ঢাকা, শুক্রবার, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫

অর্থনীতি-ব্যবসা

কাসিফায়েড ঋণ বাড়ছে রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন বাণিজ্যিক ব্যাংকে

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২২২৮ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ৫, ২০১০

ঢাকা: রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন ৪ বাণিজ্যিক ব্যাংকে শেণীকৃত বা কাসিফায়েড ঋণ বাড়ছে। সোনালী, জনতা, অগ্রণী ও রূপালী ব্যাংক মিলেয়ে শ্রেণীকৃত ঋণ রয়েছে প্রায় ১২ হাজার কোটি টাকা।



ঋণ বিতরণকালে উপযুক্ত মর্টগেজ না রাখা, দলীয় বিবেচনায় ঋণ বিতরণ করা, আমলাতান্ত্রিক জটিলতা ও ব্যাংকের কিছু কর্মকর্তার দায়িত্বহীনতার কারণেই খেলাপী ঋণ বাড়ছে বলে মনে করছেন এ খাতের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞরা।

এ প্রসঙ্গে রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন রূপালী ব্যাংকের চেয়ারম্যান ড. আহমদ আল কবির বাংলানিউজকে বলেন, ‘রূপালী ব্যাংকের পক্ষ থেকে খেলাপী ঋণের পরিমান কমানোর জন্য বিভিন্নভাবে চেষ্টা চালানো হচ্ছে। আমাদের মোট টাকা হিসেবে কাসিফায়েড ঋণের পরিমান বেড়েছে। তবে ঋণের পরিমান বেড়ে যাওয়ায় শ্রেণীকৃত ঋণের পরিমান শতাংশ হিসেবে কমেছে। বর্তমানে শ্রেণীকৃত ঋণের পরিমান প্রায় ১৮ শতাংশ। যেটি এর আগের বছর একই সময় ছিল ২২ শতাংশ। একই সঙ্গে বর্তমান অক্টোবর পর্যন্ত সিএল রয়েছে  ১ হাজার ১৪৭ কোটি টাকা। কিন্তু এর আগের বছরে তা ছিল ১ হাজার ১৩৯ কোটি টাকা। ’

তিনি আরো বলেন, ‘ব্যাংকগুলোর শ্রেণীকৃত ঋণের পরিমান না কমানো হলে বড় ধরনের ঝুঁকি বয়ে আনতে পারে। এক্ষেত্রে ঋণ বিতরণের সময় উপযুক্ত মটর্গেজ রাখা, গ্রাহকদের সঙ্গে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ করা ও আমলাতান্ত্রিক জটিলতা রোধ করতে হবে। অন্যথায় খেলাপী ঋণের বৃদ্ধি রোধ করা যাবে না। ’
 
সংশ্লিষ্ট ব্যাংক সূত্রে জানা গেছে, ব্যাংকিং খাতে মোট শ্রেণীকৃত ঋণের পরিমান দাঁড়িয়েছে (সেপ্টেম্বর পর্যন্ত) প্রায় ২৪ হাজার কোটি টাকা। এর আগের বছর ওই একই সময়ে ছিল প্রায় সাড়ে ২৩ হাজার  কোটি টাকা। এক বছরের ব্যবধানে প্রায় ১ হাজার কোটি টাকা খেলাপী ঋণ বেড়েছে। ব্যাংকিং খাতের সার্বিক খেলাপী ঋণ বৃদ্ধির পাশাপাশি রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন চার ব্যাংকেও এর ব্যতিক্রম ঘটেনি।

জানা গেছে, বর্তমানে রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন চার ব্যাংকের মোট শ্রেণীকৃত ঋণের পরিমান গত তিন মাসের হিসেব অনুযায়ী (জুলাই-সেপ্টেম্বর) ১২ হাজার ৭৮ কোটি টাকা। কিন্তু এর আগের তিন মাসে (এপ্রিল-জুন) তা ছিল ১২ হাজার ৬৫ কোটি টাকা। তিন মাসের ব্যবধানে রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন চার ব্যাংকে খেলাপী ঋণের পরিমান প্রায় ১৩ কোটি টাকা বৃদ্ধি পেয়েছে।
 
তবে রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন জনতা ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এসএম আমিনুর রহমান বাংলানিউজকে বলেন, ‘অন্যান্য ব্যাংকের খবর আমি বলবো না। তবে জনতা ব্যাংকে খেলাপী ঋণের পরিমান কমেছে। বর্তমানে খেলাপী ঋণের পরিমান রয়েছে প্রায় সাড়ে ৬ শতাংশ। যেটি এর আগে ছিল ৯ শতাংশ। ’

বাংলাদেশ ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট বিভাগের এক কর্মকর্তা বাংলানিউজকে বলেন, ‘খেলাপী ঋণের পরিমান এখনো কমছে না। তবে বিগত বছরগুলোর তুলনায় শতাংশ হারে কিছুটা কমেছে। কিন্তু মোট ঋণের দিক থেকে বিবেচনা করলে খেলাপী ঋণ বাড়ছেই। খেলাপী ঋণ যাতে কমে আসে এ লক্ষ্যে তফসিলি ব্যাংকগুলোর প্রধান নির্বাহীদের বিভিন্নভাবে নির্দেশনা প্রদানসহ গাইডলাইও দেওয়া হচ্ছে। ’

বাংলাদেশ সময়: ২২২০ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ৫, ২০১০

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।