ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১১ পৌষ ১৪৩১, ২৬ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

উন্নয়ন পরিকল্পনায় বৈষম্য-অধিকার লঙ্ঘন প্রাধান্য পাচ্ছে না

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬৪৪ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২১, ২০১৪
উন্নয়ন পরিকল্পনায় বৈষম্য-অধিকার লঙ্ঘন প্রাধান্য পাচ্ছে না ছবি: রহমত উল্যাহ/বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

ঢাকা: বাংলাদেশের সামগ্রিক উন্নয়নের প্রতিবন্ধক বৈষম্য ও অধিকার লঙ্ঘন। বিষয়টি সরকারের উদ্যোগ, নীতি ও উন্নয়ন পরিকল্পনায় যথাযথভাবে প্রতিফলিত হচ্ছে না।


 
বিশেষ করে প্রান্তিক মানুষ, কৃষকদের স্বার্থ রক্ষা, যুবকদের কর্মসংস্থান, আদিবাসীদের স্বার্থ রক্ষা, নারী অধিকার প্রতিষ্ঠায় সরকারের উদ্যোগ, নীতি ও সমন্বয় ইত্যাদি ক্ষেত্রে ঘাটতি আছে।
 
রোববার (২১ ডিসেম্বর) রাজধানীর ছায়ানটে বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা অ্যাকশনএইড, বাংলাদেশের ৩০ বছর উদযাপনের সমাপনী অনুষ্ঠানের ত্রিপাক্ষিক মঞ্চে বক্তারা এসব কথা তুলে ধরেন।
 
‘উন্নয়নে জনকেন্দ্রিক বিকল্পের সুযোগ ও ক্ষেত্র: দারিদ্র্য, অন্যায্যতা ও অধিকার লঙ্ঘনের বিরুদ্ধে ৩০ বছরের লড়াই’ শীর্ষক ত্রিমাক্ষিক মঞ্চ অনুষ্ঠিত হয়।
 
কৃষকের অধিকার ও স্বার্থ বিষয়ে কেন্দ্রীয় কৃষক মৈত্রীর সভাপতি মুনির হোসেন বলেন, কৃষকরা সারা বছর কাজ করলেও বিনিয়োগ তুলে আনতে পারেন না। কৃষির বিভিন্ন উপকরণ কৃষকদের কাছে নিয়ে গিয়ে মুনাফা লুফে নিচ্ছে বহুজাতিক কোম্পানিগুলো।
 
কৃষকরা নিজেকে কৃষক হিসেবে পরিচয় দিতে পারবেন না। বাংলাদেশে কৃষি উৎপাদন বেড়েছে। কিন্তু যারা উৎপাদন করছেন সেই কৃষকের অবস্থা ভালো নেই বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
 
সংসদ সদস্য ফজলে হোসেন বাদশা বলেন, সরকারের মধ্যে কৃষকদের স্বার্থ রক্ষায় সাংঘাতিক রকমের সমন্বয়ের অভাব রয়েছে। রাষ্ট্র কৃষকদের স্বার্থ রক্ষা করছে না। অধিকন্তু মাল্টিন্যাশনাল কম্পানিগুলোর স্বার্থ রক্ষা করছে।
 
তিনি বলেন, রাষ্ট্রকেই কৃষকের স্বার্থ রক্ষা করতে হবে। কৃষককে বাজারের ওপর ছেড়ে দেওয়ার ফলাফল হচ্ছে, খাদ্য ঘাটতি। কৃষকের স্বার্থ রক্ষায় রাষ্ট্রকে বিনিয়োগ করতে হবে।
 
এ মঞ্চে কৃষকের স্বার্থ রক্ষায় কৃষি আদালত প্রচলন ও কৃষি ন্যায়পাল করার সুপারিশ করেন মুনির হোসেন, ফজলে হোসেন বাদশা ও অ্যাকশনএইড, বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর ফারাহ কবির।
 
আচিক-মিচিক সোসাইটির নির্বাহী পরিচালক সুলেখা ম্রং বলেন, বঞ্চিত-শোষিত-নির্যাতিত বলতে আদিবাসী নারীকেই বোঝায়। ২০০৩-২০০৭ সালে  আদিবাসীদের উচ্ছেদে ফসল ধ্বংস করা হয়। আমরা নিজস্ব ভাষায় কথা বলতে ও শিখতে চাই। স্কুলে আমাদের ভাষায় পড়াশোনা করানো হয় না। শিশুরা স্কুলে যেতে চায় না।
 
বাংলাদেশ আদিবাসী ফোরামের সাধারণ সম্পাদক সঞ্জীব দ্রং বলেন, প্রায় ৪০টি মাতৃভাষায় বাংলাদেশের আদিবাসীরা কথা বলছেন। তবে সেগুলো হারিয়ে যাচ্ছে। আধুনিক সভ্যতা উন্নয়নের নামে আদিবাসীদের আবাসস্থল ধ্বংস করার অভিযোগ করেন তিনি।
 
ফারাহ্ কবির বলেন, আদিবাসী অঞ্চলের বনভূমি ধবংস করা হলে তার ভুক্তভোগী হবে সারা বাংলাদেশ। এখানে সরকারের নীতি ও পরিকল্পনার অভাব আছে। পরিবেশ ও আদিবাসী জনগোষ্ঠীকে বাঁচাতে আমাদের সকলকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে।
 
সংসদ সদস্য ফজলে হোসেন বাদশা বলেন, নারী আদিবাসীরা সবচেয়ে বেশি নিপীড়িত ও ধর্ষণের শিকার হচ্ছেন। আদিবাসীদের উন্নয়নের জন্য সুনির্দিষ্ট বাজেট বরাদ্দ করা প্রয়োজন। আদিবাসীদের ওপর যে বঞ্চনা ও নিপীড়ন, দেশের স্বার্থেই তা বন্ধ করতে হবে।
 
ফারাহ্ কবির বলেন, নারী নির্যাতন বন্ধের ব্যাপারে আমরা কোনো আপোস করবো না। বাংলাদেশ আমাদের। তাই এ দেশ গঠনের দায়িত্ব আমাদের সকলের।
 
যুবক ও কর্মসংস্থান সম্পর্কে যুব আন্দোলন কর্মী নজরুল ইসলাম বলেন, বাংলাদেশকে ডিজিটাল করতে হলে যুবক ও প্রতিবন্ধীদের বাদ দিয়ে সম্ভব না। তাদের কর্মক্ষম করে তোলা ছাড়া কোনোভাবেই বাংলাদেশের উন্নয়ন করা যাবে না।
 
ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজের সহ সভাপতি হুমায়ূন রশীদ বলেন, কর্মসংস্থানের ক্ষেত্রে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু এখন যুবক। তবে আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থা যুবকদের একজন সফল মানুষ হিসেবে তৈরি হতে সহযোগিতা করে না।
 
এজন্য রাষ্ট্রকে বিভিন্ন ধরনের সুযোগ-সুবিধা তৈরি করতে হবে। যদি শিক্ষায় বর্তমান ধারাবাহিকতা চলতে থাকে, তাহলে দেখা যাবে, আগামী ১০ বছরে অনেক কোম্পানির সিইও হবেন বিদেশিথ। তাই যুকদের বিভিন্ন প্রশিক্ষণ দিতে হবে। উদ্যোক্তা হতে উৎসাহ দিতে হবে।
 
** কৃষি আদালতের বিকল্প নেই
** শিক্ষার ‘প্যাটার্নে’ আটকা উদ্যোক্তা

বাংলাদেশ সময়: ১৬৩৮ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২১, ২০১৪

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।