীন শ্রমিক সংগঠনগুলোর বিরুদ্ধে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও হুশিয়ারি উচ্চারণ করেন।

বিজিএমইএ ভবনে আয়োজিত সংগঠনের সভাপতি আব্দুস সালাম মুর্শেদীর সভাপতিত্বে এ সভায় অন্যদের মধ্যে শ্রম ও কর্মসংস্থান বিষয়ক সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি ইসরাফিল আলম এমপি, বিজিএমইএ’র সহ-সভাপতি সিদ্দিকুর রহমান, সাবেক সহ-সভাপতি শাহাদত হোসেন অরুন, শ্রমিক নেতা আমিরুল হক আমিন, তৌহিদুর রহমান ও নাজমা আকতার বক্তব্য রাখেন।

সভাপতির বক্তৃতায় বিজিএমইএ’র সভাপতি আবদুস সালাম মুর্শেদী সব তৈরি পোশাক কারখানার মালিককে বিজিএমইএ ও বিকেএমইএ’র সদস্য হওয়ার ক্ষেত্রে সরকারি ঘোষণা দাবি করেন।

প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘নতুন কাঠামোয় মজুরি অপ্রতুল হলেও এক ধাক্কায় মালিকদের উপর বেশি চাপ দেওয়া ঠিক হবে না। ধীরে ধীরে শ্রমিকদের দাবিকৃত মজুরির লক্ষে পৌঁছাতে হবে। ’

এসময় তিনি পোশাক কারখানায় শৃঙ্খলা রক্ষার্থে মালিক শ্রমিক উভয়কে দায়িত্বশীল ভূমিকা রাখতে আহবান জানান।

সভায় শ্রমিক নেতারা নতুন বেতন কাঠামো বাস্তবায়নে পোশাক শিল্প মালিকদের সহযোগিতার আশ্বাস দেন।

তারা বলেন, ‘যেসব স্থানে সমস্যা হতে পারে তা আগেই চিহ্নিত করতে হবে। একই সঙ্গে সজাগও থাকতে হবে। ’

ইসরাফিল আলম বলেন, ‘নতুন বেতন কাঠামো নিয়ে ঢালাও কোনও বক্তব্য না দিয়ে সমস্যা থাকলে আমাদের বলুন। আমরা সমস্যার আলোকে সমাধানের চেষ্ট করবো। ’

বিজিএমইএ সভাপতি বলেন, ‘নতুন কাঠামোর আলোকে শ্রমিকদের বেতন পরিশোধ শুরু হয়েছে। এটি গার্মেন্ট মালিকদের জন্য বড় একটি চ্যালেঞ্জ। ’

এজন্য তিনি সকলের সহযোগিতা কামনা করে বলেন, ‘বিজিএমইএর সদস্যরা নতুন বেতন কাঠামো বাস্তবায়ন করলেও সংগঠনের বাইরের কারখানাগুলোতে সমস্যা হচ্ছে। আর এর দায় এসে পড়ছে বিজিএমইএর ঘাড়ে। তিনি এ ব্যাপারে সরকারি ঘোষণা দাবি করেন।

উল্লেখ্য, নতুন বেতন কাঠামো বাস্তবায়নে সরকারিভাবে ৩১শে অক্টোবর গেজেট প্রকাশিত হয়েছে। তাতে দেখা যায়, নতুন বেতন কাঠামো ৭টি স্তরে বিভক্ত। এর মধ্যে ৭ম স্তরে রয়েছে হেলপার বা সহকারী। নতুন বেতন কাঠামোতে একজন হেলপারের বেতন ৩ হাজার টাকা। নতুন বেতন কাঠামোতে ৬ষ্ঠ স্তরে অপারেটরের বেতন নির্ধারণ করা হয়েছে ৩ হাজার ৩২২ টাকা। জুনিয়র অপারেটর রয়েছেন ৫ম স্তরে। তার বেতন ধার্য করা হয়েছে ৩ হাজার ৫৫৩ টাকা। নতুন বেতন কাঠামোতে ৪র্থ স্তরে রয়েছে জেনারেল অপারেটর। এতে তার বেতন নির্ধারণ করা হয়েছে ৩ হাজার ৮৬১ টাকা। অন্যদিকে ৩য় স্তরের একজন সিনিয়র অপারেটরের বেতন ৪  হাজার ২১৮ টাকা। এক জন মেকানিক্যালের বেতন ধার্য্য করা হয়েছে ৭ হাজার ২শ টাকা। এটি ২য় স্তরের বেতন কাঠামো। সর্বোচ্চ বা ১ম স্তরের বেতন কাঠামোতে রয়েছে কোয়ালিটি মাস্টার। তার বেতন নির্ধারণ করা হয়েছে ৯ হাজার ৩শ টাকা।

বাংলাদেশ সময়: ১৪৫৮ ঘণ্টা, ০৫ ডিসেম্বর, ২০১০

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।