ঢাকা, শুক্রবার, ১২ পৌষ ১৪৩১, ২৭ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

উন্নয়ন সহযোগীদের প্রতিশ্রুতি কমে অর্ধেকে

মফিজুল সাদিক, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৭৫১ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৫, ২০১৪
উন্নয়ন সহযোগীদের প্রতিশ্রুতি কমে অর্ধেকে

ঢাকা: ২০১৪-১৫ অর্থবছরের প্রথম পাঁচ মাসে (জুলাই-নভেম্বর) উন্নয়ন সহযোগীরা মাত্র ৮৯ কোটি ৬৬ লাখ ২০ হাজার মার্কিন ডলারের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে বাংলাদেশকে।

এর মধ্যে ঋণ ৬৯ কোটি ৭০ লাখ ১০ হাজার মার্কিন ডলার ও অনুদান ১৯ কোটি ৬৬ লাখ ২০ হাজার মার্কিন ডলার।



অথচ ২০১৩-১৪ অর্থবছরের একই সময়ে এর আকার ছিল ১৪৩ কোটি ৭৩ লাখ ৭০ হাজার মার্কিন ডলার। এর মধ্যে ঋণ ছিল ১২৬ কোটি ২৫ লাখ ১০ হাজার মার্কিন ডলার এবং অনুদান ১৭ কোটি ৪৮ লাখ ৭০ হাজার মার্কিন ডলার।

সেই হিসাবে মাত্র এক বছরের ব্যবধানে উন্নয়ন সহযোগীদের কাছ থেকে প্রতিশ্রুত অর্থের আকার কমে গেছে ৫৩ কোটি ৭ লাখ ৫০ হাজার মার্কিন ডলার। এটা গত বছরের তুলনায় কমে প্রায় অর্ধেকে এসে দাঁড়িয়েছে বলা যায়।

বুধবার (২৪ ডিসেম্বর) রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ (ইআরডি) সূত্র বাংলানিউজকে এই তথ্য নিশ্চিত করে।
 
এছাড়া, ২০১৪-১৫ অর্থবছরের অক্টোবর পর্যন্ত প্রতিশ্রুতি অর্থ ছিল ৬৫ কোটি ৯১ লাখ ৮০ হাজার মার্কিন ডলার। অথচ ২০১৩-১৪ অর্থবছরে অক্টোবর পর্যন্ত ছিল এর পরিমাণ ছিল ১৩২ কোটি ৬১ লাখ ১০ হাজার মার্কিন ডলার।
 
ইআরডি সূত্র জানায়, ২০১৪-১৫ অর্থবছরের পাঁচ মাসে (জুলাই-নভেম্বর) উন্নয়ন সহযোগীরা অর্থছাড় করেছে ৯০ কোটি ২০ লাখ ৮০ হাজার মার্কিন ডলার, যা গত অর্থবছরের একই সময়ে ছিল ৮৮ কোটি ৭৩ লাখ ৪০ হাজার মার্কিন ডলার। এর মধ্যে ঋণ ৭৪ কোটি ৮২ লাখ মার্কিন ডলার এবং অনুদান ১৫ কোটি ৩৮ লাখ ৯০ হাজার মার্কিন ডলার।
 
অর্থাৎ এক বছরের ব্যবধানে উন্নয়ন সহযোগীরা মাত্র ১ কোটি ৪৭ লাখ ৪০ হাজার মার্কিন ডলার বেশি অর্থছাড় করেছে। সেই হিসাবে বছর ব্যবধানে কাঙ্খিত মাত্রায় অর্থছাড় করেনি বলে জানায় ইআরডি।

২০১৪-১৫ অর্থবছরের জুলাই থেকে অক্টোবর পর্যন্ত উনন্নয়ন সহযোগীদের ঋণ পরিশোধ করা হয়েছে ৫৩ কোটি ২২ লাখ ৬০ হাজার মার্কিন ডলার। এর মধ্যে আসল  ৪৫ কোটি ৫০ লাখ ৩০ হাজার মার্কিন ডলার এবং সুদ ৭ কোটি ৭২ লাখ ৩০ হাজার মার্কিন ডলার।
 
২০১৩-১৪ অর্থবছরের একই সময়ে ছিল ৫২ কোটি ৮৯ লাখ ৭০ হাজার মার্কিন ডলার। এর মধ্যে মূলধন ছিল ৪৫ কোটি ৪৫ লাখ মার্কিন ডলার এবং সুদ ছিল ৭ কোটি ৮৪ লাখ ৭০ হাজার মার্কিন ডলার।

২০১৩-১৪ অর্থবছরে পরিশোধকৃত অর্থের মধ্যে আসল ছিল ৪৫ কোটি ৭৫ লাখ মার্কিন ডলার এবং সুদ ৭ কোটি ৮৪ লাখ ৭০ হাজার মার্কিন ডলার।
 
এক বছরের ব্যবধানে ৩২ লাখ ৯০ হাজার মার্কিন ডলার বেশি অর্থ পরিশোধ করা হয়েছে।

২০১৪-১৫ অর্থবছরে উন্নয়ন সহযোগীদের মধ্যে বৈদেশিক সহায়তার সর্বোচ্চ ছাড় করেছে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক- (এডিবি)। এবার ছাড়ের দিক দিয়ে নতুন রেকর্ড করেছে সংস্থাটি। অথচ কয়েক বছর ধরে অর্থছাড়ে শীর্ষ অবস্থান ধরে রেখেছিল বিশ্বব্যাংক।

এ সময় এডিবি একাই ২৮ কোটি ৭৮ লাখ ৭০ হাজার মার্কিন  ডলার ছাড় করেছে। এরপরই রয়েছে বিশ্বব্যাংক। এ সংস্থাটি ছাড় করেছে ১৪ কোটি ৭২ লাখ ২৫ হাজার মার্কিন ডলার।
 
এছাড়া, জাপান আন্তর্জাতিক সহযোগিতা সংস্থা (জাইকা) ছাড় করেছে ৪ কোটি ৩৫ লাখ ডলার। অন্যরা (চীন, ভারত, জাতিসংঘ) ছাড় করেছে ৪২ কোটি ৩৪ লাখ ৪০ হাজার মার্কিন ডলার।
 
বৈদেশিক প্রতিশ্রুতি কমে যাওয়া প্রসঙ্গে বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (বিআইডিএস) সিনিয়র গবেষক ড. মঞ্জুর হোসেন বাংলানিউজকে বলেন,  বৈদেশিক প্রতিশ্রুতি কমে যাওয়ার অন্যতম কারণ নেগোশিয়েটিভ স্কিলের অভাব। বৈদেশিক অনেক অর্থ পাইপ লাইনে আছে কিন্তু আমরা ব্যবহার করতে পারছি না। উন্নয়ন সহযোগীদের সঠিকভাবে আমরা বোঝাতে পারছি না। যে কারণে প্রতিশ্রুতির পরিমাণ কমে গেছে। ’
 
তিনি আরো বলেন , বৈদেশিক ছাড় ও প্রতিশ্রুতি বাড়াতে হলে বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি (এডিপি) বাস্তবায়ন বাড়াতে হবে। প্রকল্পে বাস্তবায়নে যে শ্লথ গতি আছে তা নিরসন করতে হবে।   এজন্য বিদেশি কনসালটেন্ট নিয়োগ করতে হবে।

 বাংলাদেশ সময়: ০৭৫২ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৫, ২০১৪

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।