ঢাকা: বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোটের ডাকা সোমবারের(২৯ ডিসেম্বর) হরতালে ব্যাংক, বিমা, পুঁজিবাজারসহ সরকারি ও বেসরকারি অফিসগুলোর কার্যক্রমে কোন প্রভাব পড়েনি। অনেকটাই স্বাভাবিক অফিস পাড়ার কার্যক্রম।
মতিঝিলের শাপলা চত্বর, দিলকুশা ব্যাংকপাড়ায় হরতালের তেমন প্রভাব দেখা যাচ্ছে না। এসব এলাকায় লেগুনা, রিকশা ও সিএনজিচালিত অটোরিকশা স্বাভাবিকভাবে চলাচল করছে। তবে অন্যদিনের তুলনায় গণপরিবহণের সংখ্যা কিছুটা কম রয়েছে।
নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই অফিসে উপস্থিত হয়েছেন ব্যাংক, বিমা, শেয়ারবাজারসহ অন্যান্য অফিসের কর্মকর্তারা। অফিসগুলোতে চলছে অন্যদিনের মতো স্বাভাবিক লেনদেন। তবে লেনদেনের পরিমাণ অন্যদিনের তুলনায় একটু কম বলে জানিয়েছেন ব্যাংক ও বিমার কর্মকর্তারা।
বাংলাদেশ ব্যাংকের বিভিন্ন বিভাগ ঘুরে দেখা গেছে, কর্মকর্তারা নিজেদের আসনে বসে কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছেন। বিভিন্ন বাণিজ্যিক ব্যাংকেও একই চিত্র দেখা গেছে। বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোতে গ্রাহকদের বেশ আনাগোনাও দেখা গেছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর সচিবালয়ের মহাব্যবস্থাপক এ এফ এম আসাদুজ্জামান বাংলানিউজকে বলেন, হরতালে বাংলাদেশ ব্যাংকসহ বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোতেও কোন প্রভাব পড়েনি। নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তারা অফিসে উপস্থিত হয়েছেন। বাংলাদেশ ব্যাংকের সকল শাখায় স্বাভাবিক কার্যক্রম চলছে।
তিনি বলেন, কোন হরতালেই ব্যাংকের কার্যক্রমে প্রভাব পড়ে না। সোমবারও তার ব্যতিক্রম হয়নি। এমনকি বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর প্রধান কার্যালয়সহ সকল শাখা কার্যালয় খোলা রয়েছে। বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর শাখাতে স্বাভাবিক কার্যক্রম চলছে।
জনতা ব্যাংকের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেন, নির্ধরিত সময়ের মধ্যে ব্যাংকের সকল কার্যক্রম শুরু হয়েছে এবং শাখায় সকল কার্যক্রম স্বাভাবিক ভাবে চলছে। গ্রাহকরা ব্যাংকে আসছেন এবং তাদের প্রয়োজনীয় সেবা নিয়ে যাচ্ছে। স্বাভাবিক ব্যাংকিং ক্রার্যক্রমে কোন প্রভাব পড়ছে না। তবে অন্যদিনের তুলনায় গ্রাহক উপস্থিতি কিছুটা কম।
ইসলামী ব্যাংকের মতিঝিল শাখায় আসা শহিদুল নামের এক গ্রাহক বলেন, রাজনৈতিক দলগুলো হরতাল দেয় তাদের প্রয়োজনে। তারা তাদের স্বার্থ হাসিলে ব্যস্ত। আমাদের মতো সাধারণ মানুষের কথা ভাবার সময় রাজনৈতিক দলগুলোর নেই।
তিনি বলেন, আমার মতো সাধারণ মানুষের পরিবার আছে। পরিবারের সদস্যদের রুটি রুজির ব্যবস্থা করতে হবে। তাই হরতাল হোক আর যাই হোক আমাদের ঘরে বসে থাকলে চলবে না। এ জনই ব্যবসায়ীক প্রয়োজনেই ব্যাংক থেকে টাকা তুলতে এসেছি।
এদিকে ব্যাংকের মতোই স্বাভাবিক কার্যক্রম চলছে বিমা অফিসগুলোতে। সময় মতো লেনদেন শুরু হয়ে স্বাভাবিক ভাবে চলছে শেয়ার বাজারের লেনদেন। বিমা কোম্পানির অফিস ঘুরেও স্বাভাবিক কার্যক্রম চলার দৃশ্য দেখা গেছে।
মেঘনা ইন্স্যুরেন্সের উপদেষ্টা নুরুল হক বলেন, ব্যাংক খেলো থাকলেই বিমার কার্যক্রম চলে। হরতালের কারণে কখনোই বিমা কোম্পানির কার্যক্রম বন্ধ হয় না। তবে স্বাভাবিকের তুলনায় লেনদেন কিছুটা কম হয়।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) জনসংযোগ বিভাগের উপমহাব্যবস্থাপক মো. শফিকুর রহমান বলেন, ডিএসইতে স্বাভাবিক লেনদেন চলছে। অন্যদিনের মতো নির্ধারিত সময়েই লেনদেন শুরু হয়েছে। হরতালের কারণে লেনদেনে কোন প্রভাব পড়ছে না।
বাংলাদেশ ইন্স্যুরেন্স অ্যাসোসিয়েশনের জনসংযোগ কর্মকর্তা হাবীবুর রহমান বলেন, হরতালে বিমার কার্যক্রমের প্রভাব পড়ছে না। নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই বিমা কোম্পানিগুলো অফিস খুলেছে এবং স্বাভাবিক কার্যক্রম চলছে। বিআইএ’র কর্মকর্তারাও নির্ধারিত সময়ের মধ্যে অফিসে এসে উপস্থিত হয়েছেন।
বাংলাদেশ সময়: ১২৩৮ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৯, ২০১৪