ঢাকা, শুক্রবার, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৮ রমজান ১৪৪৫

অর্থনীতি-ব্যবসা

ডিএসইতে গড় লেনদেন কমেছে ৫৩ কোটি টাকা

গোলাম সামদানী, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬৫১ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৫, ২০১০
ডিএসইতে গড় লেনদেন কমেছে ৫৩ কোটি টাকা

ঢাকা: পুঁজিবাজারে দরপতন অব্যাহত থাকায় গত এক সপ্তাহে ঢাকা স্টক একচেঞ্জে (ডিএসই) গড় লেনদেন কমেছে ৫৩ কোটি টাকা।

গত সপ্তাহে (১৯ থেকে ১৩ ডিসেম্বর) ৫ কার্যদিবসে ডিএসই-তে মাত্র ৭ হাজার ৫৯৬ কোটি টাকার শেয়ার লেনদেন হয়।

এ সময় গড় লেনদেনের পরিমাণ ছিল মাত্র ১ হাজার ৫১৯ কোটি টাকা।

অন্যদিকে এর আগের সপ্তাহে (১২ থেকে ১৫ ডিসেম্বর) ৪ কার্যদিবসে ডিএসই-তে ৬ হাজার ২৮৯ কোটি টাকার শেয়ার লেনদেন হয়। ওই সময় গড় লেনদেনের পরিমাণ ছিল মাত্র ১ হাজার ৫৭২ কোটি টাকা।

ফলে মাত্র এক সপ্তাহের ব্যবধানে গড় লেনদেন কমে যায় ৫৩ কোটি টাকা।
 
গত সপ্তাহে পুঁজিবাজারে ব্যাংক, বীমা ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানসহ প্রায় সব খাতের শেয়ারের বড় ধরনের দরপতন হয়।

সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবস গত রোববার ডিএসই‘র সাধারণ মূল্যসূচক রেকর্ড পরিমাণ ৫৫১ পয়েন্ট কমে যায়। ওইদিন বাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা এসইসি মার্জিন লোন রেশিও বাড়ানোসহ এনএভি ফর্মুলা এবং বর্ধিত মেম্বার মার্জিন বাতিল করে।

এসইসির এ ঘোষণার পর দ্বিতীয় ও তৃতীয় কার্যদিবসে ঘুরে দাঁড়ায় পুঁজিবাজার। ওই দু’দিনে সাধারণ মূল্যসূচক যথাক্রমে ৩০৫ ও ২০৯ পয়েন্ট বেড়ে যায়।

তবে সপ্তাহের শেষ কার্যদিবস বৃহস্পতিবার সাধারণ মূল্যসূচক আবার ৬৩ পয়েন্ট কমে যায়।

ফলে পুরো সপ্তাহজুড়েই ছিল সূচকের বড় ধরনের ওঠানামা। তাই সপ্তাহের শেষে সাধারণ মূল্যসূচক এর আগের সপ্তাহের তুলনায় প্রায় ৯৮ পয়েন্ট কমে যায়।
   
অন্যদিকে গত সপ্তাহসহ টানা দু’সপ্তাহ শেয়ার বাজারে আর্থিক লেনদেন, বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ারের দাম, বাজার মূলধন ও সাধারণ সূচক কমে যাওয়ার পেছনে বিশ্লেষকরা বাংলাদেশ বাংকের নির্দেশনাকেই দায়ী করছেন।

একইসঙ্গে গত কয়েক মাস শেয়ারবাজার ঊর্ধ্বমুখী থাকায় বাজারে মূল্য সংশোধন হওয়াটাও জরুরি ছিল বলে অভিমত দেন তারা।

তবে গত দু’সপ্তাহের কোনও কোনও দিন সূচকের ওঠানামাকে অস্বাভাবিক বলেও মন্তব্য করেন বিশ্লেষকরা।

এদের মতে, ১৫ ডিসেম্বর থেকে তফসিলি ব্যাংকগুলো কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কাছে দৈনিক জমার হার (সিআরআর ও এসএলআর) আগের তুলনায় দশমিক ৫ শতাংশ বাড়িয়েছে। এতে করে ব্যাংকগুলোকে আগের তুলনায় ২ হাজার কোটি টাকা অতিরিক্ত জমা দিতে হচ্ছে।

আগামী ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে ব্যাংকগুলো পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ করা অতিরিক্ত অর্থ তুলে আনারও নির্দেশ রয়েছে। এ কারণেই বাজারে আর্থিক লেনদেন কমে গেছে।

এছাড়াও ডিসেম্বর মাস হওয়ার কারণে বেশির ভাগ মার্চেন্ট ব্যাংক ও ব্রোকারেজ হাউজ বিনিয়োগকারীদের বর্ধিত মার্জিন লোন সুবিধা দিচ্ছে না। ফলে অর্থের অভাবে শেয়ার কিনতে পারছে না।

অন্যদিকে বেশিরভাগ বিনিয়োগকারী লোকসানে থাকার কারণে হাতে থাকা শেয়ার বিক্রি করছে না। এ কারণেও লেনদেন কমে গেছে।
 
এ ব্যাপারে ডিএসইর সাবেক সিনিয়র সহ-সভাপতি আহমেদ রশিদ লালী বাংলানিউজকে বলেন, বাজারে মূল্য সংশোধন হওয়ার কারণে এই মুহূর্তে বাজারে নতুন বিনিয়োগকারী প্রবেশ করছে না। অন্যদিকে যারা আগে থেকে বাজারে রয়েছে তারাও সাবধানে লেনদেন করছেন। তাছাড়া বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশের কারণে ব্যাংকগুলো পুঁজিবাজার থেকে অতিরিক্ত অর্থ তুলে নিচ্ছে। এসব কারণেই বাজারে লেনদেন কমে গেছে।

তিনি আরও বলেন, বাজারে নগদ অর্থের পরিমাণ কমে যাওয়ায় বেশির ভাগ শেয়ারের দাম কমছে। এটি ডিসেম্বর মাস পর্যন্ত অব্যাহত থাকতে পারে। তবে বাজার নিয়ে বিনিয়োগকারীদের বড় ধরনের আতঙ্কিত হওয়ার কোনও কারণ নেই। বাজার এখন বেশ স্বাভাবিক রয়েছে।

বাংলাদেশ সময়: ১৬৪২ ঘণ্টা, ডিসেম্বরে ২৫,২০১০

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।