ঢাকা: সরকারের পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় বিভাগের একটি বাড়ি একটি খামার প্রকল্পের ভাবমূর্তি নষ্টে সারাদেশে প্রতারণা চালিয়ে যাচ্ছে হিউম্যান ইমপ্রুভমেন্ট ফাউন্ডেশন(হিফ) নামের একটি সংগঠন। নানা প্রলোভনে তারা জনগণের টাকা করার আত্মসাৎ চেষ্টা করছে বলে জানিয়েছেন একটি বাড়ি একটি খামার প্রকল্পের পরিচালক ও সরকারের অতিরিক্ত সচিব ড. প্রশান্ত কুমার রায়।
বুধবার বাংলানিউজকে মোবাইল ফোনে তিনি বলেন, বেশ কিছুদিন ধরে বিভিন্ন উপজেলা নির্বাহী ও পল্লী উন্নয়ন কর্মকর্তারা এই সংগঠনটির সম্পর্কে নানা নেতিবাচক খবর দিচ্ছিলেন। প্রধানমন্ত্রীর স্বপ্নপ্রসুত একটি বাড়ি একটি খামার প্রকল্পের ভাবমূতি নষ্টে এটি একটি দেশি-বিদেশি কুচক্রীমহলের ষড়যন্ত্র। হিফ বা এরুপ অন্য কোনো প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে আমাদের প্রকল্পের কোনো সম্পর্ক নেই। জনগণকে প্রলোভনে বিভ্রান্ত না হওয়ার অনুরোধ জানাচ্ছি।
জনগণকে সচেতন করতে এরইমধ্যে সংগঠনটি সম্পকে সতর্কীকরণ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়েছে বলেও জানান তিনি।
তবে বাংলানিউজের অনুসন্ধানে জানা গেছে, হিউমান ইমপ্রুভমেন্ট ফাউন্ডেশনকে তাদের যুবকরাই গড়বে দেশ এমন প্রকল্পের উপকারভোগী নির্বাচনে সহায়তা করার জন্য দেশের সকল ইউএনও ও পল্লী উন্নয়ন কর্মকর্তাকে সহযোগিতা করার জন্য পত্র দেওয়া হয়।
গত ১১ ডিসেম্বর পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় বিভাগ থেকে(পরিকল্পনা ও উন্নয়ন শাখা-৪) এ পত্র দেওয়া হয়।
ওই চিঠিতে বলা হয়, যুবকরাই গড়বে বাংলাদেশ প্রকল্পের মাধ্যমে হিফ দেশের সকল উপজেলায় প্রতিটি ইউনিয়নে ২০ জন(৮জন পুরুষ, ১২জন নারী) করে উপকারভোগী নির্বাচন করে তাদের দারিদ্র্যতা ঘুচিয়ে জীবনমান উন্নয়নের নিমিত্তে একটি পাকা বাড়ি ও এক বা একাধিক খামার তৈরির কার্যক্রম গ্রহণ করেছে। নির্বাচিত উপকারভোগীদের জন্য পর্যায়ক্রমে ১০ লাখ টাকা বিনিয়োগ করে তাদের জীবনমান উন্নয়ন করার কথাও হিফ পত্রের বরাতে উল্লেখ করা হয় এবং ফাউন্ডেশনের মাঠকর্মী/প্রতিনিধিকে এ লক্ষ্যে সহযোগিতা করার জন্য নির্দেশক্রমে অনুরোধ জানানো হয়।
আর এ পত্রের ভিত্তিতেই সংগঠনটি সা্রাদেশে তাদের প্রতারণার জাল বিস্তার করার কাজ অনেকটা এগিয়ে নেয়। সর্বশেষ গত ২৩ ডিসেম্বর কেই শাখার আরেক পত্রে অনিবার্যকারণ দেখিয়ে ওই পত্র বাতিল করা হয়। পাশাপাশি পত্রের আলোকে উপকারভোগী নির্বাচনের কাজটিও বাতিল করার কথা জানানো হয়।
এ বিষয়ে দুটি চিঠিতে সই করা সহকারী প্রধান মো. আব্দুল কাদের বাংলানিউজকে মোবাইল ফোনে বলেন, ভাল উদ্যোগ বিবেচনায় নির্দেশক্রমে এ সংক্রান্ত চিঠি পাঠানো হয়েছিল। কিন্তু বিভিন্ন জায়গা থেকে উপকারভোগী নির্বাচনে আর্থিক লেনদেনের কথা মন্ত্রণালয়ের দৃষ্টিগোচর হলে তা বাতিল করা হয়েছে।
এ বিষয়ে ফাউন্ডেশনটির চেয়ারম্যানের সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও তা সম্ভব হয়নি। মন্ত্রণালয়ের চিঠিতে ফাউন্ডেশনের ঠিকানা(অনন্যা ভিলা, বাসা-১,রোড-২৩/এ, ফ্ল্যাট-এ/৪) গুলশান, ঢাকা উল্লেখ রয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ১৩২০ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৪, ২০১৪