ঢাকা, বুধবার, ২২ মাঘ ১৪৩১, ০৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০৫ শাবান ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

দ্রব্যমূল্যে রমজানের প্রভাব পড়তে শুরু করেছে

মসিউর আহমেদ মাসুম | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৭২১ ঘণ্টা, জুলাই ১৭, ২০১০
দ্রব্যমূল্যে রমজানের প্রভাব পড়তে শুরু করেছে

ঢাকা: পবিত্র রমজান মাস শুরু হতে এখনো প্রায় এক মাস বাকি। অথচ এরই মধ্যে বাজারে নিত্যপণ্যের দামে রমজানের প্রভাব পড়তে শুরু করেছে।



গত কয়েক দিনে চিনি, আদা ও রসুনের দাম বেড়েছে। তবে বেসন, ডাল, ছোলা, পেঁয়াজের দাম স্থির রয়েছে। আর ভোজ্য তেলের দাম কিছুটা কমতির দিকে। মাঝে ভোজ্য তেলের দাম বাড়লেও চলতি মাসের প্রথম সপ্তাহর পর থেকে এর দাম কমে মোটামুটি সহনীয় পর্যায়ে রয়েছে।

কিছুটা তেজিভাব দেখা গেছে কাঁচা মরিচের দরে। আজ পাইকারি বাজারে ৮০ থেকে ৯০ টাকা দামের কাঁচা মরিচ খুচরা বাজারে ১০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।

রাজধানীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা গেছে, পাইকারি বাজারে বস্তাপ্রতি চিনির দাম বেড়েছে  ৪০ থেকে ৫০ টাকা। এক সপ্তাহ আগে যেখানে বস্তা প্রতি ২ হাজার ৭০ টাকা ছিল এখন তা বিক্রি হচ্ছে ২ হাজার ১শ’ ২০ টাকায়। কেজিপ্রতি খুচরা ইগলু ও ফ্রেশ চিনি ৪৮ ও দেশি ৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। বাজার ভেদেও দামে তারতম্য দেখা গেছে।   কাঁঠালবাগান খুচরা বাজারে চিনি ৪৫ টাকা কেজি বিক্রি হলেও কাছাকাছি হাতিরপুল বাজারে বিক্রি হচ্ছে ৪৮ টাকায়।

এক সপ্তাহের ব্যবধানে রসুনের দাম কেজিপ্রতি বেড়েছে প্রায় ৪০ টাকা। খুচরা বাজারে প্রতি কেজি রসুনের দাম ১৫০-১৬০ টাকার মধ্যে ওঠানামা করছে। হাতিরপুল ও কাঁঠালবাগান বাজারে ১৫০ টাকা এবং কারওয়ান বাজারে খুচরা রসুন কেজিপ্রতি বিক্রি হচ্ছে ১৫০ থেকে ১৬০ টাকার মধ্যে। গত পাঁচদিন আগেও রসুনের দাম ছিল ১২০ টাকা কেজি।

একই সময়ের মধ্যে আদার দাম বেড়েছে কেজি প্রতি ১০ টাকা। খুচরা বাজারে প্রতি কেজি আদা বিক্রি হচ্ছে ১০০ টাকায় । গত সপ্তাহের শুরুতে আদার দাম কেজি প্রতি ছিল ৯০ টাকা।

চলতি মাসের প্রথম সপ্তাহের পর থেকে ভোজ্য তেল ড্রাম প্রতি ২০ থেকে ৫০ টাকা হারে কমেছে বলে জানিয়েছে কারওয়ান বাজারের বিক্রেতারা। নিউ বরিশাল ব্রাদার্স এর বিক্রেতা মঈন জানালেন, বোতলজাত রূপচাঁদা সয়াবিন তেলের দাম ছয় মাস ধরে অপরিবর্তিত রয়েছে। এখন রূপচাঁদার ৫ কেজির বোতলের  দাম ৪শ ২৬ টাকা। ফ্রেশ ও তীরের ৫ কেজির  বোতলের দাম ৪শ ১৫ টাকা থেকে কমে ৪শ ছয় টাকা হয়েছে।

খোলা সয়াবিন খুচরা ৮০ টাকা কেজি ও পাম অয়েল ৭৪-৭৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আগের তুলনায় এর দাম কেজিপ্রতি ২ থেকে ৩ টাকা কমেছে বলে জানিয়েছেন বিক্রেতারা।

বেসন, ডাল, পেঁয়াজ ও ছোলার দাম স্থির রয়েছে। বেসন প্রতিকেজি ৬০ টাকা, ছোলা ৪৮ টাকা, পেঁয়াজ দেশি ২৮ টাকা ও ভারতীয় ২৪ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। মসুর ডাল দেশি প্রতি কেজি ১০৫-১১০ টাকা, ভারতীয় ৮০ টাকা দরে খুচরা বিক্রি হচ্ছে। পাইকারি বাজারে মুগ ডাল প্রকারভেদে ৯০ থেকে ১০২ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।

দ্রব্যমূল্যে আসন্ন রমজানের কোনো প্রভাব পড়ছে কিনা জানতে চাওয়া হলে কনজ্যুমার অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব) এর সভাপতি কাজী ফারুক জানান, বাজারে এরই মধ্যে রমজানের প্রভাব পড়েছে। রসুন, চিনি, ছোলা, ডাল, পেঁয়াজের দাম বাড়তির দিকে। ব্যবসায়ীরা রমজানের অত্যাবশ্যকীয় পণ্য ধীরে ধীরে বাজারে ছাড়ছেন।
 
তিনি আরো বলেন, ব্যবসায়ীদের ওপর সরকারের কোনো নিয়ন্ত্রণ না থাকায় রমজানের এক-দুই মাস আগে থেকেই দাম বাড়ানোর প্রস্তুতি চলে।

রমজানের বাজার নিয়ন্ত্রণে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ও এফবিসিসিআই উদ্যেগের বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে তিনি তাদের সফলতা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করে বলেন, ‘এফবিসিসিআই টাক্সফোর্স গঠন করেছে। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ও কয়েকদিনের মধ্যে বৈঠকে বসবে। যারা বাজার নিয়ন্ত্রণ করে দাম বাড়িয়ে দেয়, তারা কারো কথা শোনে না। প্রতিবারের মত এবারও সরকার ও এফবিসিসিআই সফল হবে না বলে আমার ধারণা। ’

এ ব্যাপারে যোগাযোগ করা হলে এফবিসিসিআই’র পক্ষ থেকে জানানো হয় এরই মধ্যে টাক্সফোর্সের সাথে এফবিসিসিআই’র বৈঠক হয়েছে। শিগগিরই এফবিসিসিআই রমজানের বাজার নিয়ন্ত্রণে মাঠে নামবে।

বাংলাদেশ সময় ১৮৪৪ ঘন্টা, জুলাই ১৭, ২০১০।

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।