ঢাকা, সোমবার, ৮ পৌষ ১৪৩১, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

মিথ্যা ঘোষণায় পণ্য আমদানিতে ব্যবস্থা

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১৪০ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৫, ২০১৫
মিথ্যা ঘোষণায় পণ্য আমদানিতে ব্যবস্থা

ঢাকা: মিথ্যা ঘোষণার মাধ্যমে পণ্য আমদানি করা হলে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।

একই সঙ্গে ট্রেড ফ্যাসিলেটেশন (বাণিজ্য সুবিধা) বিষয়ে আগামী একবছর পর কোনো অভিযোগ থাকবে না বলেও জানানো হয়েছে।



রোববার (২৫ জানুয়ারি) জাতীয় রাজস্ব বোর্ড সম্মেলন কক্ষে আন্তর্জাতিক কাস্টমস ডে উপলক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড চেয়ারম্যানের পক্ষে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড সদস্য মো. ফরিদ উদ্দিন এ কথা জানান।
 
ফরিদ উদ্দিন আহমেদ বলেন, পণ্য আমদানি ও রফতানির ক্ষেত্রে কম সময় ও কম খরচে খালাস করা যায় সেটাই হলো ট্রেড ফ্যাসিলেটেশন।

পোর্ট (বন্দর) দিয়ে পণ্য আমদানির ক্ষেত্রে মিসডিক্লারেশন (মিথ্যা ঘোষণা), আন্ডার ইনভয়েসিং ও সময় বেশি লাগে। মিথ্যা ঘোষণার মাধ্যমে মানি লন্ডারিং ও রাজস্ব ক্ষতি হচ্ছে বলে স্বীকার করেন ফরিদ উদ্দিন।
 
তিনি বলেন, ট্রেড ফ্যাসিলেটেশনের অংশ হিসেবে সময়ক্ষেপণ দূর করা এবং মিথ্যা ঘোষণায় পণ্য আমদানি বন্ধে পদক্ষেপ নিয়েছি আমরা। মিথ্যা ঘোষণায় আমদানি করে ছাড় পাওয়ার সুযোগ এখন আর থাকবে না। তবে কোনো অভিযোগ পেলে আমরা এনফোর্সমেন্টে যাবো।
 
অটোমেশনের মাধ্যমে এসব দূর করা হচ্ছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘অ্যাসাইকুডা ওয়ার্ল্ড’ সফটওয়্যার ব্যবহার করে কিছুটা রোধ সম্ভব হচ্ছে।
 
চট্টগ্রাম পোর্ট (বন্দর) নিয়ে টিআইবি’র রিপোর্ট সম্পর্কে ফরিদ উদ্দিন বলেন, রিপোর্টে যেসব অভিযোগ করা হয়েছে অ্যাসাইকুডা ওয়ার্ল্ড’র মাধ্যমে তা দূর করার চেষ্টা করা হচ্ছে।
 
অ্যাসেসমেন্ট ও এক্সজামিনেশন সম্পর্কে রিপোর্টে যে তথ্য দেওয়া হয়েছে, ইন্সপেকশন অ্যাক্ট চালু ও মনিটরিং করা হচ্ছে বলে জানান তিনি।
 
ফরিদ উদ্দিন বলেন, টিআইবি’র সঙ্গে সরকারি প্রতিষ্ঠান হিসেবে একমাত্র আমরাই (কাস্টমস) চ্যালেঞ্জ করেছি এবং পার্টনারশিপ হিসেবে কাজ করেছি।
 
ই-এলসি (ইলেট্রনিক লেটার অব ক্রেডিট) সম্পর্কে তিনি বলেন, গতকাল (২৪ জানুয়ারি, শনিবার) থেকে ই-এলসি চালু করা হয়েছে। পোর্ট বা কাস্টমসের কাছে যে ডিক্লারেশন আমদানিকারকরা দেন সেটা বাংলাদেশ ব্যাংকের সঙ্গে মিল আছে কিনা সেজন্য চালু করা হয়েছে।
 
এতে একটি গ্যাপ সব সময় থাকে এবং এর মধ্যে সব সময় একটি মিসডিক্লারেশনের সুযোগ তৈরি হয়। এটা রোধ করতে অ্যাসাইকুডা ওয়ার্ল্ডের মাধ্যমে ২৪ জানুয়ারি থেকে ই-এলসি চালু করা হয়েছে।
 
ব্যাংক ও কাস্টমসের কাছে দেওয়া তথ্যে গরমিল থাকায় রোববার থেকে তা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। মঙ্গলবার থেকে আবার তা চালু করা হবে।

যারা মিস ডিক্লারেশন দিচ্ছে, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানান তিনি।
 
কাস্টমসের সংস্কার সম্পর্কে ফরিদ উদ্দিন বলেন, আমাদের বেশিরভাগ পণ্য চীন, মালয়েশিয়া, সিঙ্গাপুরসহ বেশ কয়েকটি দেশ থেকে আমদানি হয়।
 
রিস্ক ম্যানেজমেন্ট সম্পর্কে তিনি বলেন, সাতজন অফিসারকে প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে। তারা কোন কোন ক্ষেত্রে মিসডিক্লারেশন, আন্ডার ইনভয়েসিং, মানি লন্ডারিং হচ্ছে তার ক্ষেত্রগুলোকে আন্তর্জাতিক রীতিনীতি অনুযায়ী চিহ্নিত করবেন। আগামী এক বছর পর এ রিস্ক ম্যানেজমেন্ট চালু হলে মিস ডিক্লারেশন ও পণ্য দ্রুত খালাস সম্ভব হবে।
 
দ্রুত আমদানি রফতানির ক্ষেত্রে ন্যাশনাল সিঙ্গেল উইন্ডো নিয়ে কাস্টমস কাজ করেছে। এ প্রযুক্তি বাংলাদেশে চালু করতে ওয়ার্ল্ড ব্যাংক সাপোর্ট দিতে রাজি আছে।
 
ট্রেড ফ্যাসিলেটেশন নিয়ে সব কাজ করা হয়েছে। এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশ কাস্টমস এতদিন অনেক পিছিয়ে ছিল বলে স্বীকার করেন ফরিদ উদ্দিন।
 
আগামী একবছর পর বাংলাদেশ কাস্টমস এ অঞ্চলের সব দেশের সমপর্যায় বা তাদের ছাড়িয়ে যাবে বলে আশা করেন তিনি।
 
কাস্টমসকে গতিশীল করতে আধুনিক, দক্ষ ও প্রযুক্তিনির্ভর জনবল দেওয়া হচ্ছে বলে জানান ফরিদ উদ্দিন। জাতীয় রাজস্ব বোর্ড চেয়ারম্যান নজিবুর রহমান ফরিদ উদ্দিনের সঙ্গে একাত্মতা পোষণ করেন।
 
সংবাদ সম্মেলনে কাস্টমস গোয়েন্দা অধিদফতরের মহাপরিচালক ড. মইনুল হক, কাস্টমস কমিশনার এ এইচ এম শাহাবুদ্দীন নাগরী উপস্থিত ছিলেন।
 
বাংলাদেশ সময়: ২১৪০ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৫, ২০১৫

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।